শিরোনাম: |
স্বর্গের ফুল পারিজাত!
|
সবুজ পৃথিবী প্রতিবেদক : চলছে বসন্তকাল। প্রকৃতি নতুন রূপ ধারণের সঙ্গে সঙ্গে খুলে দিয়েছে তার দখিনা দুয়ার। সে দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। বসন্তের আগমনে কোকিল গান গাইছে। ভ্রমরও করছে খেলা।
গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে মৌ মৌ সুবাস ভেসে বেড়াচ্ছে আকাশে-বাতাশে। পলাশ-শিমুল এখন নিজেকে মেলে ধরেছে। পিছিয়ে নেই কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, চাঁপা, অশোকসহ নাম জানা না জানা হাজারো ফুল। এমনই একটি ফুলের নাম পারিজাত। তবে অঞ্চল ভেদে এর নাম ভিন্ন। কেউ বলেন, পালতে মাদার, কেউ বলেন মাদার, পানসে মান্দার, রক্ত মান্দার বা মন্দার। অনেকেই এই গাছকে চিনলেও এই ফুলের নাম যে পারিজাত তা জানেন না। অযত্ন অবহেলায় বেড়ে ওঠা এ ফুলের গাছটি সারা বছর ঘুমিয়ে থাকলেও ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুন হয়ে জেগে ওঠে। শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় এই গাছ বেশি দেখা যায়। ‘পারিজাতের কেশর নিয়ে/ ধরায় শশী ছড়ায় কি এ/ ইন্দ্রপুরীর কোন রমণী/ বাসর প্রদীপ জ্বালো’- উদয়ের পথে ছায়াছবিতে পারিজাত নিয়ে রবীন্দ্রনাথের এই গান মানুষের মনে আজও দোলা দেয়। পরিজাত এক ধরনের মাঝারি আকারের দেশি গাছ। গায়ে কাঁটা থাকে। পত্রমোচী। বসন্তে ফুল ফোটে। মঞ্জুরিতে অনেক ফুল থাকে। ফুলগুলো দেখতে অনেকটা শিমুল ফুলের মতো। তবে টকটকে লাল রঙের ফুলের অগ্রভাগ দেখতে বকের ঠোঁটের মতো বাঁকানো। ফুল ১০ সেন্টিমিটার লম্বা। বীজ থেকে সহজেই চারা জন্মে পারিজাতের। ডাল কেটে লাগালেও বাঁচে। মাঝারি আকারের এই গাছটি সাধারণত ১৫ মিটারের মতো উঁচু হতে দেখা যায়। গাছের গায়ে কালো কালো গোটাগোটা কাঁটা থাকে। অনেক সময় গাছের গোড়ার দিকের কাঁটাগুলো গাছ বড় হলে ঝরে যেতে দেখা যায়। গাছের পাতা ঝরে যায় ফুল ফোটার সময় হলেই। পাতাহীন গাছে ফোটে টকটকে লাল পরিজাত। পৌরাণিক কাহিনী থেকে জানা যায় মান্দার স্বর্গের ফুল, মর্ত্যের রাজা শ্রীকৃষ্ণ স্বর্গের রাজা ইন্দ্রের কাছ থেকে অনেকটা জোরজবরদস্তি করেই এই পরিজাতকে তার মর্ত্যের বাগানে এনে লাগান। এ কারণেই একে স্বর্গের ফুল বলা হয়ে থাকে। |