শিরোনাম: |
শীতে ত্বকের যত্নে ড. ল্যাম্বের কিছু পরামর্শ
|
ত্বকের যত্ন নিতে হয় সারা বছরই। তবে শীতের সময়ে খুব সহজেই ত্বকের ক্ষতি হয় বলে যত্নটাও নিতে হয় বেশী। মুখ ছাড়াও সারা শরীরের ত্বক এ সময়ে হয় পড়ে রুক্ষ। ত্বকের যত্নে কী করতে হবে, তা নিঃসন্দেহে সবচাইতে ভালো জানেন ডার্মাটোলজিস্টরা। মাউন্ট সিনাই হসপিটালে কর্মরত ড. অ্যাঞ্জেলা ল্যাম্ব অ্যাকনি, একজিমা এবং স্কিন ক্যান্সার শনাক্তের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ। ‘চিকিত্সা হলো এমন একটি শিল্প যা সততার সঙ্গে অনুশীলন করা উচিত,’ জানান তিনি। চলুন জেনে নিই শীতে ত্বকের যত্নে ড. ল্যাম্বের কিছু পরামর্শ- ১) ঘরে আর্দ্রতা বজায় রাখুন ড. ল্যাম্ব জানান, ত্বক হলো সেই সুরক্ষা প্রাচীর যা আমাদের শরীরের ভেতরে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে শুষ্ক এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ত্বক থেকে পানি দ্রুত শুকিয়ে যায়। এই শুষ্কতা এড়িয়ে চলা জন্য তিনি ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহারের পরামর্শ দেন। আপনি চাইলে একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তা বন্ধ ঘরে রাখতে পারেন, এতে ঘরের বাতাস আর্দ্র হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি তিনি পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবার পরামর্শ দেন। সাধারণত আপনি যতটা পানি পান করেন, শীতকালে তার চাইতে দুই গ্লাস পানি বেশি পান করার কথা বলেন তিনি। ২) কোমল প্রসাধনী ব্যবহার করুন ত্বকের জন্য কোমল কোন সাবান, ফেস ওয়াশ বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করার কথা বলেন ড. ল্যাম্ব। এতে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাবার ভয় থাকে না। মুখ ও শরীরের ত্বকের জন্য আলাদা আলাদা ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন। শুহু তাই নয়, এ সময়ে যদি আপনার ত্বকে ব্রণের উপদ্রব বেড়ে যায় তবে শুধুই পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে দেখতে পারেন। ৩) গরম পানিতে গোসল না করাই ভালো শীতের সময়ে গরম পানি ছাড়া গোসলের কথা ভাবাই যায় না! কিন্তু তা আপনার ত্বকের জন্য ভালো নয় মোটেই। গরম পানিতে গোসল করার পর খুব দ্রুত ত্বক থেকে এই পানি বাষ্প হয়ে চলে যায়। গোসলের পর খুব দ্রুত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার মাখতে না পারলে রুক্ষ হয়ে ফেটে যায় ত্বক। এই কারণে অনেকেরই ত্বকে চুলকানির সমস্যা দেখা যায়। আপনার যদি গরম পানি ছাড়া গোসল করতে ইচ্ছে না করে, তাহলে গোসলের পর দরজা বন্ধ রেখেই শরীর মুছে নিন এবং ময়েশ্চারাইজার মাখার পর বাথরুম থেকে বের হবো। এছাড়াও সেরামাইড এবং হায়ালুরনিক এসিড আছে এমন পণ্য ব্যবহার করতে পারেন ত্বকের যত্নে। ৪) ভারি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন শীতকালে ত্বক সুস্থ রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের বিকল্প নেই। গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতেই হবে, এর পাশাপাশি দিনে আরো একবার করে ময়েশ্চারাইজার মাখার পরামর্শ দেন ডঃ ল্যাম্ব। ক্রিম ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে ত্বকে তেল মেখে নিলে তা আর্দ্রতা বেশি সময় ধরে রাখতে সাহায্য করে। গোসলের আগে বডি অয়েল মেখে নেবার পক্ষপাতি তিনি। এ ক্ষেত্রে তার পছন্দ বিশুদ্ধ নারিকেল তেল। যাদের ত্বকে অ্যাকনির সমস্যা আছে তাদের আরগান অয়েল, টি ট্রি অয়েল, রোজ অয়েল, রোজ হিপ অয়েল- এ ধরনের অ্যাসেনশিয়াল অয়েলগুলো তাদের উপকারে আসতে পারে। ক্রিম, তবে শীতে ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে ভুল করেন অনেকেই। বেশিরভাগ মানুষ এ সময়ে লোশন ব্যবহার করেন। কিন্তু লোশন খুব একটা ভারী না হবার কারণে শীতে যথেষ্ট সুরক্ষা দিতে পারে না। এ সময়ে আপনার ব্যবহার করা দরকার ভারী কোনো ক্রিম বা বডি বাটার। ভ্যাসেলিনের মতো ভারী পণ্য অবশ্য মুখে ব্যবহার করা যাবে না, এগুলো রোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। এছাড়াও সুগন্ধীযুক্ত পণ্য এড়িয়ে চলাই ভালো এ সময়ে। ৫) ভেজা ত্বকে বাইরে যাবেন না গোসলের পরপরই অনেকে বাইরে বের হয়ে পড়েন। অথবা হাত ধুয়ে, ঘরের কাজ সেরেই বের হয়ে পড়েন। কিন্তু ভেজা ত্বক নিয়ে বাইরে গেলে ত্বক খুব দ্রুত শুষ্ক হয়ে যাবে। ঠোঁট চাটার কারণে যেভাবে ফাটে বেশি, সেই ব্যাপারটা এখানেও প্রযোজ্য। ত্বক ভালোভাবে শুকিয়ে এবং ময়েশ্চারাইজার মেখে তারপরেই বাইরে বের হন। ৬) এক্সফলিয়েট করা কমিয়ে দিন এই ব্যাপারটা অবশ্য সবার জন্য এক নয়। একেক রকম ত্বকের জন্য এক্সফলিয়েট করার নিয়মটা আলাদা হবে। আপনার ত্বক খুব বেশি শুষ্ক হয়ে গেলে শীতের মাঝে এক্সফলিয়েট না করাই ভালো। অন্য সময়ের চাইতে কমিয়ে দিনে এক্সফলিয়েট করা। সপ্তাহে একদিন স্ক্রাব ব্যবহার করাই যথেষ্ট এ সময়ে। - জীবনযাপন ডেস্ক |