শিরোনাম: |
উলিপুরে বালু উত্তোলন করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে রেলপথ
|
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামের উলিপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৫ একর জমি জবরদখল করে মত্স্য খামার তৈরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলনের ফলে রেলের পাইলিং ভেঙে রেলপথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ট্রেন চলাচল হুমকির মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, পৌরসভার জোনাইডাঙ্গা গ্রামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রকাশ্যে রেলওয়ের প্রায় ৫ একর জমি জবর দখলে নিয়ে মত্স্য খামার, চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছেন। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি অবৈধভাবে জবর দখল করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দখল করা জায়গায় তৈরি করা জলাশয় থেকে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিক্রি করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এতে করে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি, রেলপথসহ পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় জোন লালমনিরহাটের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজসে রেলের জমি জবরদখল, বালু উত্তোলন করে মত্স্য খামার প্রকল্প তৈরিকরণসহ বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া, একইভাবে ইতিপূর্বে উলিপুর আনন্দবাজার থেকে চিলমারী উপজেলার রমনা রেলস্টেশন পর্যন্ত রেলপথের দুই ধারে শতশত একর জমি লিজ দেয়ার কথা বলে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট জোনের কর্মকর্তা-কর্মচারী চক্রটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জমি লিজ দেয়ার খপ্পরে পরে শতশত সাধারণ মানুষ সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে। অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজসে অবৈধ দখলদাররা রেলওয়ের দু’ধারের কিছু কিছু জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করে। ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রেলপথের দু’ধার ভেঙে যাচ্ছে। যার কারণে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের রেল দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। উলিপুর উপজেলা রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সভাপতি আপন আলমগীর জানান, আনন্দবাজার থেকে রমনা রেলস্টেশন পর্যন্ত রেলওয়ের দু’ধারে যে জল মহলগুলো আছে তা পুরোটাই রেলের জায়গায়। বর্তমান রেললাইনের দু’ধারে ২৫ ফুট থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত জমি রয়েছে। সেগুলো রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে লিজ নেয়ার নামে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে নিয়েছে। জল মহল ও পুকুরগুলো থেকে বালু উত্তোলনের কারণে রেলের পাইলিংগুলো ভেঙে পড়েছে। বারবার পাইলিং দেয়ার নামে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। তিনি এই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ ও রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এদিকে রেলওয়ের বিভাগীয় জোন লালমনিরহাটের ব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রামের উলিপুর-চিলমারী রেলপথের দু’ধারে কিছু লোক জমি দখল করে বালু উত্তোলন ও মাছ চাষ করার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবৈধ দখলদার ও বালু উত্তোলনকারী ভূমিদস্যু ফজলুল হকের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এসকে আবদুল্লাহ আল সাইদ জানান, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা রেজাউনুল হকের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। |