শিরোনাম: |
প্রতিবাদকারীদের গুলিবর্ষণ
ফিলিস্তিনি বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সেটেলাররা
|
বর্তমান ডেস্ক : ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূমি পশ্চিমতীরবাসীর ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা। ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে আবারও পশ্চিমতীরের উত্তরাঞ্চলে অবৈধ বসতি স্থাপনের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। ভূমি রক্ষার লড়াইয়ে নামা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে জোরপূর্বক অবৈধ বসতি স্থাপনকে বৈধতা দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এই খবর জানিয়েছে। পশ্চিমতীরের উত্তরাঞ্চলীয় শহর নাবলাসের খানিকটা দক্ষিণ দিকের একটি গ্রামে ভূমি রক্ষার লড়াইয়ে সামিল হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরাইলি বাহিনী। মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়েছে, সে সময় রাবার বুলেট ছুঁড়ে অন্তত ৪ ফিলিস্তিনিকে আহত করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর কিছু সময় পরে দুই ফিলিস্তিনিকে হাসপাতালে নেয়া হয়। পশ্চিমতীরের উত্তরাঞ্চলে অবৈধ বসতি সংক্রান্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন ঘাসান ডাগলাস নামের একজন কর্মকর্তা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেয়া তার বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, উরিফ নামের ওই গ্রামে তাণ্ডব চালিয়েছে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা। প্রায় ১০০ জন উগ্র অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ওই গ্রামে ঢুকে ফিলিস্তিনি বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়। জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায় ফিলিস্তিনিদের। স্থানীয় এক ফেসবুক গ্রুপকে উদ্ধৃত করে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের তাণ্ডবের এক পর্যায়ে স্থানীয় মসজিদের মসজিদ ব্যবহার করে দখলদারি প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়। সে সময় পশ্চিমতীরে বাসকারী শত শত ফিলিস্তিনি ভূমিরক্ষার অঙ্গীকারে সামিল হন। বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হলে সেখানে প্রবেশ করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। ইহুদি তাণ্ডবকারীদের রক্ষায় এগিয়ে যান ইসরাইলি সেনারা। অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের রক্ষায় বারাট বুলেট ছুঁড়ে প্রতিবাদী ফিলিস্তিনিদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে ইসরাইলি বাহিনী। সে সময় অন্তত চারজন আহত হন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিনে অভিবাসন এবং বসতি স্থাপন অবৈধ। ২০ বছরের বিরতি শেষে সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিমতীরে নতুন বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিপরিষদ। পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতি কমিয়ে আনতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ওয়াশিংটনের মধ্যে যখন আলোচনা চলাকালেই বসতি সম্প্রসারণের এ বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয় ইসরাইল। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নতুন অবৈধ বসতি অনুমোদনের নিন্দা জানিয়ে আবারও ইসরাইলকে শান্তির পথে বাধা হিসেবে শনাক্ত করেছে জাতিসংঘ। বসতি স্থাপনের পদক্ষেপকে মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা’ হিসেবে শনাক্ত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ১৯৯০ এর দশকের শুরু থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরাইল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ১শরও বেশি বসতি স্থাপন করেছে ইসরাইল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত প্রায় ১৪০টি বসতিতে ৬ লাখেরও ইসরাইলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও তা মানতে নারাজ ইসরাইল। তবে গত বছর ডিসেম্বরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে এক প্রস্তাব পাস হয়। ওবামা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নেই। ’
|