শিরোনাম: |
মানবতাবিরোধী অপরাধে খুলনার ৬ রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড
|
বর্তমান প্রতিবেদক: হত্যা, গণহত্যা, অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে খুলনার বটিয়াঘাটার আমজাদ হোসেন হাওলাদারসহ ছয় রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন- বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- বটিয়াঘাটার শুরখালী গ্রামের সহর আলী শেখ, সুন্দর মহল গ্রামের মো. আতিয়ার রহমান শেখ, কিসমত লক্ষীখোলা গ্রামের মো. মোতাসিন বিল্লাহ, বিরাট গ্রামের মো. কামালউদ্দিন গোলদার ও নোয়াইল গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম। ছয় আসামির মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক। প্রসিকিউশনের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আল ফয়সাল আলী, আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে প্রসিকিউটর বাদল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে সবকটি অভিযোগ সন্দোহাতীতবাবে প্রমাণ করতে পারায় ট্রাইব্যুনাল ছয় আসামিকেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। ’ তবে এ রায়ে সংক্ষুব্ধ আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান মনে করেন, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। আর পলাতক নজরুল ইসলামের পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায়ে আমার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আত্মসমর্পন করে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমি মনে করি। ’ ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর সাত আসামির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৮ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত শেষ করে ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট প্রডিসকিউশনে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন দাখিল করে প্রসিকিউশন। ১৪ ডিসেম্বর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি সাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ গঠন করা হয়। বিচার চলা অবস্থায় আসামি মোজাহার আলী শেখ মারা যান। তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউশনের ১৭ জন সাক্ষী এ মামরায় সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের জেরার পর উভয় পক্ষের আইনি যুক্ততর্ক উপস্থাপনের শেষে গত ২২ মে মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রাখেন ট্রাইব্যুনাল। পরে গত ২৬ জুলাই রায়ের এদিন ঠিক নির্ধারণ করে দেন আদলত। আসামি আমজাদ কনভেনশন মুসলিম লীগের কর্মী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। আসামি মো. মোতাসিন বিল্লাহ জামায়াতে ইসলামির অনুসারী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। বাকি আসামিরাও রাজকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। |