শিরোনাম: |
হাতিরঝিলের আদলে সাজবে ঢাকা উত্তরের ১৩ খাল
|
বর্তমান প্রতিবেদক: রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সম্প্রতি ওয়াসার কাছ থেকে ১৩টি খাল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাছে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই খালগুলো ঘিরে নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে ডিএনসিসি। পাশাপাশি জলাশয়গুলোর প্রাণ ফেরানোর কাজও করবে তারা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
ডিএনসিসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই ১৩টি খালের উভয় পাড় বাঁধাই করে নির্মাণ করা হবে সাইকেল লেন, থাকবে হাঁটাচলার পথ। সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হবে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। রাতের আঁধারে চলাচলে সুবিধার জন্য বসানো হবে এলইডি লাইট। খালগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরা ছিল। পানি প্রবাহ ছিল না। বর্ষায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। এছাড়া খালে জমে থাকা ময়লা পানি থেকে কোটি কোটি মশা জন্মাত প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ইতোমধ্যে খালগুলো থেকে বর্জ্য অপসারণ এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়েছে। অপসারণ এবং উচ্ছেদের কাজ শেষ হলে প্রতিটি খালের দুপাশে সীমানা খুঁটি বসানো হবে। ধাপে ধাপে খালগুলোকে ঘিরে হাতিরঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হবে। ২০১৬ সালের জুনে ঢাকার নাগরিকসেবা বাড়াতে হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, বেরাইদ, ডুমনি, সাঁতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদকে ভেঙে এলাকাগুলোকে ডিএনসিসির অন্তর্ভুক্ত করে সরকার। সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত নতুন এ এলাকাকে ভাগ করা হয় ১৮টি ওয়ার্ডে। কিন্তু অন্তর্ভুক্তির পর দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডগুলোতে তেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। এসব এলাকার খালগুলো ভরে গেছে ময়লা-আবর্জনায়। দুপাশে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি খাল থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং আবর্জনা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে ডিএনসিসিকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মূলত ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূর তথা পানিপ্রবাহ তৈরি করতে ওই ১৩টি খাল ডিএনসিসিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এসব খাল নান্দনিকভাবে সাজানোরও উদ্যোগ নিয়েছি। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে খালগুলো দেশে উদাহরণ হয়ে থাকবে। তিনি আরও বলেন, খালগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরা ছিল। পানিপ্রবাহ ছিল না। বর্ষায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। এছাড়া খালে জমে থাকা ময়লা পানি থেকে কোটি কোটি মশা জন্মাত। এখন এসব মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে করপোরেশনের প্রকৌশল দফতর সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাইয়ে ডিএনসিসির ১৮টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়নে চার হাজার ২৫ কোটি ৬১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পের মধ্যে ১৩টি খালের পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে ২৯ দশমিক ২৮ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। এসব খালের উভয় পাশে হাঁটাচলার পথ ও বাইসাইকেল লেন হবে ৫৮ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে উত্তরখানে খাল সংস্কার হবে শূন্য দশমিক ৮২ কিলোমিটার, দক্ষিণখানে ৩ দশমিক ৬২ কিলোমিটার, ডুমনিতে ৫ দশমিক ২১ কিলোমিটার, বাড্ডায় ৬ দশমিক ৪২ কিলোমিটার, বেরাইদে ৯ দশমিক ২১ কিলোমিটার, ভাটারায় এক দশমিক ৮২ কিলোমিটার এবং সাঁতারকুলে খাল সংস্কার হবে ৫ দশমিক ২১ কিলোমিটার। ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। এ প্রকল্পের সমীক্ষা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্কিম নির্বাচন, নকশা প্রণয়ন, ডিপিপি প্রণয়নসহ সামগ্রিক কাজ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)। এ প্রতিষ্ঠানটি খালের উন্নয়নে হাতিরঝিলকে মডেল হিসেবে নিয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি। সার্বিক বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম বলেন, খালগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে নকশা তৈরির কাজ চলছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শিগগির এর কার্যক্রম শুরু হবে। |