শিরোনাম: |
নির্বাচনী সভায় আপত্তিকর বক্তব্য
ওলিও'র বিরুদ্ধে মন্ত্রীর ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা
|
জহির রায়হান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সভায় আপত্তিকর বক্তব্যের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের স্বতন্ত্র ও নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও'র বিরুদ্ধে আদালতে একশো কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন নবনিযুক্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও এই আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ নজরুল ইসলামের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০১/২০২৪, তারিখঃ- ১১-০১-২০২৪ ইংরেজি। ফিরোজুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী-(কাঁচি প্রতিক) নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬৪ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। আওয়ামীলীগ প্রার্থী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি নৌকা প্রতিকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নবগঠিত মন্ত্রীসভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী নিযুক্ত হন। মানহানির মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফিরোজুর রহমান একজন লাইসেন্সধারী মাদক ব্যবসায়ী। তিনি এলাকার ভূমিদস্যু, মাদক স¤্রাট ও চাঁদাবাজদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মদের ব্যবসার লাইসেন্স নিয়ে অধিক লাভের আশায় অবৈধভাবে মদের ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে। এবং দেশের যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফিরোজুর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। এই আসনে নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই দেখতে পেয়ে বাদীকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যে বাদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ডিসেম্বর রাত অনুমান আটটার দিকে সদর উপজেলার সুহিলপুর বাজারে নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত হন ফিরোজুর রহমান। সেখানে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে বাদীকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে হেয় করার জন্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দেন। বক্তব্যে ফিরোজুর বলেন, ‘তার নিজের ঘরেই (মোকতাদির) আমার টাকা আছে। ৩০-৩৫ বছর আগে আমি তাকে (মোকতাদির) ৫০ হাজার টাকা দিয়া রাখছি। ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া করার সময় আর্থিক সহায়তা করেছি। জনসভায় উপস্থিত থাকা বিভিন্ন ব্যক্তি এই বক্তব্য মোবাইলফোনে ধারণ করে ভাইরাল করে। তাছাড়া ফিরোজুর রহমান এই বক্তব্য তারেকুল ইসলাম অনিক নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে প্রচার করেছেন। বাদির আইনজীবী আবদুল জব্বার মামুন বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সুহিলপুরে এক নির্বাচনী সভায় ফিরোজুর রহমান এক নির্বাচনী সভায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বক্তব্য রাখেন। ফিরোজুর রহমান ওই নির্বাচনী সভায় বলেন, তার নিজের (বাদী) ঘরেই আমার টাকা। আজ থেকে ৩০/৩৫ বছর আগে আমি তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়া রাখছি। এবং আমি তাকে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিষ্ঠার সময় আর্থিক সহায়তা করেছি। প্রকৃতপক্ষে ৩০/৩৫ বছর পূর্বে ফিরোজুর রহমানের সাথে মোকতাদিরের কোনো পরিচয় ছিল না। সে সময় বাদী মোকতাদির চৌধুরী তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিবের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ফিরোজুর বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই মানহানিকর বক্তব্য প্রদানে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদিরের ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে মানমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদিরের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈকিক অবস্থা বিবেচনায় ১০০ কোটি টাকা হবে। তিনি বলেন, দৃষ্টিগোচর হলে গত ২৮ ডিসেম্বর মানহানিকর বক্তব্য পরিহার করে বাদীর কাছে ক্ষমা চাইতে একটি আইনী নোটিশ ফিরোজেরর কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়। তিনি আইনী নোটিশ গ্রহণ করেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তাই র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সম্মানহানি করায় আদালতে শতকোটি টাকার ক্ষতির মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী রোববার বিজ্ঞ আদালত এই মামলায় শুনানি করবেন। এ ব্যাপারে ফিরোজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মামলা করার আগে তিনি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু নির্বাচনে ব্যস্ত থাকার কারনে সেদিকে মনোনিবেশ করতে পারিনি। যেহেতু তিনি মামলা করেছেন আইনীভাবে আমি জবাব দিবো। |