বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
নদী দূষণ: অস্তিত্ব সঙ্কটে ঢাকার পরিবেশ
Published : Wednesday, 15 March, 2017 at 6:00 AM, Count : 1281

মামুনুর রশীদ : বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষেই একদিন গড়ে উঠেছিল এই নগরী। এক সময় বুড়িগঙ্গার অপার সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে সবাইকে। কিন্তু কালক্রমে ঢাকা বিস্তৃত হলেও ক্ষয় হয়েছে বুড়িগঙ্গার। নাব্য হারিয়ে কমে গেছে পানির প্রবাহ। এখন বুড়িগঙ্গা পরিণত হয়েছে দূষণের নদীতে। আর পরিবেশের এই দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলোর প্রায় প্রতিটি মানুষের আক্রমণের শিকার। দখল, ভরাট, আবর্জনা নিক্ষেপ ইত্যাদির কারণে নদীগুলো তাদের গতি ও ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে। এগুলো স্রোতহীন হয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে।
ঢাকা ঘিরে থাকা চার নদী শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু ও বুড়িগঙ্গা প্রায় একই দশায় পড়েছে। এগুলোতে পানির চেয়ে বর্জ্যই বেশি। মাত্রাতিরিক্ত দূষণে এ নদীগুলোর পানি ও রং হারিয়ে ফেলেছে। বর্জ্যের মিশ্রণে নদীগুলোর পানি কালো, নীল বা লাল হয়ে গেছে। এ চার নদীকে সরকার ‘প্রতিবেশ সঙ্কটাপন্ন’ ঘোষণা করেছে। আর বিশ্বব্যাংক বুড়িগঙ্গাকে অভিহিত করেছে ‘মরা নদী’ নামে। চামড়া শিল্পের বর্জ্য বুড়িগঙ্গা নদীকে দুষিত করে চলেছে প্রতিনিয়ত। বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার জন্য যত কথাই বলা হোক, চামড়া শিল্পকে সম্পূর্ণভাবে হাজারীবাগ থেকে সরাতে না পারলে বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করা প্রায় অসম্ভব।  
বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যাসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো এতটাই দূষিত যে, এসব নদীর পানি এখন শোধনেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কেবল হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো থেকেই প্রতি মাসে গড়ে তিন হাজার টন কঠিন এবং আড়াই লাখ টন তরল বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় পড়ছে। নদীগুলোতে এক সময় প্রচুর মাছ ছিল। অথচ এখন শুধু মাছ নয়, কোনো জলজ প্রাণীই টিকে থাকতে পারছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাজারীবাগের ২০০ ট্যানারি থেকে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ টন কঠিন বর্জ্য এবং ২০ হাজার ঘনমিটার পানি প্রায় ত্রিশ ধরনের বিভিন্ন রাসায়নিকের মিশ্রণ নিয়ে দূষণ পদার্থ আকারে বের হচ্ছে এবং রাস্তার পার্শ্ববর্তী ড্রেনে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। হাজারীবাগের অপেক্ষাকৃত নিচু ভূমি এবং স্লুইস গেট পেরিয়ে গিয়ে সেগুলো পড়ছে বুড়িগঙ্গা নদীতে।
হাজারীবাগসহ পুরান ঢাকার বাতাস হাইড্রোজেন, সালফাইড, অ্যামোনিয়া, নাইট্রোজেন যৌগের গন্ধে ভারি হয়ে থাকে সবসময়। চামড়া রং করার কাজে ব্যবহূত রঞ্জকগুলোও মানবস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সদরঘাট এবং এর আশপাশের এলাকার দুই প্রান্তে অনেক দূর পর্যন্ত এখন নদীর পানি কালো ও দুর্গন্ধযুক্ত। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (বাবুবাজার) এলাকায় নদী দূষণের ভয়াবহ দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে নর্দমা হয়ে নদীতে যাচ্ছে ঘন ও তরল বর্জ্য। নৌযানে চলাচলের সময় বুড়িগঙ্গার পানির উত্কট গন্ধে নাকে-মুখে রুমালচাপা না দিয়ে চলার উপায় থাকছে না যাত্রীদের। সদরঘাটে বুড়িগঙ্গার পানি কুচকুচে কালো। হাজারীবাগে রক্তের মতো লাল। তুরাগের পানি কোথাও কালো, কোথাও গাঢ় নীল বর্ণ। টঙ্গীতে বালু নদের পানি ধূসর। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা শহর হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য এবং প্রায় সোয়াকোটি অধ্যুষিত এই শহরের মানুষগুলো রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে।
রাজধানীর ভেতরে-বাইরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ১৮টি ছোট-বড় নদী। এর সবই আজ বিপন্ন। সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে বলা হয় ঢাকার অভ্যন্তরের ৪৩টি খালের সীমানা খাতা কলমে থাকলেও বাস্তবে এদের অস্তিত্ব নেই। অন্যদিকে অস্তিত্ব বাঁচাতে লড়ছে বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা। একদিকে অবৈধ স্থাপনা, অন্যদিকে কলকারখানার দূষিত উপাদান ও সোয়াকোটি নগরবাসীর বর্জ্য নদীর মৃত্যু ঘটাচ্ছে।
নদী দূষণ কমাতে ৬ জানুয়ারি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ বর্জ্যবিরোধী অভিযান শুরু করেছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ১৭ দিনের অভিযানে বুড়িগঙ্গায় সবচেয়ে দূষিত বাদামতলী থেকে কামরাঙ্গীরচর এলাকার তলদেশ এবং ওপরের অংশ থেকে ৬৫ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছিল। এরপর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে, আর কোনো দৃশ্যমান অভিযান নেই।
বিআইডব্লিউটিএর হিসাবে, কলকারখানার বর্জ্য, পলিথিন ও মানববর্জ্য জমা হয়ে বুড়িগঙ্গার তলদেশে ১০ থেকে ১২ ফুট স্তর পড়েছে। এতে নদীর নাব্য হ্রাসের পাশাপাশি এর পানিও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থাতেই নদীর বর্জ্য অপসারণ শুরু করা হয়েছিল। বুড়িগঙ্গা ও তুরাগের বিভিন্ন স্থানের বর্জ্য অপসারণ, সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও যন্ত্রপাতি কেনার জন্য প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে এ অর্থ জোগানের ব্যবস্থা হয়। এ থেকে খরচ করা হয়েছিল প্রায় সোয়া পাঁচ কোটি টাকা।
বিপুল জনসংখ্যা অধ্যুষিত ঢাকা শহরের পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকার কারণে প্রতিদিন প্রায় ১৫ লাখ ঘনমিটারেরও বেশি পয়োঃবর্জ্যের প্রায় সবটাই উন্মুক্ত খাল, নদী, নর্দমা বেয়ে অপরিশোধিত অবস্থায় বুড়িগঙ্গায় এসে পড়ছে। টঙ্গী, বাড্ডা প্রভৃতি অঞ্চলের বর্জ্য চলে যাচ্ছে বালু ও তুরাগে। বুড়িগঙ্গার দূষণমাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নদীর পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না। মাত্রাতিরিক্ত এই দূষণের ফলে রাজধানীর (জাতিসংঘের ওয়াল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টের রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে ঢাকার জনসংখ্যা) এক কোটি ৭০ লাখ। মানুষের স্বাস্থ্য এখন হুমকির সম্মুখীন। দূষণের ফলে ভূ-উপরিভাগের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় আমাদের নির্ভর করতে হচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা যে পরিমাণ পানি সরবরাহ করছে, তার শতকরা ৮৬ ভাগই ভূ-গর্ভস্থ স্তর থেকে তোলা হচ্ছে। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর দুই থেকে তিন মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় নগরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। অন্যদিকে নদীর তীর বা আশপাশের বসবাসকারী লোকজন গোসল, রান্নাবান্নাসহ বিভিন্ন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করায় ডায়রিয়া, কলেরাসহ নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে।
নদী রক্ষায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের সমন্বয়ের আবশ্যকতা বোধ করছি। বলাবাহুল্য, নদী দখল ও দূষণ রোধে সরাসরি দায়িত্ব প্রায় ১৫টি মন্ত্রণালয়ের। পরিবেশ অধিদফতরের কাজের আওতায় রয়েছে নদীর পানি দূষণ রোধ করা। বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্ব তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা। নদীর পানির কর্তৃপক্ষ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তলদেশের কর্তৃপক্ষ ভূমি মন্ত্রণালয় এবং পাড়ের মালিক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। সেখানে যে কোনো উন্নয়ন কাজ করতে গেলেই দ্বারস্থ হতে হয় পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের। আর দখলমুক্ত রাখতে প্রয়োজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় ভূমিকা। কিন্তু মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয়ের অভাবে নদী দখল এবং দূষণ কোনোটাই রোধ করা যাচ্ছে না। নদী দূষণের পরিণতিতে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিও জরুরিভাবে আমলে নেয়ার দাবি রাখে। প্রতিদিন ক্রোমিয়াম, পারদ, ক্লোরিন, নানা ধরনের এসি দস্তা, নিকেল, সিসা, ফসফোজিপসাম, ক্যাডমিয়াম, লোগাম অ্যালকালি মিশ্রিত বর্জ্যের কারণে নদীগুলো প্রায় মাছশূন্য হয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ পরিবেশ দূষণের শিকার হয়ে জন্ডিস, ডায়রিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, মূত্রনালী ও কিডনি, চর্মরোগসহ ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করেছে। এসব নদীর পানি ব্যবহারকারী বেশিরভাগ মানুষই চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
‘নদী দূষণ বন্ধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় ওয়াসা দাবি করেছে, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার বর্জ্য যায় না। যা যায়, তা ঢাকাবাসীর অবৈধ সংযোগের কারণে। ওয়াসার ৩০ ভাগ পয়োনালার মাধ্যমে পায় ৩০ ভাগ বর্জ্য পাগলা শোধনাগারে যায়। বাকি ৭০ ভাগ এলাকার বাড়িগুলোর নিয়ম অনুযায়ী সেপটিক ট্যাঙ্ক করার কথা, এ জন্য ওয়াসা তাদের কাছ থেকে পয়োবিলও নেয় না। কিন্তু রাতের বেলায় বিভিন্ন বাড়ির শৌচাগার থেকে অবৈধ সংযোগ দেয়া হয় ওয়াসার বৃষ্টির পানি যাওয়ার ড্রেনেজ (স্টর্ম সুয়ার) লাইনের সঙ্গে। ড্রেনের লাইনের মাধ্যমে সেসব বর্জ্য বুড়িগঙ্গাকে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে।
আমরা প্রতিনিয়ত যাতায়াতের পথে দেখতে পাই তুরাগ নদী তার নিজস্ব ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। প্রতিদিন যেভাবে গাবতলী হাটের পশুর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। তারপর আবার কয়লা স্থানান্তরের জন্য গাবতলী ঘাট হলো সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। এভাবে কয়লা থেকে নদীর পানি হয়ে উঠেছে দূষণীয়, কালো এবং দুর্গন্ধযুক্ত।
আমার খুব মনে পড়ে আমি ছোটবেলা যখন ঢাকা আসি তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা খুব গর্বের সঙ্গে বলত আমাদের সবুজ শ্যামল বাংলার ঐতিহ্য হলো এসব নদী। পানিতে থৈ থৈ করছে, সূর্যের আলোয় পানি চিকচিক করছে যেটা আমার মনকে আরও আনন্দে উদ্বেলিত করত। আজ আর সেই দিন নেই যে, গাড়িতে যাব আর রাস্তার দুই পাশে দেখব মাঝি তার নৌকা নিয়ে মাছ ধরছে নতুবা মাল বোঝাই স্টিমার যাচ্ছে। সেই সময়গুলো এখন শুধুই দুঃসহ স্মৃতি কিছু ভুঁইফোড় ব্যবসায়ীদের জন্য। আমরা হারাতে বসেছি নদী মাতৃকার সেসব ঐতিহ্যবাহী নদীগুলো। রাজধানী ঢাকা হতে পারত পৃথিবীর আরেক লন্ডন। যার চারিপাশে রয়েছে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগের মতো নদী। প্রতিনিয়ত পরিচর্যায় হতে পারত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনোমুগ্ধকর পরিবেশ, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ভরপুর এক শ্রেষ্ঠ রাজধানী। যার অবস্থান বর্তমানে পৃথিবীর দুষিত শহরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।
এক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি, সামাজিকতা সবদিক বিবেচনায় পদক্ষেপ না নিলে দুরূহ পরিণতি যে অবধারিত, তা আর ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। ঢাকার নদী এখন অসুস্থ ও মৃতপ্রায়, এটার নাব্য ফিরিয়ে আনতে পুনরায় খননের বিকল্প নেই। ঢাকার নদীকে বাঁচাতে সকলকে সচেতন হতে হবে। যেহেতু পানির আরেক নাম জীবন আর ওয়াসা বুড়িগঙ্গার পানিকে শোধন করেই রাজধানীবাসীকে সরবরাহ করছে। সেহেতু আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে দূষণমুক্ত নদী, এমনকি রাজধানীকে বসবাসের উপযোগী করে তুলতে নদী বাঁচিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখা যেতে পারেব। এ বিষয়ে আমাদের বর্তমান সরকারের কার্যকর ভূমিকা আরও গতিশীল হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft