শিরোনাম: |
ঢাকার ৫৮ বিপণি বিতান ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিস
|
বর্তমান প্রতিবেদক: ঢাকার বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর রাজধানীর ৫৮টি মার্কেট ও শপিংমলকে অগ্নি ঝুঁকির তালিকাভুক্ত করেছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ঢাকা নিউ মার্কেটের পাশে গাউছিয়া মার্কেটসহ নয়টি মার্কেটকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া ১৪টি মার্কেটকে ‘মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ৩৫টি মার্কেটকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকায় রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম রোববার তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাজধানীতে যে ৫৮টি ভবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার সবগুলোই বাণিজ্যিক। এর মধ্যে নয়টি ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’, ১৪টি ‘মাঝারি’, আর ৩৫টি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অধিক ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় গাউছিয়া মার্কেট ছাড়াও রয়েছে ফুলবাড়ীয়ার বরিশাল প্লাজা মার্কেট, টিকাটুলির রাজধানী নিউ রাজধানী সুপার মার্কেট, লালবাগের আলাউদ্দিন মার্কেট, চকবাজারের শাকিল আনোয়ার টাওয়ার, শহীদ উল্লাহ মার্কেট, সদরঘাটের শরীফ মার্কেট, মাশা কাটারা ২২ মার্কেট এবং সিদ্দিক বাজারের রোজ নীল তিস্তা মার্কেট। ঈদের আগে ১১ দিনের ব্যবধানে পুড়ে গেছে ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজারে এবং ঢাকা নিউ মার্কেটের পাশে নিউ সুপার মার্কেটে। এর মধ্যে বঙ্গবাজারে ৩৮৪৫টি দোকান পুড়ে ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষতির তথ্য দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটির তদন্ত কমিটি। আর নিউ সুপার মার্কেটে পুড়েছে ছয়শর বেশি দোকান। এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কারণ জানা না গেলেও এর পেছনে নাশকতার সন্দেহের কথা শনিবার বলেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মইন উদ্দিন। সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই সন্দেহের কথা বলেন। নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিফিংয়ে এসে ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো তালিকাভুক্ত করে রোববার জানানোর কথা বলেছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এর আগে গত ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের একদিন পর গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন করে বেশকিছু ঝুঁকির কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। সেদিন ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে ডিজিএফআই ও এনএসআই কর্মকর্তাদের একটি দল গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শনে যান। এরপর দোকান মালিক সমিতির অফিসে বসে মার্কেট সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য পূরণ করে গোটা মার্কেট ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক বজলুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এই মার্কেটের ছয়টি সিঁড়ি রয়েছে, কিন্তু সিঁড়িগুলো উš§ুক্ত নয়। ইলেকট্রিসিটির তার যেখানে-সেখানে ঝুলে রয়েছে। এছাড়া মার্কেটটিতে স্বয়ংক্রিয় অগ্নি সংকেত ব্যবস্থা স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল সেটি এখনও করা হয়নি। “এখানে অগ্নি নির্বাপনের কোনো প্যানেল বোর্ড নেই, এই বোর্ড থাকলে একটি ঘরে বসেই দেখা যায় কোথায় আগুন লেগেছে। মার্কেট কর্তৃপক্ষকে নিজেদের অগ্নি নির্বাপনী জনবল গড়ে তুলতে বলা হয়েছিল, যেটি এখনো দৃশ্যমান হয়নি।” ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত সাততলা গাউছিয়া মার্কেটে ৪৩০টি দোকান রয়েছে। বেশিরভাগই নারীদের পোশাক, জরি, লেইস, গয়না ব্যাগ, জুতা ও কসমেটিকসের দোকান। মার্কেটের উপরের তলাগুলোতে পাইকারি ব্যবসায়ীদের অফিস ও গুদাম। গাউছিয়া মার্কেটের যে ছয়টি সিঁড়ি রয়েছে, দোকান বসার কারণে সবগুলোই অপ্রশস্ত হয়ে পড়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এসব সিঁড়ি দিয়ে পর্যাপ্ত মানুষ নামতে পারবে না বলে জানিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক বজলুর। “যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে এই সিঁড়িগুলো দিয়ে পর্যাপ্ত মানুষ নামতে পারবে না। আর সিঁড়িতে যদি আগুন লেগে যায় তাহলে সেই সিঁড়ি ব্যবহারযোগ্য থাকবে না। তাই সিড়ি খালি রাখা বাঞ্ছনীয়।” |