শিরোনাম: |
ফুলছড়িতে বালু দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত!
|
গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশে মাটির বদলে বালু দিয়ে মেরামত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার নিয়ম অনুসরণ করছেন না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাউবোর দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও কার্য সহকারীদের নির্দেশনাও মানছে না। এতে শ্রমজীবী মানুষ কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অপরদিকে পানির চাপে বাঁধটি আবারও ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে বন্যার পানির চাপে ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৮০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। চলতি বছরের গত ১০ এপ্রিল ভেঙে যাওয়া অংশে সংস্কার কাজ শুরু হয়। আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবার কথা। এই কাজে এক কোটি ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮৮ টাকা ব্যয় ধরা হয়। ফেনী জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের দায়িত্ব পায়। ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। নীতিমালা অনুযায়ী বাঁধ সংস্কার কাজে ৩০ ভাগ কাঁদামাটি, ৪০ ভাগ পলি এবং ৩০ ভাগ বালু দিয়ে ভেঙে যাওয়া অংশ ভরাট করার কথা। শুধু তাই নয়, শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ভরাট করার কথা। এ ছাড়া বাঁধটি মজবুত করতে ভেঙে যাওয়া অংশ ভরাট করার পর দুইপাশে সিমেন্টের বস্তা দেয়ার কথা। গত বুধবার দুপুরে সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সরেজমিন দেখা গেছে, কোনো শ্রমিক নেই। দুটি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু কাটা হচ্ছে। সেই বালু একটি চেইনড্রোজার মেশিন দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ফেলা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাউবোর এক ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী পরিবর্তন হওয়ায় নতুন যোগদানকারী নির্বাহী প্রকৌশলী তেমন একটা প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করছেন না। সিংড়িয়া বাজার এলাকার এক শিক্ষক জানান, গতবছর বন্যার সময় বাঁধটিতে গর্ত দেখা দেয়। বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো গুরুত্ব দেয়নি। ফলে গত বছরের আগস্ট মাসে বাঁধটি ভেঙে ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এতে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এবার সেই বাঁধ বালু দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বাঁধটি আবারও ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বাঁধটি গতবছর প্রবল পানির চাপে ভেঙে যায়। এবার বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসবে না। শুধু সরকারের টাকা অপচয় হবে। শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও সেটাও করা হচ্ছে না। এসব বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রহমান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী জুয়েল মিয়া মুঠোফোনে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড যেভাবে কাজ করতে বলেছে, সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে। গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, সামনে বর্ষাকাল আসছে। শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ভরাট করতে দীর্ঘসময় লাগবে। তাই ঠিকাদারকে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। |