শিরোনাম: |
বেনজীরের রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট
'ভারতের মতো অ্যাসেট ডিক্লারেশন আইনের প্রয়োজন আছে'
|
বর্তমান প্রতিবেদক: ভারতের মতো বাংলাদেশেও ‘অ্যাসেট ডিক্লারেশন ল’ এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন হাইকোর্ট। পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে করা রিটের শুনানিতে এই আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এ রিটের ওপর শুনানি হয়। শুনানির এক পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘ভারতের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা চাকরিতে প্রবেশের সময় একবার এবং অবসরে যাওয়ার সময় আরেকবার সম্পদের হিসাব দাখিল করে থাকেন। প্রবেশ এবং অবসরের সময়কালীন সম্পদের পরিমাণের তারতম্য ১০ ভাগের বেশি হলে ওই কর্মচারীকে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। এজন্য আমাদের দেশে এ ধরণের আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রয়েছে। কিন্তু এরা নানা কারণে অনেক বিষয়ে অগ্রসর হতে পারে না। যদি দুদক অগ্রসর হতে না পারে, তাহলে দুর্নীতি ও অর্থপাচার কোনটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তাই রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি এটা করা সম্ভব হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত হবে।’ এ পর্যায়ে এই মামলায় উপস্থিত উভয় পক্ষের কৌঁসুলিদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটা ব্যক্তি দুর্নীতি করতে করতে পাহাড়সম সম্পদের মালিক হলো। অথচ তার বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন হলো না। তখন সব অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। আমরা চাই, দেশে অর্থ পাচার বন্ধ হোক। দুর্নীতি নির্মূল হোক। কেউ যেন অন্যায় করে পার না পায়। কারণ আমাদের তো একটা স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করতে হবে। এজন্য ভারতের মতো অ্যাসেট ডিক্লারেশন আইন তৈরিতে সবার সচেষ্ট হওয়া দরকার।’ আদালতে বেনজীর আহমেদের পক্ষে আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সাঈদ আহমেদ রাজা, ইমতিয়াজ ফারুক, দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং রিটকারীর পক্ষে এম সারওয়ার হোসেন ও মনোজ কুমার ভৌমিক শুনানি করেন। ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে গত ৩১ মার্চ এবং গত ২ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি গণমাধ্যম। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চেয়ে একটি আবেদন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করা হয়। এতে বলা হয়, দুটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশের পরও যথাযথ কর্তৃপক্ষ তদন্তের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত জরুরি। কিন্তু এরপরেও পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুদকের চেয়ারম্যান, কমিশনার (তদন্ত), কমিশনার (অনুসন্ধান) ও দুদক সচিব বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর ৭২ ঘণ্টা পর হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। এই রিটের পর গতকাল সোমবার তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দুদক। |