শিরোনাম: |
বড় সংগ্রহ চান হেরাথ
|
ক্রীড়া প্রতিবেদক : দিনের শুরুতে টস জিতে হেসেছিলেন রঙ্গনা হেরাথ। ৩ উইকেট হারানোর পর সেই হাসি মিলিয়ে যাওয়ার কথা। তবু দিন শেষে টিভি ক্যামেরায় আবার দেখা গেল সেই হাসি। লঙ্কান অধিনায়কের মুখে হাসি ফিরিয়েছেন কুসল মেন্ডিস।
দ্বিতীয় দিনেও সেই মেন্ডিসের দিকে তাকিয়ে হেরাথ। প্রথম দিন শেষে টেন স্পোর্টসকে বললেন, জমা করতে চান যত বেশি সম্ভব রান। ‘দিনের শুরুতে কুসল বেঁচে গিয়েছে, ভাগ্য ভালো ছিল। পরে সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে। কালকে সকালে কুসল ও ডিকভেলা কীভাবে খেলে, তার ওপর নির্ভর করবে আমরা কতটা এগোতে পারব। আমরা চাই যত বেশি সম্ভব রান করতে, যাতে স্পিনারদের পরে কাজে লাগানো যায়।’ লঙ্কান অধিনায়কের মতে, এই উইকেটে টস জয়টা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ‘গলে টস জয় সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রথম দিন সবসময়ই ব্যাটিং উপযোগী থাকে। যেমনটি আশা করেছিলাম, উইকেটের আচরণ তেমনই ছিল।’ এদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়েছেন কুসল মেন্ডিস ও আসিলা গুনারত্নে জুটি। দুইশ ছুঁই ছুঁই এই জুটি ভেঙেছেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বলটি হাফ পুল করার চেষ্টা করেন গুনারত্নে। বলটি ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন গুনারত্নে। মঙ্গলবার এই দুজন মিলে ১৯৬ রানের জুটি গড়েছেন। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে দিনেশ চান্দিমাল আউট হলে ক্রিজে নামেন গুনারত্নে। এরপরই মূলত ধীরে ধীরে রানের পাহাড় গড়তে থাকে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে শ্রীলঙ্কার চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি ছিল ২০০২ সালে। ওইবার কলম্বোতে ডি সিলভা ও কুমারা সাঙ্গাকারা মিলে ১৫০ রানের জুটি গড়েছিলেন। তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড চট্টগ্রামে। ২০১৪ সালে সাঙ্গাকারাকে সঙ্গে নিয়ে চান্দিমাল গড়েছিলেন ১৪৫ রানের জুটি। মঙ্গলবার ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরে যেতে পারতেন মেন্ডিস। কিন্তু শুভাশীষের নো বলে দ্বিতীয় জীবন পেয়েই তার সদ্ব্যবহার করেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ২২ বছর বয়সী তরুণ। যদিও শেষ বিকেলে তাসকিনের শিকার হন গুনারত্নে। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলটি হাফ পুল করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৮৫ রান করেন মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। ১৩৪ বল খেলে ৭ চারে তিনি তার ইনিংসটি সাজিয়েছেন। এদিকে প্রথম দিন শেষে এগিয়ে স্বাগতিক লঙ্কানরাই। দিনেশেষে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩২১ রান। দারুণ ব্যাটিং করে উইকেটে অপরাজিত আছেন কুসল মেন্ডিস ১৬৬ রান নিয়ে। আজ দ্বিতীয় দিনে তার ইনিংসটাকে আরও সমৃদ্ধ করতে চাইবেন তিনি। প্রথম দিনে মেন্ডিসকে যথাযথ সঙ্গ দিয়েছেন আসেলা গুনারত্নে। ৮৫ রানে তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসার আগে দলকে এনে দিয়েছেন বড় সংগ্রহের পুঁজি। ৯৩ রানে ৩ উইকেট হারানো লঙ্কান দলকে কক্ষপথে রাখেন এই দুই ব্যাটসম্যান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এনে দেন ১৯৬ রানে পার্টনারশিপ। আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওলা অপরাজিত আছে ১৭ রান নিয়ে। অথচ দিনটা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের বোলারদের উদযাপনের মধ্যে দিয়ে। দলীয় ১৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। অভিজ্ঞ ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ৫ রান করে পেসার শুভাশিষ রায়ের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন। এরপর উইকেটে এসে জুটি গড়েন দিমুথ করুনারত্নের সঙ্গে কুসল মেন্ডিস। উইকেটে যখন এই জুটি সেট ঠিক তখনই টাইগারদের ব্রেক থ্রু এনে দেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৬০ রানের মাথায় ৩০ রান করা করুনারত্নেকে বোল্ড করে ফেরান মিরাজ। দিনেশ চান্দিমাল বেশিক্ষণ উইকেটে থিতু হতে পারেননি। ৫ রান করা চান্দিমাল ৯৩ রানের মাথায় মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন মুস্তাফিজের বলে। তবে মেন্ডিস শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দিয়েছিলেন। শুভাশিষের বলে উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়েছিলেন মেন্ডিস। তবে শুভাশিষের বল ‘না’ হওয়াতে জীবন পান এই লঙ্কান। যার সুযোগটি তিনি পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন। এরপর দিনটি নিজেদের করে নেন লঙ্কান দুই ব্যাটসম্যান। তাদের ১৯৬ রানের পার্টনারশিপটাই ম্যাচে বিবর্ণ করে দেয় বাংলাদেশকে। যদিও দিনের শেষভাগে ৮৫ রান করা গুনারত্নেকে ফিরিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তবুও দিনশেষে চওড়া মুখের হাসিটা লঙ্কান দলপতি রঙ্গনা হেরাথের মুখেই। বাংলাদেশের বোলাররা বলতে গেলে কোনো প্রভাব ফেলতেই পারেননি লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের ওপর। শুভাশিষ, মিরাজ, মুস্তাফিজ ও তাসকিন প্রত্যেকে নিয়েছেন একটি করে উইকেট। সাকিব থেকেছেন উইকেটশূন্য। লঙ্কানদের ইনিংস বাড়তে দিতে না হলে আজ সকালে উইকেট নিতে হবে মুশফিকদের। যদি তা নয় হয় তবে বড় রানের ওপর চাপা পড়তে যাচ্ছে টাইগাররা। অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে মুস্তাফিজ, মিরাজ আর সাকিবদের। |