শিরোনাম: |
ব্লুমবার্গের টেকসই কোম্পানির তালিকায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ৭ কোম্পানি
|
বর্তমান ডেস্ক: বাংলাদেশে টেকসই কর্পোরেট ব্যবসার চর্চায় ধীরগতির মধ্যেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানি গত বছরের পরিবেশগত, সামাজিক ও সুশাসনমূলক (ইএসজি) কাজের জন্য ব্লুমবার্গ থেকে বেশ ভালো নম্বর পেয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো—গ্রামীণফোন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশ, ম্যারিকো বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। সারা বিশ্বের ১৬ হাজারের বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলো। যা আন্তর্জাতিক ইকুইটি বাজার মূলধনের ৯৩ শতাংশের বেশি এই কোম্পানিগুলোর দখলে। তবে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর ব্লুমবার্গ ইএসজি স্কোর অন্যান্য আঞ্চলিক কোম্পানির স্কোরের চেয়ে বেশ কম। যেমন, শীর্ষ ১০০ ভারতীয় কোম্পানির স্কোর ৫০ থেকে ৭০-এর মধ্যে। অন্যদিকে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর স্কোর ২৩ থেকে ৪০-এর মধ্যে। উল্লেখ্য, মোট ১০০-র মধ্যে স্কোর দেওয়া হয়। পুঁজিবাজারে বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য ইএসজি রেটিং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারীই, বিশেষ করে ইউরোপীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখন বিনিয়োগের আগে দেখতে চায় নির্দিষ্ট কয়েকটি ইএসজি মানদণ্ড পূরণ করা হয়েছে কি না। কে কত ইএসজি স্কোর পেল বাংলাদেশের বেশ কিছু নেতৃস্থানীয় তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) গ্রহণ করেছে, যা ইএসজির আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। নেতৃস্থানীয় আন্তর্জাতিক ইএসজি স্কোরিং প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ বিভিন্ন কোম্পানির আদর্শ টেকসই প্রতিবেদন থেকে প্রাসঙ্গিক, পরিমাপযোগ্য তথ্য নেয় এবং সেগুলোর ভিত্তিতে কোম্পানিগুলোকে স্কোর দেয়। শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ কোম্পানি গ্রামীণফোন দীর্ঘদিন ধরে টেকসই ব্যবসার চর্চা করছে। বহুজাতিক কোম্পানিটি বার্ষিক টেকসই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ব্লুমবার্গ ইএসজি ইউনিভার্সে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৯.৬ স্কোর পেয়েছে গ্রামীণফোন। তথ্য বলছে, প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর উন্নতি করছে। তামাক বাজারের নেতৃস্থানীয় কোম্পানি বিএটি বাংলাদেশ ৩৫.৪ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় এবং হেয়ারকেয়ার মার্কেটের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ম্যারিকো বাংলাদেশ ৩৪.৯ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্লুমবার্গ ইএসজি স্কোর ৩৩.১। আর ৩১.১ স্কোর নিয়ে তার পরেই বৃহত্তম নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অবস্থান। ফার্মাসিউটিক্যালস বাজারের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের স্কোর ২৬, আর দেশের ইলেকট্রনিকস বাজারের নেতৃস্থানীয় কোম্পানি ওয়ালটনের স্কোর ২৩.৭। ইএসজি বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশের অবস্থা ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বে ইএসজি সম্পদের পরিমাণ ৫৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে, যা ব্যবস্থাপনার অধীন মোট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের সেবা প্রদানকারী স্থানীয় ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে টেকসই তহবিলের জন্য ১৯০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে উদীয়মান অর্থনীতিগুলো ইএসজির জন্য হাব হয়ে উঠছে। মহামারিকালে বিজনেস রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট নিয়ম প্রয়োগ করে শীর্ষ ১ হাজার কোম্পানিকে ইএসজি তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য করেছে ভারত। এর সুবাদে দেশটি এমএসসিআই এমার্জিং মার্কেটস ইএসজি লিডারস ইনডেক্সে তৃতীয় স্থান দখল করেছে। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ইএজসি প্রতিবেদন প্রকাশ বাধ্যতামূলক করেছে থাইল্যান্ড। ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) স্ট্যান্ডার্ড সেটিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান মোহাম্মদ আনোয়ারুল করিম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বিনিয়োগকারী বা বিদেশি গ্রাহকরা না চাইলে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য টেকসই প্রতিবেদন প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক নয়। তবে অনেক বহুজাতিক কর্পোরেশন এবং বেশ কিছু স্থানীয় উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে নিজে থেকেই টেকসই ব্যবসার চর্চা শুরু করেছে। ইনস্টিটিউট অভ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অভ বাংলাদেশের (আইসিএবি) প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক বলেন, অন্যান্য আরও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে তার ইনস্টিটিউটও এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। |