শিরোনাম: |
আওয়ামী লীগের হাত ধরেই গণতন্ত্রের বিজয়
|
বাহালুল মজনুন চুন্নূ : বহুকাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ, অভিযোজন, পরিমার্জনের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্র কাঠামো যে ব্যবস্থাকে জনগণের কল্যাণের জন্য সর্বোত্কৃষ্ট ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তা গণতন্ত্র। একমাত্র এই গণতন্ত্রই রাষ্ট্র কাঠামোকে সামষ্টিক জনকল্যাণের পথনির্দেশ করার মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই বিশ্বজুড়ে এখন চলেছে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা। আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে প্রাচীন গ্রীসে ক্লিসথেনিস, সলোন এবং পেরিক্লিস নামের তিনজন খ্যাতিমান আইনপ্রণেতা চেয়েছিলেন এমন একটি সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে যেখানে সব মানুষ হবে সমান। তাদের প্রচেষ্টার কারণেই গ্রীসে প্রথম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার গোড়াপত্তন ঘটে। তবে আমেরিকা ও ব্রিটেনের হাত ধরে এর বিস্তৃতি ঘটে। ব্রিটেনের পুরিটান নামক এক খ্রিস্টান সম্প্রদায় আমেরিকান কলোনির নিউ ইংল্যান্ডে যে স্থানীয় সরকার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছিল তা আমেরিকার গণতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আর ব্রিটেনে বিল অফ রাইটস পাসের পর নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র পাকাপোক্ত একটি ব্যবস্থা হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল। ব্রিটেনে গণতান্ত্রিক বিপ্লবকে টমাস হবস তার ‘লেভিয়াথান’ গ্রন্থে নৈরাজ্য হিসেবে দেখালেও আধুনিক গণতন্ত্রের জনক জনলক তা দেখেছেন সামন্ত শাসকদের অসুন্দর কদর্য দাসত্বনীতির বিরুদ্ধে মানবমুক্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা এবং জনগণের অধিকার আদায়ের লড়াই হিসেবে। সেই গণতান্ত্রিক বিপ্লব জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছিল। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্বের দেশে দেশে মানুষ প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে চলছে। সাম্রাজ্যবাদের বিলুপ্তি, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, ফ্যাসিবাদ, নািসবাদ, রাজতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রাম গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে গতিশীল করে তোলে। গত শতাব্দির সত্তরের দশক থেকে বিশ্বময় সূচিত হতে থাকে গণতন্ত্রের বিজয়। স্যামুয়েল হান্টিংটন দেশে দেশে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের উত্থানকে ‘গণতন্ত্রের ঢেউ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এর মূল কারণ কেবলমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাতেই রয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের অংশগ্রহণের সরাসরি সুযোগ এবং জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা। আব্র্রাহাম লিঙ্কন বলেছেন, গণতন্ত্র হলো জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন। অর্থাত্ জনগণকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় গণতন্ত্র। আধুনিক বিশ্বে গণতন্ত্র হচ্ছে সর্বোত্কৃষ্ট শাসনব্যবস্থা। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এসেছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার দল আওয়ামী লীগের হাত ধরে। স্বাধীন দেশ এবং তার মানচিত্রের সঙ্গে বাঙালি জাতিকে গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল হলো প্রধান অনুষঙ্গ তথা মূলভিত্তি। গণতন্ত্রচর্চার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের অপরিহার্য ভূমিকা আর প্রয়োজনীয়তা সর্বজনবিদিত। যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও বহুমাত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সামষ্টিকভাবে জনগণের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে থাকে। ইতািহাস বলে সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল প্রথমে গড়ে উঠেছিল আমেরিকায়। সে দেশের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি হলো বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল। এই দলটির মধ্যে আদর্শ রাজনৈতিক দলের প্রত্যেকটি উপাদান যথা সদস্যগণের একই মতাদর্শতা, সমনীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত হওয়া, জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ, দলীয় স্বার্থের প্রতি গুরুত্বারোপ, সদস্যগণের মধ্যে পরমসহিষ্ণুতা ও সহমর্মিতা, স্থায়ীত্ব, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতালাভের প্রচেষ্টা, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চর্চা ইত্যাদি বিদ্যমান। এই দলটির মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যেও আদর্শ রাজনৈতিক দলের প্রত্যেকটি উপাদান স্পষ্টত প্রতীয়মান। এডমন্ড বার্ক রাজনৈতিক দল সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দল হলো এমন এক জনগোষ্ঠী যারা কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নীতি সম্পর্কে ঐক্যমতে পৌঁছে সেগুলো এবং নিজেদের কর্মপ্রচেষ্টা দ্বারা জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করে। এই সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে বিএনপি-জামায়াতকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচনা করা যায় কিনা তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন এসে যায়। কেননা এরা দেশের স্বার্থ দেখে না। এরা দেখে পাকিস্তানের স্বার্থ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে যাচ্ছে সেই সৃষ্টি লগ্ন থেকে। আওয়ামী লীগের রয়েছে আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরব-উজ্জ্বল ঐতিহ্যে। আওয়ামী লীগ আদর্শে গণতান্ত্রিক, নীতিতে ধর্মনিরপেক্ষ, চেতনায় জাতীয়তাবাদী, মূল্যবোধে সমাজতান্ত্রিক। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র হচ্ছে আওয়ামী লীগের চার মূলনীতি যেগুলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান স্তম্ভ। বাংলাদেশের মানুষ আজন্ম গণতন্ত্রাকাঙ্খী। তাদের এই আকাঙ্ক্ষার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। আর এক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে আওয়ামী লীগ। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব বাংলার মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন-শোষণের স্টিম রোলার চালানো শুরু করে। আঘাত হানে বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর। মুসলিম লীগ বিরোধী কোনো কথা বললেই ‘শির কুচাল দেঙে’ কথাটা উচ্চারিত হতো। এমন অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে বাঙালি জাতি তাদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে ঢাকার কেএম দাশ লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আত্মপ্রকাশ ঘটায় পাকিস্তানের প্রথম বিরোধীদল আওয়ামী লীগের। তিন শ’ প্রতিনিধি নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুুসরণ করে মওলানা ভাসানীকে সভাপতি ও শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে ৪০ সদস্যবিশিষ্ট অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করা হয়। তত্কালীন সংগ্রামী যুবনেতা শেখ মুজিব কারাগারে থেকেই মাত্র ঊনত্রিশ বছর বয়সে দলের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের জন্মের মধ্যে দিয়ে সেদিন থেকে বাঙালির ভবিষ্যত্ স্বপ্নের জাল বোনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ‘আওয়াম’ শব্দের অর্থ জনগণ। আওয়ামী লীগ জনগণের লীগ তথা দল হিসেবে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এদেশের মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার, ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার, ধর্ম পালনের অধিকার এবং শোষণ-বঞ্চনা ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় দলটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। নিজেদের দলের অভ্যন্তরেও করতে থাকে গণতন্ত্রের চর্চা। ১৯৬৬ সালের ষষ্ঠ সম্মেলনে দলীয় কাউন্সিলররা বাঁচার দাবি ছয়দফার পক্ষে জোরালো সমর্থন দেন। সেই সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাজউদ্দীন আহমদ। এই সম্মেলন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতা হয়ে ওঠার পথ-পরিক্রমা। আইয়ুবের স্বৈরতান্ত্রিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়ান। অব্যাহত রাখেন গণতান্ত্রিক পথের অভিযাত্রা। কিন্তু পাকিস্তানি স্বৈরশাসন সেই পথরুদ্ধ করতে চাইলে তিনি ও তার দল আওয়ামী লীগ ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যান। অধ্যাপক লাস্কি বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতা হচ্ছে সেই সামাজিক পরিবেশ যাতে মানুষ নিজেদের পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করার সুযোগ লাভ করে এবং সেই পরিবেশ রক্ষাকল্পে অদম্য আগ্রহ প্রকাশ করে।’ কিন্তু বাঙালি জাতির মাঝে সেই সামাজিক পরিবেশ ছিল না। ছিল শুধু পরাধীনতার শেকল। সেই শেকল থেকে মুক্তির জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সেটা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই উপমহাদেশে উদার গণতন্ত্র চর্চা ও প্রতিষ্ঠার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারেন বঙ্গবন্ধু। তার গণতন্ত্র যদিও কিছুটা সমাজতন্ত্র ঘেঁষা, তবু এর মধ্যে উদারপন্থি গণতান্ত্রিক মতবাদের যথেষ্ট উপাদান আছে। বঙ্গবন্ধু সবসময়ই বলতেন, ‘গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার থাকা দরকার।’ তিনি সবসময় জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে ভাবতেন। সত্তরের নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি উদাত্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম চলবেই। কারণ, আমাদের মূল লক্ষ্যে এখনও আমরা পৌঁছাইনি। জনগণকে ক্ষমতা অর্জন করতেই হবে। মানুষের উপর মানুষের শোষণ, অঞ্চলের উপর অঞ্চলের শোষণের অবসান ঘটাতেই হবে।’ এই ঘোষণার ভেতর দিয়ে বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার কথাই বলেছিলেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগসহ সারাদেশের আপামর জনতা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একক নির্দেশনায় ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তত্পরতা এবং দেশের মানুষকে তাদের মন্ত্রে উজ্জীবিত করতে পারার কারণেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের জন্ম হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় গণতন্ত্র। আর এভাবেই শেখ মুজিবুর রহমান, গণতন্ত্র, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠে। স্বাধীন দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে যেতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় গণতন্ত্রকে। সংবিধানের এগারো নম্বর অনুুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যেও প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে।’ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতন্ত্র। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরেও গণতন্ত্রের চর্চা হতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক ছিল গণতন্ত্রকে টেকসই করার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কিন্তু দুর্ভাগ্য এক শ্রেণির দুষ্টচক্র এর ভুল ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের হীন প্রয়াস চালায়। পচাত্তরের পনেরই আগস্ট জাতির পিতার হত্যার মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরা হয়েছিল। গণতন্ত্রের পরিবর্তে সামরিক শাসনের যাঁতাকলে দেশে বিরাজ করছিল অরাজক সামরিকতন্ত্র। মহান স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রে দীপ্ত আওয়ামী লীগকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র চলে। কিন্তু সাধারণ মানুষের বিপুল সমর্থনে মহীরুহ হয়ে ওঠা আওয়ামী লীগকে কোনো ষড়যন্ত্র টলাতে পারেনি। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের ১৩তম সম্মেলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে দলের সভানেত্রী নির্বাচন করা হয়। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেন বঙ্গবন্ধুকে ফিরে পেয়েছিল। তিনি দেশে ফিরে এসে দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকেই কেবল পুনরুজ্জীবিত করেননি, গণতন্ত্র পুুনরুদ্ধারের সংগ্রামকেও এগিয়ে নিয়ে গেছেন দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে। তার নেতৃত্বে সমগ্র এশিয়ার ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা যেমন সফল ঠিক তেমনি তিনি সফল দলীয় সভানেত্রী হিসেবেও। ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কূটকৌশলে বারবার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা সকল বাধা-বিঘ্নকে উপেক্ষা করে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়ে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যেমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের বিষফোঁড়াকে কেটে ফেলে দেশকে অগণতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আগামীতেও আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার মাধ্যেমে নিজেদের ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেই প্রত্যাশাই রইল। লেখক: সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। |