শিরোনাম: |
আগামী মাস থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে জনগণের আর বেশি ভোগান্তি হবেনা : প্রধানমন্ত্রী
|
বর্তমান প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাস থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য জনগণকে আর বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ হয়তো আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবেনা।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রারম্ভিক ভাষণে একথা বলেন।তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল কিনতে ও গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে। শুধু আমাদের দেশ নয়, ইংল্যান্ড,আমেরিকা, জার্মাানীসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশও জালানি সাশ্রয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে। তারাও হিমসিম খাচ্ছে। সেখানে আমাদেরও কিছু দিনের জন্য কষ্ট পোহাতে হয়েছে। ইনশাল্লাহ হয়তো আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবেনা।
শেখ হাসিনা বলেন, তারপরও তেল, পানি এবং জালানি ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ সারাবিশে অর্থনৈতিক মন্দার যে প্রভার তার থেকে আমরা মুক্ত নই। কারো এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। নিজের জমিতে ফসল ফলান। কেননা সারাবিশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের রিজেদের খাদ্যের সংস্থান নিজেরা করতে পারলে বিশব্যাপী চলমান দুর্ভোগ্যের আঁচ বাংলাদেশে লাগবেনা। সরকার প্রধান বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। আমাদের যা প্রয়োজন তার থেকে বেশি উৎপাদন করছি। তারপরও আমরা আপদকালের জন খাদ্য সব সময় মজুত রাখি, যেন আমার দেশের মানুষের কোনো কষ্ট না হয়। মানুষকে বিনামূল্যে এবং কমমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বেশি দাম দিয়ে সব জিনিস কিনে নিয়ে এসে কম দামে দিচ্ছি যাতে কোনো মানুষ খাদ্যে কষ্ট না পায়। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, চিনি ভর্তুকিতে দিচ্ছি। ১ কোটি মানুষ এটা পাচ্ছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে আমরা ১৫ টাকায় দিচ্ছি আর ৫০ লাখ পরিবার পাচ্ছে বিনা পয়সায়। যারা বয়োবৃদ্ধ তাদেরকে দিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, যারা গৃহহীন-ভূমিহীন তাদের ঘর করে দিচ্ছি। যাদের ঠিকানা ছিল না, এ ধরনের যত মানুষ পাচ্ছি আমরা খুঁজে খুঁজে বের করে বিনা পয়সায় ঘর দিচ্ছি। কিছু দিন আগে বন্যা হয়ে গেল। নদী ভাঙনে যারা ভূমিহীন আমরা তাদেরও ঘর করে দেবো। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে । আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসিনি। গড়ছি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য। বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। বৃত্তি-উপবৃত্তি, মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা দিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনা পয়সায় দেয় হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কবে কে করেছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এত কাজ? এতবার তো ক্ষমতায় ছিল সবাই। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ছিল। মানুষের কল্যাণে তারা তো কখনো করেনি! করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন ধরে রিজার্ভ নিয়ে অনেক কথা শোনা যাচ্ছে। করোনাকালে আমাদের আমদানি হয়নি, কেউ বিদেশে যেতে পারেনি, কোনো রকম খরচ ও হুন্ডি ব্যবসা ছিল না। একেবারে সরকারিভাবে সব অর্থ এসেছে, যার ফলে আমাদের ভালো ফান্ড আসে। ’৯১ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। যেটা ৩ মাসের খাবার আমদানি করারও পয়সা হতো না। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের কল্যাণেই তাঁর সরকার রিজার্ভের অর্থ খরচ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অতীতের ঋণের সুদও গুণতে হয় বড় অংকের। তাঁর সরকার কখনো ঋণ খেলাপি হয়নি বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনও যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে ৫ মাসের আমাদানী ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। এটি ৩ মাসের থাকলেই যথেষ্ট বলেই তিনি উল্লেখ করেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ৮ বিলিয়ন ডলার আমরা আলাদাভাবে বিনিয়োগ করেছি। আধুনিক বিমান ক্রয় করেছি। এটা আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়েই করেছি। অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার নেইনি। কারণ ধার নিলেও সেটাকা সুদসহ শোধ করতে হতো। সেই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিমান নিয়েছে এবং ২ শতাংশ সুদে আবার ফেরত দিচ্ছে। ফলে দেশের টাকা দেশের থাকছে। রপ্তানী ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেয়ায় টাকা করচ হচ্ছে। এতে আমাদের দেশের লোকই লাভবান হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির অনেক নেতা মানিলন্ডারিংয়ের কথা বলেন। তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে মানিলন্ডারিং কেসে। তার বিরুদ্ধে আমেরিকা থেকে এফবিআই এর লোক এসে বাংলাদেশের সাক্ষী দিয়ে গেছে। মানি লন্ডারিং কেসে সাত বছর সাজা, বিশ কোটি টাকা জরিমানা আর গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির জন্যও সে সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের টাকা আত্মস্যাতের মামলায় খালেদা জিয়া সাজা পেয়েছে। করোনায় বিনামূল্যে টিকা প্রদান, টেষ্ট করানো এবং অনুসাঙ্গিক খাতে যে বিপুল অংকের টাকা খরচের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে সরকারের যে ব্যয় সেদিকে পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ার নজর নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা দুর্নীতির কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু কোন দিন খুঁজে দেখেনি যে টাকা সব মানুষের জন্য খরচ হয়েছে। আওয়ামী লীগ কোন দুর্নীতি করেনি বরং দুর্নীতি তারেক জিয়া, খালেদা জিয় এবং কোকো করে গেছে। আর এটা তাঁর সরকারের কথা নয় আমেরিকা থেকে এফবিআই এসে দুনীর্তির সাক্ষ্য দিয়েছে এবং তাদের পাচার করা কিছু টাকাও উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। তিনি বলেন, ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় তারেক জিয়ার সম্পৃক্ততা ও সাজা প্রাপ্তি এবং তাঁর ওপর একের পর এক প্রাণঘাতি হামলা ও সে সময় খালেদা জিয়ার বক্তব্য ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীতো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবেনা’, ‘আওয়ামী লীগ ১শ’ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পাবেনা’ - সবিস্তারে তিনি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা খুন,হত্যা এবং গুমের রাজনীতিতে বিশাস করে। বিএনপি আমলে বাংলা ভাই এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি এবং একযোগে সারাদেশের ৫শ’ জায়গায় বোমা হামলার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে প্রকৃত গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক অধিকার এ দেশের মানুষের ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করি।’ |