শিরোনাম: |
ফিনিক্স ফাইন্যান্সের এমডি ইন্তেখাব আলমকে বরখাস্ত
|
ঋণে অনিয়ম ও আমানতকারীদের স্বার্থবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসএম ইন্তেখাব আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ বিষয়ে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ থেকেই এই বরখাস্তের আদেশ কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মুখপাত্র বলেন, ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের এমডির বিষয়ে ঋণ অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। এছাড়া তিনি আমানতকারীদের স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের (এফআইসিএসডি) পরিচালিত বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইন্তেখাব আলমসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু বিষয় নির্দেশনা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণ অনিয়মসহ প্রতিষ্ঠান ও আমানতকারীদের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে ইন্তেখাব আলমের সম্পৃক্ততা পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ বিভাগে যুক্ত করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে একজন প্রধান নির্বাহী নিয়োগ দিতেও বলা হয়েছে। এতে গ্রাহক প্রতিষ্ঠান এস এ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, আমান সিমেন্ট মিল ইউনিট-২, মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, মাহিন এন্টারপ্রাইজ, ম্যাক্স স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ ও গ্রাহক নাজমা পারভিন, ফারহান মোশাররফের ঋণ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন থাকাকালীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৮ সাল থেকে টানা ১৬ বছর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসএম ইন্তেখাব আলম দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০ সালের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। মূলত প্রতিষ্ঠানটি থেকে নামে-বেনামে ঋণ বের করে নেওয়ায় তা আর ফেরত আসছে না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ফিনিক্স ফাইন্যান্স বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস কমে ১৩ টাকা ৪৭ পয়সা ঋণাত্মক হয়ে গেছে। অর্থাৎ কোম্পানিটি এ ৬ মাসে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ১৩ টাকা ৪৭ পয়সা লোকসান করেছে। কোম্পানিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ১ পয়সা করে লাভ বা মুনাফা করেছিল। সেখানে এ বছরের প্রথম ছয় মাসে বড় ধরনের লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। লোকসানের কারণ সম্পর্কে কোম্পানিটি জানিয়েছে, ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং বেড়ে যাওয়ায় মুনাফা কমে গেছে। অর্থাৎ কোম্পানিটির ঋণের বড় অংশই খেলাপির ঝুঁকিতে পড়েছে বা খেলাপি হয়ে গেছে। সাধারণত যেসব ঋণে খেলাপির ঝুঁকি বেড়ে যায়, সেসব ঋণের বিপরীতে প্রভিশনিং করতে হয়। |