শিরোনাম: |
গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে...
|
চলছে ফলের মাস জ্যৈষ্ঠ মাস। সেইসঙ্গে প্রচণ্ড গরমও পড়েছে চারপাশে। সূর্যের প্রখর দাবদাহে দিনে ঘর থেকে যেন বের হতেই মন চায় না। বাইরের ধুলোবালি আর রোদ এক নিমিষেই শরীরকে দুর্বল করে দেয়। তবে উপায় নেই, কাজের জন্য তো বের হতেই হয়। এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করে লাভ কী। বরং জেনে নেই এই সময় কী ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। তাই আসুন জেনে নেই শরীর সুস্থ রাখতে কোন ফল কী কাজ করে-
তরমুজ প্রচুর ওয়াটার বা পানি থাকায় এর নাম ওয়াটার মেলন। ভিটামিন অ, ভিটামিন ঈ, পটাশিয়াম এবং জিঙ্কের উত্কৃষ্ট উত্স। সকালে ব্রেকফাস্টের মেনুতে তরমুজ থাকলে তা স্নায়ু ও পেশির কার্যে সাহায্য করার সঙ্গে সঙ্গে ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এতে বাচ্চাদের চোখ এবং হাড় ভালো থাকে; বড়দের হার্টের সমস্যা দূর হয়। সূর্য রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে বাঁচাতে তরমুজের জুড়ি নেই। তরমুজের বীজ খেলে অনিন্দ্রা দূর হয়, চুল ও ত্বক ভালো থাকে। আম গরমে এনার্জি ধরে রাখতে আম খাওয়া খুবই ভালো। প্রতি ১০০ গ্রাম আম থেকে প্রায় ৬০ ক্যালরি এনার্জি পাওয়া যায়। বাচ্চাদের আম খাওয়ালে তাদের দেহে ভিটামিন A, C, K এবং B কমপ্লেক্সের চাহিদা পূরণ হয়। এছাড়া আম থেকে ডায়েটারি ফাইবার পাওয়া যায়। কাঁচা আম সেদ্ধ পানি, লবন ও চিনি মিশিয়ে খেলে গরমে ডি হাইড্রেশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ঘামাচি দূর করতেও এই পানীয় খুব উপকারী। ছোট এক টুকরো কাঁচা আম মধুসহ খেয়ে দেখুন, গরমে হজমের সমস্যা কম থাকবে। গরমে যাদের সানবার্ন হচ্ছে তাদের ম্যাঙ্গো ফ্রুট পাল্প লাগালে উপকৃত হবেন। ডাব গরমের নানা রোগের মধ্যে ডায়েরিয়া, ডি হাইড্রেশন, সানস্ট্রোক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই সব সমস্যায় ডাবের পানি আদর্শ। এতে এনার্জি বাড়ে এবং দেহে মিনারেলস-এর ভারসাম্য বজায় থাকে। দেহের তাপ বিকিরণ করে ডাবের পানি দেহ শীতল করে। গরমে হিট কমাতে ডাবের পানি লাগানো যেতে পারে। ডাবের পানিতে থাকে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট যা দেহের তারুণ্য বজায় রাখে। গরমে অনেকেরই ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হয়। তারা ডাবের পানি পান করলে সুস্থ থাকবেন (কারণ এই পানীয় ব্যাকটিরিয়ায় বৃদ্ধি প্রতিহত করে এবং মূত্র উত্পাদনের পরিমাণ বাড়ায়)। গর্ভবতী মায়েরা প্রতিদিন ডাবের পানি খেতে পারেন এতে গরমে ক্লান্তিভাব দূর হবে ও গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধিও ভালো হবে। শসা যাদের রোদে বেরতে হবেই তাদের জন্য শসার অত্যন্ত ভালো। অনেকে পানি কম খান। নিয়মিত শসা খেলে পানির ঘাটতি পূরণ হবে। এতে পানির ভাগ ৯৬ শতাংশ, তাই ওজন বাড়ার কোনো চান্স নেই। শসা থেকে ভিটামিন A,B,C ছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম এবং সিলিকন পাওয়া যায়। যারা হাইপার টেনশনে ভুগছেন নিয়মিত শসা খান, কেন না এতে কোলেস্টেরল এবং ব্লাড প্রেশার কমে। গরমে দেহকে ডিটক্সিফাই করে এবং চুল ভালো রাখে। পেয়ারা গ্রীষ্মের অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অপেক্ষাকৃত সস্তা ফল। এতে অতিমাত্রায় ভিটামিন C পাওয়া যায়। এই ফলে সোডিয়াম থাকে না কিন্তু পটাশিয়াম থাকে। এতে প্রায় ৪০ শতাংশ জলীয় পদার্থ থাকায় গরমের অত্যন্ত উপযোগী ফল। এতে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকায় গরমে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস এবং হাইপার টেনশনে কাঁচা পেয়ারা খাওয়া ভালো। এতে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরোলের মাত্রা কমে। নিয়মিত পেয়ারা খেলে চোখ ভালো থাকে এবং ক্যাটারাক্ট, ম্যাকুলার ডিজেসারেশনের সম্ভাবনা থাকে। এতে কপার থাকায় থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্ষমতা বাড়ায়। পেয়ারাতে থাকা ফাইবার কনস্টিপেশন দূর করে এবং ওজন হ্রাস কররতে সাহায্য করে। আঙুর গরমকালে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় শুধু ফল হিসেবে খাওয়া যায় আবার ফ্রুট কাস্টার্ডে খেতেও ভালো লাগে। গরমে এনার্জি বাড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে এর জুড়ি নেই। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, দাগ ছোপ কমিয়ে তীব্র গরমেও ত্বককে তরতাজা রাখে। গরমে ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। মুখের অরুচি, দুর্গন্ধ দূর করতেও এর জুড়ি নেই। এছাড়াও জেনে রাখুন জামের রস রোজ খেলে পাইলসের সমস্যা কমে। এই রসে সামান্য নুন দিয়ে খেলে সহজে ডায়েরিয়া হবে না। জামের সঙ্গে টকদই খেলে ভালো হজম হয়। যারা রোগা হতে চান, দিনের যে কোনো একটা মিলে নিন ফ্রুট স্যালাড। যারা স্পোর্টস বা অন্য কোনো শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করছেন শর্ট ব্রেকের সময় ডাবের পানি খেয়ে দেখুন, অনেক এনার্জি পাবেন। ৪. মিষ্টি কুমড়ার বীচি ইউনিভার্সিটি অফ ম্যারিল্যান্ড সেন্টার মিষ্টি কুমড়ার বীচি পেটের কৃমি দূর করতে বেশ কার্যকরী। দুই টেবিল চামচ মিষ্টি কুমড়ার বীচির গুঁড়ো তিন কাপ পানিতে ৩০ মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন। সকালে খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এছাড়া এক টেবিল চামচ মিষ্টি কুমড়ার বীচির গুঁড়োর সঙ্গে সমপরিমাণের মধু মিশিয়ে নিন। খালি পেটে এটি খান। তারপর নাস্তায় একটি কলা খেতে পারেন। ৫. নিম এক টেবিল চামচ নিমের ফুল এবং এক চা চামচ গলানো মাখন বা ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এটি ভাতের সঙ্গে খান। টানা চারদিন এটি খান। এছাড়া এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ বা পানি এক চা চামচ নিমের গুঁড়া মিশিয়ে পান করুন এটি দিনে দুইবার করে এক সপ্তাহে পান করুন। গর্ভবতী নারীরা নিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ৬. গাজর দুটি গাজর কুচি করে নিন। এটি প্রতিদিন খালি পেটে খান। অন্য খাবার সকালে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এটি প্রতিদিন খান। কিছুদিনের মধ্যে কৃমি কমে যাবে। গাজরের বিটা ক্যারটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং জিঙ্ক আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পেটের কৃমি মেরে ফেলে। ৭. লবঙ্গ এক চা চামচ লবঙ্গের গুঁড়া এক কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে নিন। এটি কিছুটা ঠাণ্ডা হয়ে এলে পান করুন। এটি সপ্তাহে তিন বার পান করুন। লবঙ্গ অ্যান্টি সেপটিক, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি প্যারাসাইটিক। এটি পেটে কৃমির ডিম এবং কৃমি ধ্বংস করে দেয়। - স্বাস্থ্যকথন ডেস্ক |