শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো করার প্রত্যয় মাশরাফির
একদিন আমাকেও ওয়ানডে থেকে অবসর নিতে হবে
Published : Tuesday, 25 April, 2017 at 6:00 AM, Count : 768

ক্রীড়া প্রতিবেদক : লম্বা সফর। বিরুদ্ধ কন্ডিশন। শক্ত প্রতিপক্ষ। ক্রিকেটীয় স্কিলের পরীক্ষা, শারীরিক সামর্থ্যেরও। তবে মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা মানসিক। তার কাছে যেটি যুদ্ধের মতো। সেই যুদ্ধ জয়ের মন্ত্রও জানা আছে অধিনায়কের। থাকতে হবে পরিবারের মতো। জিততে হবে ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে হঠাত্ করে অবসর নেয়া মাশরাফি ওয়ানডেতে একদিন আমাকেও অবসর নিতে হবে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য সবার আগে ইংল্যান্ডে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। আজ বুধবার রাতেই দেশ ছাড়বে দল। সাসেক্সে প্রস্তুতি ক্যাম্প দিন দশেকের। সেখান থেকে ৭ মে দল যাবে আয়ারল্যান্ডে। খেলবে ত্রিদেশীয় সিরিজে। এরপর জুনের শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের সফর।
গতকাল মঙ্গলবার সফরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বললেন প্রত্যাশা, সম্ভাবনা নিয়ে। জোর দিলেন মানসিক প্রস্তুতিতে।
‘আমরা কীভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিব, সেটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। পুরো দলেরই যেটা থাকা উচিত, সেটা হলো মানসিকভাবে দ্রুত প্রস্তুত হওয়া। যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত না হতে পারি, তাহলে ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্পও তেমন একটা কাজে দিবে না।’ ‘আমার কাছে মনে হয় না, ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব। তবে যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারি, তাহলে অনেক দূর এগোতে পারব। এখানে মানসিক যুদ্ধটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় দলের বিপক্ষে তাদের কন্ডিশনে খেলা; কিছুটা শীত থাকবে, গ্রীষ্মের শুরু যেহেতু। কাজটা সহজ হবে না। ওরা যতটা সহজে পারবে, আমাদের তার চেয়ে দুই গুণ বেশি কষ্ট হবে। সুতরাং আমরা যদি সুস্থ থাকি এবং লড়াইয়ের মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারি, তাহলে আশা করি, ভালো খেলা হবে।’
মানসিক প্রস্তুতি যেমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জও। অতীত অভিজ্ঞতা বলে, শঙ্কার কারণ আছে যথেষ্টই। বিশেষ করে এরকম লম্বা সফরে। লম্বা সফরের শেষ দিকে মানসিক ক্লান্তি ও শ্রান্তি পেয়ে বসে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। মাঠে চেয়ে বেশি টানে দেশ, বাড়ি। এবার কাজটা আরও কঠিন। কারণ মূল লক্ষ্য যেটি, সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই থাকবে শেষ দিকে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এক মাসের বেশি হয়ে যাবে বাংলাদেশের সফর!
শঙ্কা যে আছে, সেটি স্বীকার করে নিচ্ছেন মাশরাফিও। তবে সেটিকে জয় করার পথটাও তার জানা। অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে ২০১৫ বিশ্বকাপের সাফল্যকে।
‘একটা ভয় থাকে, সফরের শেষের দিকে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাই। আগের ইতিহাস বলে, শেষের দিকে এমন হয়েছে, একটা সেশন খুব ভালো খেলে পরের সেশনটা খুব খারাপ হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আমরা পুরো টুর্নামেন্ট ভালো খেলতে পেরেছিলাম। জয়ের ভেতরে ছিলাম, পয়েন্ট টেবিলে এমন একটা অবস্থায় ছিলাম যে কোয়ার্টারে ওঠার উত্তেজনা ছিল। ক্লান্তি তাই সেভাবে আসেনি। আমার মনে হয়, শুরুর জয়গুলো এই ক্লান্তির ব্যাপারটা দূর করতে পারে। এবার যেটা আয়ারল্যান্ডে করতে পারি। জয়ের ভেতরে থাকলে ভেতরের অনুভূতি খুব ভালো থাকে।’
‘আরেকটা ব্যাপার, দলে এক সঙ্গে ১৭-১৮ জন থাকবে, তাদের এক সঙ্গে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সব সময় সবার সময় মসৃণ যাবে না। তবু সবাইকে এক সঙ্গে থাকতে হবে। বিশেষ করে যাদের খারাপ সময় যাবে, তাদেরকে দলের অংশ করে রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের মতো থাকতে হবে। এই দুই ব্যাপার হয়ত আমরা করতে পারি।’
মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাফল্যের মূল মন্ত্রই ছিল দলীয় ঐক্য। এবার মাশরাফির নেতৃত্বের আরও একটি পরীক্ষা। অধিনায়ক মাশরাফি জিতলে, জিতে যাবে বাংলাদেশও! শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠ নামার ঠিক আগ মুহূর্তে হঠাত্ই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এরপর এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে যাওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনেও ঘুরে ফিরে এল সে প্রসঙ্গ। তবে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে অধিনায়ক জানান, একদিন ওয়ানডে থেকেও আমাকে সরে যেতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফির লক্ষ্য জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার অধিনায়ক হিসেবে আলাদা করে তেমন কোনো লক্ষ্য নেই। এখান থেকে আলাদা করে চাপ নেয়ারও কিছু নেই। তবে এটা জানি একদিন ওয়ানডে থেকেও আমাকে অবসর নিতে হবে।’
ব্যক্তিগত লক্ষ্য না থাকলেও দলগত লক্ষ্যের কথা জানান মাশরাফি, ‘পুরো দলেরই যেটা থাকা উচিত, সেটা হলো মানসিকভাবে দ্রুত তৈরি হওয়া। আমার কাছে মনে হয় না ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব। আমরা যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারি, তাহলে আমরা অনেক দূর এগোতে পারবো। এখানে মানসিক যুদ্ধটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় দলের বিপক্ষে তাদের কন্ডিশনে খেলা; কিছুটা শীত থাকবে, গ্রীষ্মের শুরু যেহেতু। কাজটা সহজ হবে না। ওরা যতোটা সহজে পারবে, আমাদের তার চেয়ে দুই গুণ বেশি কষ্ট হবে। বিশেষ করে কন্ডিশনের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে চাইলে। সুতরাং আমার কাছে মনে হয়, আমরা যদি সুস্থ থাকি এবং লড়াইয়ের মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারি, তাহলে আশা করি ভালো খেলা হবে।’ উল্লেখ্য, আজ রাতেই সাসেক্সের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে বাংলাদেশ দল। সেখানে ১০ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শেষে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাবে টাইগাররা। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মাঠে নামবে মাশরাফি-সাকিবরা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft