শিরোনাম: |
সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার
বাজার মূলধন কমেছে, গড় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে
|
বর্তমান প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে সূচক। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছয়শ কোটি টাকার ওপরে কমেছে। তবে দৈনিক গড় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।
বিনিয়োগকারীদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবর আসার পর থেকে পুঁজিবাজারে দরপতন চলছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়। এর পরের দুই সপ্তাহ ধরে পতন চলছে পুঁজিবাজারে। ফলে বিনিয়োগকারীদের হতাশা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাজারের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন অনেক বিনিয়োগকারী। লেনদেনের গতিও কমে যাচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে পুঁজিবাজারের সরাসরি কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাই এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়া যুক্তিসংগত নয়। বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ার বিক্রি করছেন বলেই শেয়ারদর দাম কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বাজারের এ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের খুবই বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। হুজগে বা গুজবে বিনিয়োগ না করে, সার্বিক তথ্য ভালোভাবে পর্যালোচনা করে বিনিয়োগ করতে হবে। আর্থিক ভিত শক্তিশালী ও ভালো পারফরমেন্স করছে এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত। এতে সাময়িকভাবে লাভ পাওয়া না গেলেও, ভবিষ্যতে ভালো লাভ পাওয়া যেতে পারে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭টির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দাম কমেছে ১২০টির। ২০৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। দর অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনি¤œ দাম) আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। আলোচ্য সপ্তাহে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকায়। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬৯৮ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে এক হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ। এ নিয়ে দুই সপ্তাহের পতনে বাজার মূলধন কমল ২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২২ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৫ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ২ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই সূচক কমে ৫ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ। সব সূচক কমলেও লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৬৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৫৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় এক হাজার ৮১৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৫২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা ২৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোনালী পেপারের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ২৯ লাখ টাকার। ৮৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ফু-ওয়াং ফুড, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, দেশবন্ধু পলিমার, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। |