শিরোনাম: |
ধৈর্য্য ও বিশ্বাসঃ একটি ভালো ফলাফলের জন্ম
|
তৌকি আরিফ বিল্লাহ
আমাদের আম গাছে ১২ বছর পর এইবার বেশ কিছু আম এসেছে আলহামদুলিল্লাহ। ১২ বছর পর মানে হল, ১২ বছর পূর্বে এই গাছে আম আসতো। এই ১২ বছর আমের মৌসুমে গাছের দিকে আমরা অপলক তাকিয়ে থাকতাম,ভরা মৌসুমে যেন আমহীন গাছটা এক প্রকার শূন্যতায় ভরে থাকতো। পাশের গাছ গুলোতে যখন ঝাঁকে ঝাঁকে আম আসতো, সেই সময়টায় আমাদের গাছটায় একদমই আম আসতো না। বড় গাছে আম না আসলে কেমন দেখায় আশাকরি অনুমান করতে পারবেন। আমরা কিন্তু বিরক্ত হয়ে গাছটা কেটে ফেলিনি। ধৈর্য্য ধরেছি। তার বিনিময়ে আল্লাহ এইবার কাঙ্খিত ফলও দিয়েছেন। এখন গাছের আমগুলোর দিকে তাকালেই চক্ষু শীতল হয়ে যায়। মানুষের জীবনটাও এমনি! কোন স্বাভাবিক বিষয় যথা সময়ে না ঘটলেই ব্যস্ত হয়ে জীবনটা/সম্পর্কটা নষ্ট করে ফেলা উচিত নয়।এই যেমন ধরুন, বিয়ের পর সন্তান জন্মের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে একটু কয়টা বছর বেশি লাগলেই হতাশ হয়ে যাওয়া উচিত নয়,কেউ কাউকে ছেড়ে যাওয়াটাও কিন্তু কোন সমাধান নয়। সেদিন এক ঘটনা শুনলাম, বিয়ের ২২ বছর পর এক দম্পতির সন্তান দুনিয়া এসেছে। আচ্ছা এই ২২ অপেক্ষা না করে যদি তারা হতাশ হয়ে কারো উপর দোষ চাপিয়ে ডিভোর্স দিয়ে সম্পর্কের ইতি টেনে নিত, তাহলে কি তারা এই উপহারটা পেত? এই দম্পতির জন্য হয়তো ২২ বছর পর সন্তান লাভের ঘটনাটা আল্লাহই স্বাভাবিক করে রেখেছেন। একেকজনের জন্য স্বাভাবিকের মাত্রা একেক রকম,এই বিষয়টা আমরা কেন যেন বুঝতে চাই না। এছাড়াও ৮/১০/১২/১৪ বছর পর সন্তান লাভের বহু ইতিহাস আমি নিজেই শুনেছি। খুব কাছেই উদাহরণও আছে বেশ কিছু। তবুও কেন যেন আমরা হতাশ! তার উপর আবার আমাদের অনেকেই সাময়িক এসব সন্তানহীন দম্পতিদের অপমান অপদস্থ করেই যেন আমরা পৈশাচিক আনন্দ পাই। একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের/ পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে বের হওয়া বন্ধুদের মধ্যে অনেকেরই চাকরি হয়ে যায় একদম শুরুতেই, কারো হয় কয়েক মাস পর, কারো বা বছরখানেক পর বা তার চেয়েও কিছু পরে! শুরুতেই যার চাকরি হয়েছে, তার অবস্থা দেখে বাকি বন্ধুরা যদি হতাশ হয়ে দুর্বল হয়ে যায়/হাল ছেড়ে দেয়, তাহলে কি তারা দিনশেষে তাদের কাঙ্খিত সাফল্যের দেখা পাবে? মোটেও না! এক্ষেত্রে অবশ্যই বাকীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। ধৈর্য্য ধরেছে, কিন্তু ভালো ফল পায়নি এমন উদাহরন পৃথিবীতে বিরল। মূলত আমরা সব ক্ষেত্রেই একটু তাড়াহুড়া বেশি করি। অনেক সময় হয়তো পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে আমাদের উপর মানসিক চাপটাও একটু বেশি থাকে। সেই মানসিক চাপটাকে একপাশে রেখে যদি মাথা ঠান্ডা করে ধৈর্য্য ধরে সামনে আগানো যায়, তাহলে একদিন অবশ্যই কাঙ্খিত ফলাফল এসে যাবে। যখন আপনার ঝুড়িতে কাঙ্খিত ফলাফল থাকবে, তখন আশেপাশের কটু কথা বলা লোকজনের মুখ দিয়েও মিষ্টি মধুর কথা বের হবে। আসলে, সময় সবকিছু বদলে দেয়। এটাই সত্য! অগোছালো এই সারসংক্ষেপ লেখাটার শিরোনাম ধরে নিন "ধৈর্য্য ও বিশ্বাসঃ একটি মিষ্টি ফলাফলের জন্ম"! |