শিরোনাম: |
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়ে প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক : সেনা প্রধান
|
বর্তমান প্রতিবেদক: জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলেতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এরকম একপেশে, উদ্দেশ্যমূলক একটা প্রতিবেদনের জন্য তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সেনাসদর। আশা করছি, আমরা আমাদের দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব এবং সর্বোপরি জাতিসংঘ পরিমণ্ডলে আমাদের দায়িত্ব যেভাবে পালন করে এসেছি, সেভাবে করে এসব ষড়যন্ত্রের সঠিক জবাব দিতে পারব ইনশাআল্লাহ। সোমবার (২৭ মে) রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়া-প্যাসিফিক পিস অপারেশন ট্রেনিং সেন্টারের (এএপিটিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী পৃথিবীর ৪৩টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছে। এখনও আমাদের ছয় হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী বিভিন্ন মিশনে দায়িত্ব পালন করছে। কোনো একটা মিশনের উদারহণ দিয়ে কেউ বলতে পারবে যে ওখানে আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছি বা আমাদের শৃঙ্খলা খারাপ হয়েছে?’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি নিজে সেন্ট্রাল আফ্রিকায় একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং মিশনের শুরু থেকে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার ছিলাম। এটা এমন একটা মিশন যে মিশনের এসআরএসজি বা স্পেশাল রিপরেজেন্টেটিভ অব দ্য সেক্রেটারি জেনারেল তার চাকরি চলে যায়। সেই মিশনে এতো অনিয়ম হয়েছিল। সেক্সচ্যুয়াল এবিউজ হয়েছিল। অনেক রকম কর্মকাণ্ডের জন্য সেই কন্টিনজেন্টকে চলে যেতে হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশি কন্টিনজেন্ট ছিল। একাধিক কন্টিনজেন্ট ছিল। কই আমাদের বিরুদ্ধে তো একটা অভিযোগও আসেনি! এটা একটা উদাহরণ।’ পৃথিবীতে অনেকগুলো অঞ্চলে, শুধু আফ্রিকায় নয়, আফ্রিকার বাইরে আমরা এশিয়া ও ইউরোপেও দায়িত্ব পালন করেছি জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কখনও কি আমাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়েছেন? আজ কেউ একজন প্রতিবেদন তৈরি করে বলার চেষ্টা করছে, ওমুকে ওমুক অর্গানাইজেশনে চাকরি করার সময় একটা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এটা একটা শোনা কথা। বাস্তবে যদি এটা হয়েও থাকে, তাহলে কি আমাদের জানানো হয়েছিল? আমাদের জানালে আমরা আমাদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যাপারে আমি বলতে পারি, ডেপুটেশনে অনেক জায়গায় আমাদের অফিসার ও সৈনিকরা চাকরি করেন। সেখানে গিয়ে যদি তারা কোনো অপরাধে জড়িয়ে যায়, সেটা যদি আমাদের কাছে রিপোর্ট আসে, আমরা কিন্তু এটার সঠিক বিচার করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেই। সেটা আপনারা ভেরিফাই করতে পারেন। আমরা যত অভিযোগ পেয়েছি, সবগুলো তদন্ত করেছি, সেক্ষেত্রে দোষী পাওয়া গেলে আমরা তাদের শাস্তি দিয়েছি।’ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, আজ সোমবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তিরক্ষা অপারেশনের প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত সব প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়া-প্যাসিফিক পিস অপারেশন ট্রেনিং সেন্টারের (এএপিটিসি) ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা এবং ওয়ার্কশপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। আইএসপিআর আরো জানায়, এএপিটিসি শান্তিরক্ষী অপারেশন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সঙ্গে জড়িত নীতিনির্ধারক, গবেষক, শান্তিরক্ষী, প্রশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একটি প্ল্যাটফর্ম। এএপিটিসি’তে বর্তমানে ২৪টি সদস্য রাষ্ট্র ও ২টি পর্যবেক্ষক দেশ রয়েছে। ২০২৩ সালের বার্ষিক সম্মেলনে বিপসট-এর কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ এক বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সংস্থার সভাপতির দায়িত্ব নেন। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে নিয়োজিত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডিফেন্স বা মিলিটারি অ্যাটাশেরা, ঊর্ধ্বতন সামরিক, আধা-সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধি, এএপিটিসির সদস্যভুক্ত ২৬টি দেশের প্রায় ৫০ জন বিদেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। |