শনিবার ৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২০ পৌষ ১৪৩১
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
Published : Wednesday, 1 January, 2025 at 6:00 AM, Count : 545

বর্তমান প্রতিবেদক: ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ-২০২৫) উদ্বোধন করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার সকাল ১১টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর উপকণ্ঠ পূর্বাচল নতুন শহরের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ মেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী এই মেলা হচ্ছে এ নিয়ে চতুর্থবার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ মেলার যৌথ আয়োজক। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশি ৭ দেশের ১১ প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নেবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্বে) মো. আব্দুর রহিম খান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার মেলায় যাত্রী পরিবহনে বিশেষ ছাড় দিতে ইপিবি ও অ্যাপসভিত্তিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান উবারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় ৫০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়ে উবারের গাড়িতে মেলায় যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা। একই সঙ্গে যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির নির্ধারিত বাসসেবাও থাকবে। এছাড়া এবারই প্রথম মেলায় প্রবেশে ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এবারের বাণিজ্য মেলায় এই প্রথম অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল বা প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানার্থে মেলায় তৈরি করা হয়েছে জুলাই চত্বর ও ছত্রিশ চত্বর। তরুণসমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করতে তৈরি করা হয়েছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন।

মেলায় এ বছরই প্রথম সম্ভাবনাময় খাত বা পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদেশি উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে থাকছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেকট্রনিকস ও ফার্নিচার জোন। বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধায় তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্নার, জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য সিটিং কর্নার। শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় থাকছে শিশুপার্ক। মা ও শিশুদের জন্য মেলায় থাকবে মা ও শিশুকেন্দ্র। দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক এবং শোভন চেয়ার ও বেঞ্চ রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্তোরাঁ থাকছে এবারের মেলায়। দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে শত ভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এসব বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশীয় বস্ত্র, যন্ত্রপাতি, কার্পেট, প্রসাধনসামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্য, আসবাব, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি সামগ্রী, চামড়া, আর্টিফিশিয়াল চামড়া, জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, খেলার সামগ্রী, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামিন, পলিমার, হারবাল, টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, ফাস্ট ফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, গৃহসজ্জার উপকরণ ইত্যাদি মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রয় হবে।

মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং দর্শনার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‍্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। 

মেলা প্রাঙ্গণের বাইরেও নিয়মিত টহল দল থাকছে। নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বিবেচনায় মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশপথ, পার্কিং এরিয়া ও সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।

এবারের মেলায় পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। এক্সিবিশন হলে পুরুষ ও নারীদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক আলাদা টয়লেটের পাশাপাশি এক্সিবিশন হলের বাইরেও পর্যাপ্তসংখ্যক টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলায় খাদ্যদ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ গঠিত টিম মেলা চলাকালীন প্রতিদিন ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।

মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক চিকিৎসক উপস্থিত থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা ও চিকিৎসা পরামর্শ দেবেন। মেলায় পাঁচ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধাসংবলিত দ্বিতল কার পার্কিং ভবন রয়েছে। এ ছাড়া মেলা কেন্দ্রের বাইরে আছে ছয় একর জমিতে পার্কিংয়ের আলাদা ব্যবস্থা।

মেলার সার্বিক কার্যক্রম তদারকির জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও দর্শনার্থীদের সব ধরনের তথ্য দেওয়ার জন্য রয়েছে তথ্যকেন্দ্র। ব্যাংকিং সেবার জন্য মেলায় অনেক ব্যাংক বুথ স্থাপন করেছে। মাসব্যাপী এ মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft