শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩ পৌষ ১৪৩১
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে সারাদেশে গণঅনশন-বিক্ষোভ
Published : Saturday, 23 October, 2021 at 6:00 AM, Count : 566

বর্তমান প্রতিবেদক: সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে সারাদেশে গণঅনশন-গণ-অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শনিবার ভোর ছয়টা থেকে এই কর্মসূচী শুরু হয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। শুক্রবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, বাড়িঘর ও স্থাপনায় যেসব হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদে সরকার যে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে, সেটার দ্রুত বাস্তবায়ন ও সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত প্রতিরোধে এই কর্মসূচী বলে পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চলছে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন। এ সময় নেতাকর্মীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে 'সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন' পাস ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানায়। বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের ডাকে কর্মসূচিতে জাগো হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ, ইন্টারন্যাশনাল শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশনসহ বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আরও কয়েকটি সংগঠন। ঢাবিতে সহিংসতাবিরোধী কনসার্ট :দেশব্যাপী চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে একাত্ম হয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে শুক্রবার বিকেলে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে 'সহিংসতাবিরোধী কনসার্টের' আয়োজন করা হয়। 'সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়'-এর ব্যানারে এর আয়োজন করা হয়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ-৭১। চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে, আসকরদিঘির পাড় এসএ খালেদ রোড, পাহাড়তলী কৈবল্যধামসহ বিভিন্ন এলাকায় জেলা সৎসঙ্গ, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ ছাড়া সন্ধ্যায় নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে মোমবাতি নিয়ে মৌন প্রতিবাদ জানান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন করেছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষ। দিনাজপুরেও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। শুক্রবার দিনাজপুর শহরের মিশন রোডে দিনাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রমের সামনের সড়কে প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। গাইবান্ধা শহরের কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি মন্দির-সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। গাইবান্ধা জেলা পুরোহিত কল্যাণ সমিতি ওই কর্মসূচির আয়োজন করে।

নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকার রামকৃষ্ণ মিশন সড়কের সামনে মানববন্ধন পালন করে রামকৃষ্ণ মিশন। পরে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সহিংসতার প্রতিবাদে মৌন মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে নড়াইলেও। জেলা রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের আয়োজনে মিশনের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে নওয়াপাড়া (যশোর) রামকৃষ্ণ আশ্রম। গতকাল সকালে নওয়াপাড়া বাজারের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের সামনে যশোর-খুলনা মহাসড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মৌন মানববন্ধন করেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীমঙ্গল থানার সামনে রামকৃষ্ণ মঠ, রামকৃষ্ণ মিশন, বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ এবং সারদা সমিতির যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং বাড়িঘরে হামলা-লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন।

শুক্রবার রাজধানীর গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়। রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মনন্দজী এবং মঠের অন্যান্য সন্ন্যাসীসহ সমমনা বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনে যোগ দেন।

গত ১৩ই অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গা পূজার সময় কুমিল্লার একটা পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া যায়। এরপরই দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ এবং পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়।

যেসব স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ঘটনার ঘটেছে, সেখানে প্রতিবাদ হিসাবে এবারের কালীপূজা এবং দীপাবলি উৎসবের পরিবর্তে ঘট-পূজার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

যে ব্যক্তি মন্দিরে কোরআন রেখেছিলেন বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। এসব ঘটনায় দেশে অন্তত ৭১টি মামলা হয়েছে, যেসব মামলায় অন্তত ৪৫০জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft