শিরোনাম: |
বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজ ২০২৩
রেকর্ডবই তোলপাড় করে বাংলাদেশের বিশাল জয়
|
বর্তমান ডেস্ক: সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশের সৌভাগ্যের মাঠ বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে না। এই ভেন্যুতে এর আগে খেলা পাঁচটি ওয়ানডের সবগুলোই জিতেছিল টাইগাররা। তবে সবকিছু ছাপিতে গেছে ষষ্ঠ ম্যাচের পরিসংখ্যান। যে ম্যাচ জিতে রেকর্ডবই তোলপাড় করে দিয়েছে তামিম ইকবালের দল। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। যেখানে ব্যাট হাতে ব্যক্তিগত কিছু রেকর্ডও গড়েছিলেন টাইগাররা। এরপর ফিল্ডিংয়ে নেমে আরেকটি রেকর্ডময় জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা। সিলেটে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৩০.৫ ওভারে মাত্র ১৫৫ রানে অল আউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড। টাইগারদের জয় ১৮৩ রানে। যা ওয়ানডেতে রানের দিক থেকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
আগের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০২০ সালে এই সিলেটের মাটিতেই ১৬৯ রানে জিতেছিল টাইগাররা। একই ভেন্যুতে এবার সেই রেকর্ডকেও ছাপিয়ে গেছে লাল সবুজের দল। উল্লেখ্য, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নটিংহ্যামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান ছিল টাইগারদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। যেটি আজ ভেঙেছে স্বাগতিকরা। এদিন টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে নামেন লিটন দাস। প্রথম দুই ওভারে দুজনে যোগ করেন ১৫ রান। তবে তৃতীয় ওভারে বাধে বিপত্তি। এ সময় মার্ক আদাইরের বলে স্লিপে ধরা পড়েন ৩ রান করা তামিম। কার্টিস ক্যাম্ফারের ডেলিভারিতে স্টার্লিংয়ের দ্বিতীয় ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ২৬ রান করেন লিটন। ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়ে ব্যর্থ হন শান্ত। তিনি ২৫ রানে সাজঘরে ফেরার পর সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয় মিলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। ক্যাম্ফারের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৫৩তম অর্ধশতক পূরণ করেন সাকিব। হাফ সেঞ্চুরির পর আরো আক্রমণাত্মক হয়ে পড়েন সাকিব। একেরপর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন তিনি। অন্যপ্রান্তে অভিষেকেই ফিফটির দেখা পান তৌহিদ হৃদয়। দুজনের জুটিও ছাড়ায় শতকের গণ্ডি। হৃদয়ের সঙ্গে জুটিতে শতকের দেখা পেলেও ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ফেরেন টাইগার অলরাউন্ডার। গ্রাহাম হিউমের বল কাট করতে গিয়ে লরকান টাকারের তালুবন্দী হয়ে সাকিব যখন ফিরছিলেন, তার নামের পাশে ছিল ৯৩ রান। এর আগেই অবশ্য ওয়ানডেতে ৭০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ছয়ে নেমে বাইশ গজে ঝড় তোলেন মুশফিকুর রহিম। টি-২০ মেজাজে খেলে মাত্র ২৬ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। মুশফিকের বিদায়ের এক বল পরই আউট হন সেঞ্চুরির সুবাস পেতে থাকা হৃদয়। এর মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকেই সেঞ্চুরির দুর্দান্ত রেকর্ডটি হাতছাড়া করেন তিনি। তার বিদায়ের পর ইয়াসির রাব্বি, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদের ক্যামিওতে রানের পাহাড় গড়ে টাইগাররা। আইরিশদের হয়ে একাই চার উইকেট শিকার করেন গ্রাহাম হিউম। এছাড়া মার্ক আদাইর, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন ও কার্টিস ক্যাম্ফার একটি করে উইকেট নেন। বল হাতে ভালো সময় না কাটালেও স্টিফেন দোহেনি ও পল স্টার্লিংয়ের ব্যাটে উড়ন্ত শুরু পায় আইরিশরা। মাত্র ১১ ওভারে ৬০ রান যোগ করেন দুজন। তবে এরপরই ছন্দপতন। দ্বাদশ ওভারে আক্রমণে এসে দ্বিতীয় বলেই দোহেনিকে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন সাকিব। ৩৪ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ের পরই ব্যাটিং ধসের সম্মুখীন হয় আইরিশরা। এবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদের যৌথ পেস আক্রমণের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে আয়ারল্যান্ড। অল্প সময়ের ব্যবধানে এবাদত ও তাসকিন দুজনেই শিকার করেন দুটি করে উইকেট। এ সময় একে একে ফেরেন স্টার্লিং (২২), বালবির্নি (৫), টেক্টর (৩) ও টাকার (৬)। মূলত তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় আইরিশরা। পরের দলের ব্যাটাররা শুধু হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছেন। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন জর্জ ডকরেল। তাকে বোল্ড করে টাইগারদের বড় জয় নিশ্চিত করেন এবাদত। বাংলাদেশের হয়ে এ পেসার চারটি, নাসুম আহমেদ তিনটি, তাসকিন আহমেদ দুটি ও সাকিব একটি করে উইকেট শিকার করেন। |