শিরোনাম: |
ইউটিউবে গান প্রকাশে ঝুঁকে পড়েছেন শিল্পীরাও
|
বিনোদন প্রতিবেদক : প্রায় দু’বছর ধরে অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে সিডি মাধ্যম অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। এই সময়টায় সিডি প্রকাশের সংখ্যা নেমে এসেছে একেবারে শূন্যের কোঠায়। শিল্পীদের উদ্যোগে হাতেগোনা কিছু সিডি এ সময় প্রকাশ হয়েছে। ২০১৬ সালটা ছিল সিডি মাধ্যমের জায়গায় ডিজিটালি গান প্রকাশের একটি যুগান্তকারী বছর। এ সময় সর্বোচ্চ সংখ্যক গান ইউটিউবে প্রকাশ হয়। অডিও-ভিডিও প্রকাশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে ওঠে ইউটিউব। এদিকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পীরাও ইউটিউবে গান প্রকাশের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যার ফলে সিডি প্রকাশ অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। তার আগের বছর উল্লেখযোগ্য হারে বন্ধ হয়ে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানের সিডির দোকান। আর এখনতো দেশের প্রায় ৯০ ভাগ সিডির দোকানই বন্ধ। এদিকে ২০১৭-তে সিডি প্রকাশ একেবারেই বন্ধ করে দেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের দাবি, সিডির দোকানই নেই, সিডি করে কি হবে! সিডি প্রকাশ পুরোটাই লস প্রজেক্ট। অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় শিল্পীরাও ইউটিউবে গান প্রকাশেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। কারণ এতে শ্রোতাদের সাড়া সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায় এই মাধ্যম থেকে। অন্যদিকে সিনিয়র অনেক শিল্পীর সঙ্গেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিনের। আর সে কারণে কোম্পানির কাছে গান না দিয়ে সিনিয়র অনেক শিল্পীও ইউটিউবে গান প্রকাশমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন। তবে গান ইউটিউবে প্রকাশের বিষয়টি কতটুকু নিরাপদ সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ সিডির মাধ্যমে গান বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ সংরক্ষণ করা যায়। সেখানে হঠাত্ করেই অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেল লাখ লাখ ভিউয়ের গানসহ বন্ধ হয়ে যেতেও দেখা গেছে। সেই চ্যানেল অনেক ক্ষেত্রে পুনরুদ্ধার করাও সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশে গুগুল এবং ইউটিউবের অফিস নেই বলে তাত্ক্ষণিভাবে এসব বিষয়ে অভিযোগ করাও তেমন একটা যায় না। পড়ে যেতে হয় দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে। যদিও এখন বেশিরভাগ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দাবি তাদের ইউটিউব চ্যানেল সম্পূর্ণ নিরাপদ। কিন্তু তারপরও ইউটিউবের পাশাপাশি গান সংরক্ষণের জন্য সিডি করার প্রতিও মত প্রকাশ করেছেন বেশ ক’জন স্বনামধন্য শিল্পী। তাছাড়া একটি গান না করে কয়েকটি গান নিয়ে অ্যালবাম করার প্রতি মত দিয়েছেন তারা। কারণ একটি অ্যালবামে একজন শিল্পী বেশ কিছু গান করেন বলে নিজেকে ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রকাশের সুযোগ থাকে। কিন্তু সিঙ্গেল করতে হয় সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক। তার ওপর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানেরও চাওয়া থাকে বাণিজ্যিক গানের। এর কারণে গুণী শিল্পীরা বিভিন্ন গানে নিজেদের প্রকাশও করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ফাহমিদা নবী বলেন, আমি সব সময় প্রযুক্তির পক্ষে। ইউটিউবে গান প্রকাশ হোক। এতে আমার আপত্তি নেই। বরং ভালো। সহজে মানুষ গান শুনতে পারছে। কিন্তু গান সংরক্ষণের জন্য অন্তত সিডি করা প্রয়োজন বলেও আমি মনে করি। আর আমি চাই পূর্ণ অ্যালবামও প্রকাশ হোক। কারণ, একটি গানে একজন শিল্পী নিজেকে নানাভাবে মেলে ধরতে পারেন না। কয়েকটি গান একটি অ্যালবামে থাকলে সেটা সম্ভব হয়। এ বিষয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী শুভ্রদেব বলেন, এটা প্রযুক্তির যুগ। এটাকে মেনে নিতেই হবে। কিন্তু আমি ফিজিক্যাল সিডিরও পক্ষে। কারণ সিডির আবেদন কখনও ইউটিউব পূরণ করতে পারবে না। তাই আমিও চাই ইউটিউবের পাশাপাশি সিডিও প্রকাশ হোক। এ বিষয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী তাহসান বলেন, আমার সিঙ্গেল প্রকাশ হচ্ছে। দ্বৈতগান প্রকাশ হচ্ছে। পাশাপাশি সিডিও প্রকাশ হয়েছে গত বছর। পরিপূর্ণ একক অ্যালবাম যাকে বলে। অ্যালবামের দরকার আছে। সংরক্ষণতো বটেই। পাশাপাশি একজন শিল্পী কখনো একটি গানে নিজেকে নানাভাবে প্রকাশ করতে পারে না। এটা সম্ভব নয়। একজন শিল্পীর গায়কীটা ফুটে উঠে একক অ্যালবামের ৮-১০টি গানে। সুতরাং, সিঙ্গেলের পাশাপাশি একক অ্যালবাম প্রকাশের রীতিটাও থাকুক আমি সেটা চাই। তাহলে ক্রিয়েটিভিটি, গানের বৈচিত্র্য এগুলো কমে যাবে। যেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো নয়। |