শিরোনাম: |
ইরানে বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের হাতিয়ার
|
বর্তমান ডেস্ক : ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করছে যাতে করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করা যায়। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন। খবর আল জাজিরা। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে ইরান যা করছে তা বিশ্ব দেখছে। ইরানের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডেকেছিল যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের ওই বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইরান কী করে-না করে তার ওপর বিশ্ব চোখ রাখছে। তবে রাশিয়া ও অন্য কয়েকটি দেশ বলছে ইরানের এ আন্দোলন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোনো মাথাব্যথা নেই। রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের প্লাটফর্মের অপব্যবহার করছে। নেবেনজিয়া আরও বলেন, এভাবে জরুরি বৈঠক ডাকে ইরানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ মানবাধিকার রক্ষা করা বা ইরানি জনগণের স্বার্থ রক্ষার প্রচারণা নয় বরং ইরানের পরমাণু চুক্তি ক্ষতিগ্রস্ত করায় এর মূল উদ্দেশ্য। ইরানে প্রায় সপ্তাহব্যাপী চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই মূলত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক ডাকে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের আন্দোলনকারীদের প্রশংসাও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসন। মার্কিন দূত নিকি হ্যালি বলেছেন, সবার উচিত্ আন্দোলনকারীদের সাহসের প্রশংসা করা ও তাদের বার্তা ছড়িয়ে দেয়া। চলতি এ আন্দোলনকে মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট উল্লেখ করে বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়তে পারেন বলেও সতর্ক করেন তিনি। নিকি হ্যালি বলেন, ইরানকে নোটিস দেয়া হচ্ছে, তারা কী করবে তার ওপর বিশ্বের নজর থাকবে। তবে চীন এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতরা এ বিষয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। চলতি সপ্তাহে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে কমপক্ষে ২২ জন প্রাণ হারিয়েছে। অভ্যন্তরীণ এ বিক্ষোভের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এবং সৌদির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করছে ইরান। রাশিয়া ও ইরানের অভিযোগ একটি দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘকে টেনে আনছে যুক্তরাষ্ট্র। রুশ দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। ইরান তার নিজের সমস্যা নিজেই মোকাবেলা করবে। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলন থেকে শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, প্রায় ৪২ হাজার মানুষ প্রতিবাদ-আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। এর পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে রাস্তায় নামে সরকার সমর্থকরা। ইরানের বলছে, একজন সিআইএ কর্মকর্তাই এ আন্দোলনের পেছনে রয়েছেন। এদিকে, সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে প্রশংসামূলক টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে ২০০৯ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর ইরানে সামপ্রতিক এ বিক্ষোভ সমাবেশকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। জাতিসংঘে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বৈঠকের বিষয়ে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সইস দেলাতরে বলেন, ইরানের বিক্ষোভ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার বৈঠকের প্রয়োজন ছিল না। ইরানের রাষ্ট্রদূত গোলাম আলি খোসরু বলেছেন, ইরানের বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি আরও বলেন, দেশের বাইরের কোনো পক্ষ এ বিক্ষোভকে উসকে দিচ্ছে এমন জোরালো প্রমাণ ইরান সরকারের কাছে আছে। |