শিরোনাম: |
বর্তমান বাজারে ঢালিউডের অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে...
|
শেখ রাজিয়া সূলতানা : ঢাকাই চলচ্চিত্রে অনেক নামি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। হঠাত্ করেই ঢালিউডের এই মন্দা বাজার দেখে নির্মাতা ও প্রযোজকরা বেশ শঙ্কিত। কয়েক বছর ধরেই হিট ছবির সংখ্যাটা কম। ছবিতে লগ্নি করার পর বিশাল অঙ্কের লোকসান হওয়ার কারণে অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানেরই কাকরাইলস্থ অফিসে তালা ঝুলছে। এরমধ্যে ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান যৌথ প্রযোজনায় ছবি করার কারণে দেশীয় অনেক ছবিতে কাজ করার সময় পাচ্ছেন না।
আসছে ঈদে এ নায়কের ছবি মুক্তি পাবে ভারতের সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস থেকে। যেখানে ঈদকে ঘিরেই দেশীয় নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীরা স্বপ্ন দেখেন, এবার সেই ঈদেই দেশীয় প্রযোজনা থেকে নির্মিত ছবিতে থাকছেন না এই শীর্ষ নায়ক। শাকিব খান নতুন বছরে শাহাদত্ হোসেন লিটনের ‘অহংকার’ ছবির কাজ করেছেন। এ ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা ও শবনম বুবলী। ছবিটি আসছে বৈশাখে মুক্তি পাচ্ছে। ছবির পরিচালক শাহাদত্ হোসেন লিটন বলেন, আমাদের নির্মাতারা দুই ঈদের দিকে তাকিয়ে ছবি নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। আর এবারের ঈদে লোকাল প্রোডাকশনে শাকিবের ছবি নেই। এটা ঢালিউড বাজারের জন্য বিশাল ক্ষতি। শাকিবকে যারা নাম দিল, যশ দিল তাদের ছবিতে আগে কাজ করা উচিত। এরপর বিদেশের প্রোডাকশনের ছবি। কারণ দেশীয় চলচ্চিত্র না বাঁচলে তো ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে না। বর্তমানে চলচ্চিত্রের অবস্থা এমনিতেই ভালো না বলেও উল্লেখ করেন এই পরিচালক। এদিকে এবার আর যৌথ প্রযোজনায় নয়, একক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে ভারতের শীর্ষ সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রযোজক এ প্রসঙ্গে বলেন, শাকিবকে নিয়ে ভারতের এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছবি নির্মাণ করলেও নায়িকা বা অন্য শিল্পীদের তারা সুযোগ দেবে না। ভারতের নায়িকা দিয়েই কাজ করাবেন তারা। আর এর ফলে ধীরে ধীরে বেকার হয়ে পড়বে আমাদের শিল্পীরা। এটা এক ধরনের ক্ষতি। এমনিতেই শিল্পী ও টেকনেশিয়ানদের বাজার মন্দা। নামেমাত্র বাংলাদেশি শিল্পীদের নিয়ে ছবি নির্মাণ করবেন তারা। আর সেই ছবি বাংলাদেশে মুক্তি দেয়া হবে। এরপর সাফটা চুক্তি মোতাবেক সেই ছবি বাংলাদেশি ছবি হিসেবে ভারতে যাবে। বিনিময়ে আরেকটি ভারতীয় ছবি মুক্তি পাবে বাংলাদেশে। হয়তো দেখা যাবে ভেঙ্কটেশেরই ভারতীয় ছবি এনে চালানো হবে এখানে। এটাই হবে মূল ব্যবসা। এ বিষয়ে শাকিব খান বলেন, বিষয়টি আমি পজিটিভভাবেই দেখছি। দর্শক ভালো মানের কিছু ছবি দেখতে পাবেন। আর এখন তো বিশ্বায়নের যুগ। নিজের ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে বসে থাকলে নিজেরাই অন্ধকারে থেকে যাব। চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। যেন বাংলাদেশের ছবি সারা বিশ্বে একযোগে মুক্তি পায় এবং সকলে তা প্রশংসা করে। আমি বুঝে শুনেই ভালো কিছু ছবিতে দর্শকদের জন্য কাজ করতে যাচ্ছি। শাকিব আরও বলেন, ভারতের এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শুধু বাংলাদেশে না সারা বিশ্বে ছবি মুক্তি দেবে। আর যদি দেখি এজন্য দেশীয় চলচ্চিত্রের কোনো ক্ষতি হচ্ছে তাহলে আমি তা মেনে নেব না। দেশীয় চলচ্চিত্রের জন্য ক্ষতি হবে এমন কিছু আমি কখনোই করব না। তবে সমীকরণের জন্য আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এরইমধ্যে বাংলাদেশের শাকিব খানকে দু’বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ করেছে ভারতের এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। ঢাকার মতিঝিলে একটি অফিসও নিয়েছে ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। অফিসের নাম দেয়া হয়েছে ‘ভিএফএস ওয়ার্ল্ড স্টুডিও প্রাইভেট লিমিটেড’। আর এই অফিস পরিচালনা করবেন ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের নির্বাহী কর্মকর্তা ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক বিজয় খেমকা। দেশের সিনিয়র অনেক নির্মাতার মতে, এ দেশের ছবি নামেমাত্র কলকাতায় নিয়ে তার বিপরীতে ভারতীয় ছবি এ দেশে রফতানির মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের টাকা অবলীলায় ভারতে চলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঢালিউড বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। |