শিরোনাম: |
প্রকৃতির বন্ধু তালগাছ
|
তালগাছ। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেকেই হয়তো দেখেইনি। শুধু ছোটবেলায় ছড়া পড়েছে ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে/সব গাছ ছাড়িয়ে/ উঁকি মারে আকাশে।’ আবার কেউ কেউ দেখেছেও। তবে তা নেহায়েত অনেক কম। কারন দিন দিন প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তালগাছ। এবং তা মানুষের কল্যানে। বসবাসের চাহিদা পূরণে কিংবা অন্য কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশের পরম বন্ধু তালগাছকে কেটে ফেলছি। আশা কথা হচ্ছে বর্তমানে এই তালগাছ রক্ষায় বরেন্দ্র অঞ্চলের রাস্তাগুলোর দুপাশ জুড়ে সারি সারি তালগাছ লাগান হয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সেখানে ৩০ লাখের বেশি তালগাছ রোপণ করেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। শক্ত-মজবুত আর দীর্ঘজীবী হওয়ায় শিশু, আম, জাম গাছের পরিবর্তে ৯ বছর ধরে বিভিন্ন রাস্তার পাশে এসব গাছ লাগানো হয়েছে এবং হচ্ছে। বিএমডিএ এর তথ্য মতে, ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন রাস্তা ও খাড়ির পাশে প্রায় ৭২০ কিলোমিটারের বেশি জায়গাজুড়ে লাগানো হয়েছে ৩০ লাখের বেশি তালগাছ। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, রহনপুর, নওগাঁর পোরশা, নিয়ামতপুর, পত্মীতলা ও ধামড়হাট উপজেলার রাস্তার দুইপাশে লাগানো হয়েছে এসব তালগাছ। তানোর উপজেলার দেবিপুর গ্রামের কৃষক ফিরোজ কবির জানান, রাস্তা পাশে তার ১৭ বিঘা তিন ফসলি জমি রয়েছে। আগে যখন রাস্তার পাশে শিশুগাছ ছিল তখন ওই গাছের পাতা ও ছায়ার কারণে তার জমিতে ফসল অনেক কম হতো। এখন শিশুগাছগুলো কেটে তালগাছ লাগানোর পর থেকে তার জমিতে পাতা পড়ে আর ফসল নষ্ট হয় না। ফলনও ভালো হচ্ছে। তানোর উপজেলা বিএমডিএ এর জোন সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তাল একটি ঔষধি গুণ সম্পন্ন ফল। গাছও খুবই শক্ত, ঝড়ে ভাঙে না। ফসলের শেল্টার বেল্ট হিসেবে কাজ করে। তালগাছ ভূমিক্ষয় রোধ করে। পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে।’
তিনি আরও জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে এক সময় গাছপালা খুব কম ছিল। সে সময় গ্রামগঞ্জে শুধু তালগাছ চোখে পড়ত। কিন্তু কালের পরিবর্তনে তালগাছ বাদ দিয়ে মানুষ শিশুসহ নানা রকম কাছ লাগানো শুরু করে। যেগুলো ছিল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য ২০০৮ সালে বিএমডিএ বরেন্দ্র অঞ্চলে তালগাছের চারা লাগানো প্রকল্প গ্রহণ করে। |