শিরোনাম: |
লিভারপুলকে হারিয়ে ছয় রেকর্ড রিয়ালের
|
বর্তমান ডেস্ক: লিভারপুলের জন্য এবারের শেষ ষোলোর লড়াইটা ছিল প্রতিশোধের মিশন। ২০১৭-১৮ ও গত মৌসুমে (২০২১-২২) উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরেই শিরোপা স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায় লিভারপুলের। ২০২২ সালের ২৮ মে-এর ফাইনালে ০-১ গোলে হারের ক্ষতটি তো টাটকাই।
এবার শেষ ষোলোতেই সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ এসেছিল লিভারপুলের সামনে। কিন্তু প্রতিশোধ নেওয়া দূরে থাক, পরশু নিজেদের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে লিভারপুল বিধ্বস্ত হয়েছে। লিভারপুলকে তাদেরই ঘরের মাঠে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়ালের এই জয়টাও আবার ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর। অসাধারণ প্রত্যাবর্তন জয়ের গল্প লেখার পাশাপাশি রিয়াল মাদ্রিদ ও তাদের খেলোয়াড়েরা গড়েন ছয় ছয়টি রেকর্ড। রিয়ালের এই দাপুটে জয়ের নায়ক ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও ফরাসি ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা। দুজনেই গোল করেন দুটি করে। রিয়ালের অন্য গোলটি করেছেন ভিনিসিয়যুসের স্বদেশি ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও। মজার বিষয় হলো, ম্যাচে যে ৬টি রেকর্ড হয়েছে, তার দুটি করে রেকর্ড গড়েন বেনমেজা ও ভিনিসিয়ুস। তাদের কাঁধে চেপে বাকি দুটি রেকর্ড রিয়ালের। অথচ স্বাগতিক লিভারপুলের শুরুটা হয়েছিল অবিশ্বাস্য। ১৪ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। ৪ মিনিটেই অ্যানফিল্ডকে নাচিয়ে তোলেন উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড ডারউইন নুনেজ। ১৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লিভারপুলের মিশরীয় ফরোয়ার্ড মোহাম্মেদ সালাহ। লিভারপুলের খেলার গতিতে মনে হচ্ছিল, দুইবারের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ-জ্বালা হয়তো এক ম্যাচেই মেটাবে লিভারপুল! রিয়ালের গলায় গোলের মালা পরাবে! সেই ধারণা পালটে যেতেও সময় লাগেনি। সালাহর গোলের ৭ মিনিট পরই রিয়ালকে ম্যাচে ফেরান ভিনিসিয়ুস। ২১ মিনিটের ঐ গোলের পর ৩৬ মিনিটে রিয়ালকে ২-২ সমতায়ও ফেরান ভিনিসিয়ুস জুনিয়রই। মানে অ্যানফিল্ডে রিয়ালের প্রত্যাবর্তন গল্পের মূল নায়ক ভিনিই। এই ২-২ সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় রিয়াল। ফিরে এসেই আবারো গোল উৎসবে মাতে রিয়াল। ৪৭ মিনিটে দলের তৃতীয় এই গোলটিও একজন ব্রাজিলিয়ানের পা ছুঁয়ে। দলকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন এদের মিলিতাও। এরপরও হয়তো লিভারপুলের স্বপ্ন ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। অলরেডদের সেই স্বপ্ন চুরমার করেন বেনজেমা। ৫৫ ও ৬৭ মিনিটে জোড়া গোল করে ফরাসি তারকা নিশ্চিত করেন রিয়ালের বড় জয়। এই জয়ে রিয়াল যেমন কোয়ার্টার ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে, তেমনি লিভারপুলের বিদায়ও প্রায় নিশ্চিত! আগামী ১৫ মার্চ শেষ ষোলোর ফিরতি লেগটি যে রিয়ালের ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে। ম্যাচে হয়েছে যে ছয় রেকর্ড ফুটবলে প্রত্যাবর্তন জয়ের গল্প অনেকই আছে। রিয়াল মাদ্রিদ তো গত মৌসুমে বেশি কয়েকবারই প্রথমে পিছিয়ে পড়েও জয় পেয়েছে। সেই রিয়াল পরশু প্রথম দল হিসেবে গড়ল দুই গোলে পিছিয়েং পড়েও তিন গোলের ব্যবধানে জয়ের অনন্য রেকর্ড। এর আগে কোনো দলই দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে তিন গোলের ব্যবধানে জিততে পারেনি। বেনজেমার দুই রেকর্ড: পরশুর জোড়া গোলের মধ্য দিয়ে লিভারপুলের বিপক্ষে বেনজেমার গোল হলো ৬টি। ইউরোপিয়ান কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে আর কোনো খেলোয়াড়ই লিভারপুলের বিপক্ষে এত বেশি গোল করতে পারেননি। রেকর্ড গড়া ৬ গোলের ৪টিই বেনজেমা করেছেন লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে। বেনজেমার এই রেকর্ডটি কেড়ে নেওয়ার দৌড়ে রয়েছেন তারই ক্লাব সতীর্থ ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, পরশুর জোড়া গোল মিলিয়ে লিভারপুলের বিপক্ষে যার গোল হলো ৫টি। পরশুর জোড়া গোলের মধ্যদিয়ে বেনজেমা লিওনেল মেসির একটা রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ১৮ মৌসুমে গোল করার রেকর্ডটি এখন তাদের দুজনের। পরশুর আগে রেকর্ডটি মেসির একার দখলে ছিল। অবশ্য বেনজেমা মৌসুমের শুরুর দিকেই রেকর্ডটায় ভাগ বসাতে পারতেন, যদি চোটে না পরতেন। গত মৌসুমটি স্বপ্নময় কাটলেও চোটের কারণে এবার বেশি মাঠে নামাই হয়নি তার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বে তাই একটা গোলও পাননি। তবে নকআউটপর্বের প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করলেন বর্তমানের ব্যালন ডি’অর জয়ী বেনজেমা। ভিনিসিয়ুসের দুই রেকর্ড: ডাচ-কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফের পর ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ অতিথি খেলোয়াড় হিসেবে অ্যানফিল্ডে জোড়া গোল করার রেকর্ড গড়েছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। উল্লেখ্য, এই ভিনিই গত ২২ মে-এর ফাইনালে লিভারপুলের শিরোপা স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। ম্যাচের একমাত্র গোলটা করেছিলেন তিনিই। |