শিরোনাম: |
শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন খালেদা: প্রধানমন্ত্রী
|
একুশে পদক পেলেন ১৭ গুণীজন
গুণীদের খুঁজে বের করে সম্মানিত করা হবে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস প্রস্তাব করা হবে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র এখনও ‘শেষ হয়নি’ বর্তমান প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে ‘পাকিস্তানিদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে’ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে পাকিস্তানের নানা অপপ্রচারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানিদের এই অপপ্রচার আর তার (খালেদা জিয়া) এই বক্তব্যে কোনো সূত্র আছে কি-না; আমি জানি না। তিনি বলেন, কিন্তু মনে হচ্ছে ওই একই সুরে যেন তিনি কথা বলার চেষ্টা করছেন এবং এটা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা ও অবমাননা করা ছাড়া আর কিছুই না। গতকাল সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘একুশে পদক ২০১৭’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র এখনও ‘শেষ হয়নি’ এবং কিছু দিন আগে তারা একটি বই প্রকাশ করে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করেছে। একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মিলে তাদের এদেশীয় দোসরদের গণহত্যায় লিপ্ত হওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্য যে, আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, তারা নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ওই গণহত্যার ছবিতে মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করেছে বলে ক্যাপশন দিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে সব জায়গায় বিলি করার চেষ্টা করছে। ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস প্রস্তাব করা হবে: ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার প্রস্তাব করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি। তিনি বলেন, ২৫ মার্চে কত বড় গণহত্যা হয়েছিল তার চিহ্ন আছে সারাদেশে। বাংলাদেশে এমন কোনো পরিবার নেই, যে পরিবারে কেউ জীবন দেন নাই। গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। এটা সবার জানা। কাজেই সেটা নিয়ে প্রশ্ন করা বাঙালি জাতির প্রতি চরম অবমাননা। আমরা কারও কাছে মাথা নত করব না: আমরা বিশ্বের কারও কাছে মাথা নত করে চলব না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস। আগামী প্রজন্মকে আমাদের গৌরবের ইতিহাস জানতে হবে। বিশ্বসভায় আমরা মাথা উঁচু করে চলব। আমরা কারও কাছে মাথা নিচু করব না। এটাই হবে বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের পরিচয়। আমাদের যেটুকু সম্পদ আছে তা নিয়েই আমরা সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে চলব। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘রক্ত দিয়ে অর্জিত বাংলা ভাষার মর্যাদা অবশ্যই দিতে হবে। দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা যেন হারিয়ে না যায় তার জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা শুরু করি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত সরকার এসে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। পরে আমরা আবার ক্ষমতায় এসে কাজ শেষ করেছি। কোনো দেশের হারিয়ে যাওয়া ভাষা-মাতৃভাষা আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংরক্ষণ করছি। সে ভাষা নিয়ে গবেষণাও করছি। শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এ দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। জাতির মহান অর্জনগুলোকে রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে: জাতির মহান অর্জনগুলোকে রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন আমরা স্বাধীন দেশ। অর্থনৈতিকভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নের রোল মডেল। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশ একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। এখন যে অপপ্রচার তারা (পাকিস্তানি গোষ্ঠী) করে যাচ্ছে তা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য না। কাজেই ২৫ মার্চকে আমাদের গণহত্যা দিবস হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও এর স্বীকৃতির জন্য আমাদের প্রচার চালাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী একাত্তরের গণহত্যার কথা স্মরণ করে বলেন, সে সময় যে জঘন্য ঘটনা তারা ঘটিয়েছে তা মানব ইতিহাসে নজীরবিহীন। দিনের পর দিন এ দেশের মানুষকে তারা হত্যা করেছে। আমাদের ৩০ লাখ শহীদ জীবন দিয়েছেন, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম দিয়েছেন। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশের কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা, আমি নাম ধরেই বলতে চাই- বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কিছুদিন আগে বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ লোক শহীদ হয় নাই।...তার এ ধরনের বক্তব্যের সঙ্গে পাকিস্তানের এ ধরনের অপপ্রচারের কোনো সূত্র আছে কি-না তা আমাদের খুঁজে দেখতে হবে। তারা উভয়েই একই সূরে কথা বলেছেন। এ যেন শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি এবং শহীদদের অবমাননা করা ছাড়া আর কিছুই না। প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, কারা অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় চার নেতাসহ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযোদ্ধা ও সম্ভ্রমহারা ২ লাখ মা-বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘একুশ মানে মাথা নত না করা, মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা। একুশ মানে বাংলা, বাঙালি এবং বাংলা ভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও নিরন্তর ভালোবাসা।’ বাঙালির হাজার বছরের সংগ্রামী ইতিহাসে অমর একুশে এক উজ্জ্বল এবং মহান সংযোজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একুশের পথ বেয়েই আমরা পৌঁছেছি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মোহনায়।’ মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় সব গণআন্দোলনের পতাকাবাহী সংগঠন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ফজলুল হক হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ, তমুদ্দীন মজলিস এবং আরও কয়েকটি ছাত্র সংগঠন মিলে সর্বদলীয় ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চকে ‘বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ ঘোষণা করে ধর্মঘট ডাকা হয় এবং সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ জনগণকে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য সমগ্র দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করে। ধর্মঘট চলাকালে বঙ্গবন্ধুসহ অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ ছাত্র-জনতা প্রবল আন্দোলনের মুখে মুসলিম লীগ সরকার ১৫ মার্চ বন্দিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ভাষার দাবিতে একটি ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। পরে মিছিল নিয়ে নেতৃবৃন্দ খাজা নাজিমউদ্দিনের কাছে দাবিনামা পেশ করেন। কিন্তু ওই দিনই পুলিশ একদল ছাত্রের ওপর লাঠিচার্জ এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। প্রতিবাদে ছাত্ররা পরেরদিন সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করেন। ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আবারও গ্রেফতার হন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জুলাই মাসের শেষে তিনি মুক্তি পান। ১৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ঢাকায় ভুখা মিছিল বের করে। মিছিল থেকে মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুসহ অনেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ২৫ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই আবারও ঘোষণা দিলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। এ সময় বঙ্গবন্ধু বন্দি অবস্থায় চিকিত্সার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, হাসপাতালের কেবিনে প্রায়শই তিনি ছাত্রলীগের তত্কালীন সভাপতি নঈমুদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক খালেক নেওয়াজসহ ছাত্রনেতাদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করে আন্দালনের দিক-নির্দেশনা দিতেন। এসব বৈঠক হতো মধ্যরাতের পর। এ রকম এক বৈঠকেই ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ১৯৭ পৃষ্ঠা থেকে উদ্বৃত করে বলেন, বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, পরের দিন রাতে এক এক করে অনেকেই আসল। সেখানেই ঠিক হল আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ পালন করা হবে এবং সভা করে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করতে হবে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেই রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের কনভেনর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারির সেই বিয়োগান্তক ঘটনা রাতারাতি আমাদের মনন, চিন্তা-চেতনায় একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেয়। আমরা যারা পাকিস্তানি শাসনের মধ্যে বেড়ে উঠেছি, আমাদের কাছে একুশে ছিল এক অন্যরকম শক্তি, প্রেরণা, উদ্দীপনার উত্স। যুক্তফ্রন্টের সরকার, অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ভাষা দিবসের স্বীকৃতি প্রদান, ঐতিহাসিক ৬ দফা, ১১ দফাসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং ’৬৯-এর ঐতিহাসিক গণঅভুত্থ্যানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিলাভ, একাত্তরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাসহ ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবগাঁথা তুলে ধরেন প্র্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু জাতির পিতাকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট হত্যার পর দেশ উল্টোদিকে হেঁটেছে। তিনি বলেন, একুশের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মহত্ অর্জনগুলোকে ভুলুণ্ঠিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২১ বছর পর আবারও আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, দীর্ঘ একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় বাংলার মাটি ও মানুষের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে সরকার গঠনের পর কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি প্রয়াত রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালামের সহযোহিতায় তার সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি প্রদানের বৃত্তান্তও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির একুশ এভাবে পরিণত হয় সারা পৃথিবী মানুষের মাতৃভাষা দিবসে। দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষার সুরক্ষা বিধানে ভূমিকা রাখার দায়িত্বও এখন আমাদের ওপর অর্পিত। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পৃথিবীর সব ভাষার উত্পত্তি ও বিকাশ নিয়ে গবেষণা এবং সংরক্ষণ ও চর্চার জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তত্কালীন জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনানকে নিয়ে এই ইনস্টিটিউট নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও ২০০১ সাল পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যান্য উন্নয়ন কর্মসূচির মতো এরও নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছিল। বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা ঘোষণার জন্য তার সরকারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার তথ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ প্রদান করে বিশ্বের দরবারে এ ভাষার গৌরব ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সরকার প্রধানের দায়িত্ব লাভ করে আমি নিজেও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নিয়মিত বাংলায় ভাষণ দিয়ে আসছি। একুশে পদক পেলেন ১৭ গুণী ব্যক্তি: ভাষা-শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবময় অবদান ও কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ ১৭ গুণী ব্যক্তির হাতে একুশে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছর একুশে প্রদকপ্রাপ্তরা হলেন- ভাষা আন্দোলনে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক ড. শরিফা খাতুন, ভাষা ও সাহিত্যে সুকুমার বড়ুয়া ও কবি ওমর আলী (মরণোত্তর)। শিল্পকলায় (সঙ্গীত) সুষমা দাস, জুলহাস উদ্দিন আহমেদ, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম ও রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ সেলিম। শিল্পকলায় (চলচ্চিত্র) তানভীর মোকাম্মেল, শিল্পকলায় (ভাস্কর্য) সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ, শিল্পকলায় (নাটক) সারা যাকের, শিল্পকলায় (নৃত্য) শামীম আরা নীপা। সাংবাদিকতায় আবুল মোমেন ও স্বদেশ রায়, গবেষণায় সৈয়দ আকরম হোসেন, শিক্ষায় প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান। পদক বিজয়ী প্রত্যেকে পেয়েছেন ১৮ ক্যারেট মানের ৩৫ গ্রাম সোনার একটি পদক এবং দুই লাখ টাকা। গুণী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে সম্মানিত করা হবে: এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব গুণী ব্যক্তিত্ব এখনও আড়ালে আছেন, তাদেরকে খুঁজে বের করে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হবে। দেশ-জাতির জন্য তাদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে আমরা কৃতার্থ হব। একুশ মাথা উঁচু করে যে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শেখায় বলে উল্লেখ করে একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। অনুষ্ঠানে শিল্প-সাহিত্যসহ সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। |