শিরোনাম: |
পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় রণক্ষেত্র রংপুর, নিহত ২
|
রংপুর ব্যুরো: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে রংপুরের রাজপথে মানুষের ঢল নামে। সর্বাত্মক অসহযোগের প্রথম দিনে আজ রোববার সিটি বাজারে সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্দার আব্দুল জলিল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের রিপোর্টার ফকরুল শাহীন, নিউজ টুয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করেছে আন্দোলনকারীরা। বেলা ১২টার দিকে নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড় এলাকায় অবস্থান নেওয়া সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে টাউন হল অভিমুখে রওনা দেন। এসময় সিটি বাজার ও সুপার মার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে, সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি মোড় ও পায়রা চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা দখলে নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। সেই সঙ্গে মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে রংপুর টাউন হল সংলগ্ন সড়কে জামায়েত হতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সমবেত হন। তাদের এই জমায়েতে সরকারবিরোধী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে। এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করে সেখানে বিক্ষোভ করেন। অসহযোগ আন্দোলনের কারণে নগরীর দোকানপাট, শপিং মলসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। সীমিত আকারে রিকশা, অটোরিকশা চলাচল করছে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সহিংসতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। |