শিরোনাম: |
নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকে ফের ইলিশ ধরা শুরু
|
বরিশাল ব্যুরো: ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সোমবার মধ্যরাতে শেষ হবে। রাত ১২টার পর থেকে নির্বিঘ্নে আবার ইলিশ শিকার করতে পারবেন জেলেরা। প্রজনন নিরাপদ করার জন্য ৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছিল। প্রতি বছরের মতো এবারও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধন, বাধা দিতে গেলে প্রশাসনের ওপর হামলাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে নদীতীরবর্তী জনপদে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় সূত্র দাবি করেছে, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ৯০ ভাগ সফল হয়েছে তারা। এ বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন জেলে সংগঠনের নেতারা।
মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত বছরের চেয়ে এবার বেশি অভিযান চালানো হয়েছে। তবে ইলিশ নিধনের দায়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে গত বছরের চেয়ে অনেক কম সংখ্যক জেলেকে। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুস সালেহীন বলেন, বিভাগের ছয় জেলায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় শনিবার পর্যন্ত ৬১৫ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ১৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আট লাখ টন ইলিশ এবং ৫৪ লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়। এবার গত ২০ দিনে অভিযান হয়েছে দুই হাজার ৫০৫টি। অন্যদিকে, গত বছর বিভাগে ২২ দিনে দুই হাজার ৫০৫টি অভিযান চালিয়ে এক হাজার ১৩৩ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। গতকাল রোববার নিষেধাজ্ঞার ২১তম দিনেও বরিশালের মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, সন্ধ্যা, কীর্তনখোলা, কালাবদরে অবাধে ইলিশ ধরার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদের রাজাপুর গ্রামে এক বাড়ি থেকে ১৫ মণ ইলিশ জব্দ করার কথা জানিয়েছেন মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস। জাতীয় ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, ২২ দিনে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সফলতা ৬০ ভাগের বেশি হবে না। এ বছর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বরিশালের মেঘনায় বেপরোয়াভাবে ইলিশ নিধন করা হয়েছে। অভিযান চালাতে গিয়ে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং হিজলায় কোস্টগার্ডের জাহাজের ওপর হামলাসহ একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাতুব্বর বলেন, ইলিশ নিধন বন্ধ রাখতে প্রশাসনের চেষ্টা ছিল। কিন্তু নদীতীরবর্তী জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কারণে পুরোপুরি সফল হওয়া যায়নি। বিশেষ করে হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের মাছঘাট মালিক কয়েকজন জনপ্রতিনিধি প্রতি বছরের মতো এবারও বেপরোয়া ছিলেন। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক আনিছুর রহমান বলেন, এবার হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে হামলার ঘটনায় মৌসুমি জেলে এবং চেয়ারম্যান- মেম্বাররা জড়িত। অভিযান চালাতে গিয়ে হিজলায় একজন কোস্টগার্ড সদস্য মেঘনায় পড়ে নিহত হয়েছেন। একই উপজেলায় মৎস্য কর্মকর্তা হামলার শিকার হন। মেহেন্দীগঞ্জে ইউএনও হামলার শিকার হয়েছেন। বাবুগঞ্জে ভূমি কর্মকর্তা ও ঝালকাঠিতে ইউএনও হামলার শিকার হন। এসব ঘটনায় কারা জড়িত তা চিহ্নিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলা করছে। তারা মন্ত্রণালয়েও রিপোর্ট দিচ্ছে। এত সব প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও এবার ৯০ ভাগ মা ইলিশ রক্ষা করা গেছে বলে দাবি এ কর্মকর্তার। |