বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৫টি পরিবারকে ১ মাস গৃহবন্দি
Published : Sunday, 6 October, 2024 at 6:00 AM, Count : 525

নওগাঁ সংবাদদাতা: নওগাঁ সদর উপজেলার হাসাইগাড়ী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে প্রায় একমাস ধরে ৫টি পরিবারকে গৃহবন্দি করে রেখেছে স্থানীয় হাসান মল্লিকসহ প্রভাবশালী এলাকার মাতব্বরেরা। অভিযোগ রয়েছে কৃষ্ণপুর গ্রামের ক্ষমতালোভী এলাকার মাতব্বরের নির্দেশে কতিপয় বেশকিছু দুষ্কৃতিকারী জনসাধারণের পায়ে চলা রাস্তায় বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে ৫ পরিবারকে গৃহবন্দী করে রেখেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত মাসে কৃষ্ণপুর ব্রিজের রাস্তার ধারে লাউ-কুমড়ার গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে ছাগলকে মারধর করে। এতে ছাগল সামান্য পায়ে আঘাত পায়। পরে গ্রামের মাতব্বরের সহযোগিতায় আহত ছাগল জবাহ করে দুলাল-হাসানসহ গ্রামের একাংশ লোকজন খেয়ে ফেলেন। স্থানীয়রা জানান, ফলে ঘটনার একপর্যায়ে ছাগলের মালিক হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় মাতববরের পরামর্শে বেলাল মল্লিকসহ তার পাশবর্তী আত্নীয়-স্বজনসহ ৫টি পরিবারের বাড়ী থেকে বের হওয়ার রাস্তার তিনদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে গৃহবন্দী করে দেয়। গত একমাস যাবৎ পরিবারগুলো গৃহবন্দি অবস্থায় আটক আছে। ফলে এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন, জনসাধারণের রাস্তায় বেড়া দিয়ে বে-আইনী কাজ করেছে; যা দুঃখ জনক ঘটনা।

জানা যায়, উক্ত ঘটনার বেশ কিছুদিন পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর হঠাৎ বেলাল মল্লিক রাত্রি প্রায় সাড়ে ১০টা সময় বিলের মধ্য বানার মাছ নিতে গেলে, সেটি টের পেয়ে স্থানীয় মাতব্বরদের পরিকল্পনায় হাসান মল্লিকসহ জব্বার, দুলাল এবং তাদের পরিবারের মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে বেলাল মল্লিককে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিত আক্রমণ করে। কৃষ্ণপুর ব্রিজের রাস্তার পাশে সাত/আটজন মিলে লাঠিসোটা, ইট, পাথর দিয়ে মেরে গুরুত্বরো আঘাত ও মারধোর করে আহত করে। বেলাল মল্লিককের অন্ডকোষ চেপে ধরে পানির মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে।

ঘটনার একপর্যায়ে বেলাল মল্লিক প্রাণে বাঁচার চেষ্টায়, শরীরের সকল শক্তি দিয়ে পানি থেকে উঠে ডাক-চিৎকার দিতে দৌড়াতে থাকে। এক সময় গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করে রাতে মোয়াজ্জেমের বাড়ির সামনে এসে পড়ে যায়। মোয়াজ্জেম ওই রাাতে আহত বেলাল মল্লিকে সঙ্গে নিয়ে তার পরিবারসহ নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ বিষয়ে স্থানীয় মাতব্বর আনিস-আক্কাসের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেছে। যা স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করা সম্ভব ছিল। কিন্তু এলাকার কয়েকজন ষড়যন্ত্রকারী একটি মহল মিমাংশা করতে দিচ্ছে না, তারা চাঁদা দাবি করছে। তবে এমন ঘটনার বিষয়ে তাদের কোন প্রকার ইঙ্গিত ছিল না বলে জানায়।

হাসান, জব্বারের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, স্থানীয় মাতব্বরের হুকুম ছাড়া বেড়া কখনোই তারা সরাবে না আর যতই মামলা করুক সেটি দেখে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। ছোট ঘটনাটি এলাকার কয়েকজন মিলে মিমাংসা করতে দিচ্ছে না। শুনেছি, মোয়াজ্জেম ও তার বউ মরিয়ম মামলা করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করবে। এ জন্য বেলালকে চাঁপের মধ্যে রেখেছে এবং টাকা খরচ করিয়েছে। জব্বার অভিযোগ করে আরও বলেন, ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোয়াজ্জেম আমার জায়গা দখল করে মাটি ফেলেছে। মোয়াজ্জেমের কাছে আমি জমি পাবো। সে এসব ষড়যন্ত্র  করছে। মোয়াজ্জেমের বউ মরিয়ম সর্বদায় অকারণে বকা-ঝকা করে প্রাণে মেরে ফেলা ও মামলার হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে আহত বেলাল মল্লিক ও তার স্ত্রী জানায়, নওগাঁ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও এখন পর্যন্ত যাতায়াতের রাস্তার বেড়া সরাই নাই। বর্তমানে তারা চাঁদার দাবীও করছে, চাঁদার টাকা না দিলে, এইবার আর বেঁচে থাকার সুযোগও দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে তাই তারা বাড়ীও যেতে পারছেনা। তাই তারা আইনগত ভাবে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রশাসনের কাছে। জনসাধারণের রাস্তায় পুলিশ যেন দ্রুত বে-আইনী বেড়া সড়িয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে সে দাবী জানায়।

এ বিষয়ে নওগাঁর ভীমপুর পুলিশ ফাঁড়ির তদন্ত কেন্দ্রের সাবইন্সপেক্টর জামাল উদ্দীন জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। জনসাধারণের রাস্তার বেড়া সরিয়ে দেওয়ার কথা বলে এসেছি। পরবর্তীতে অভিযোগের সূত্র ধরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft