শিরোনাম: |
গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীর চরের মানুষ অরক্ষিত
|
গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা : পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার উপকূলীয় চরাঞ্চলের মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে কোনো রকম জানমাল নিয়ে বেঁচে আছে। বন্যা, নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের বেঁচে থাকতে হয়। দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে চরাঞ্চলের মানুষকে উদ্ধার করার জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারি-বেসরকারি কারও কোনো উদ্যোগ নেই।
প্রমত্তা নদী আগুনমুখা, রামনাবাদ ও দাড়চিরা দুই উপজেলাকে ঘিরে রেখেছে। মূল ভূখণ্ড ছাড়াও দুই উপজেলায় ছোট বড় প্রায় অর্ধশত চর রয়েছে। এর মধ্যে চরমোন্তাজ, চররোস্তম, চরবাংলা, চরনজির, খলিফারচর, চরমার্গারেট, চরআন্ডা, মাঝেরচর, চরহাবাতিয়া, গঙ্গারচর, চরকলাগাছিয়া উল্লেখযোগ্য। মূল ভূখণ্ড থেকে এসব চরে যেতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রলারে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে। সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত এসব চরাঞ্চলে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। তারা প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে ভয়াল আগুনমুখা, রামনাবাদ ও দাড়চিরার করাল গ্রাস থেকে বেঁচে থাকে। রাঙ্গাবালী উপজেলার আন্ডারচর এলাকার, আনসার মৃধা, ইউসুফ মল্লিক ও ইলিয়াছ আকনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চরের মানুষগুলো প্রতিনিয়তই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকে। চরাঞ্চলের অধিকাংশ গ্রামে কোনো উঁচু পাকা বিদ্যালয় বা আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় নিজ উদ্যোগেই জীবন রক্ষা করতে হয়। প্রতিবছর ভয়াবহ বন্যাসহ নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে এসব চরাঞ্চলের মানুষ। তাদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। অনেক জায়গায় নেই কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা গর্ভবতী মা ও শিশুদের চিকিত্সা ব্যবস্থা। বিনা চিকিত্সায় অকালেই জীবন দিতে হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিতে গিয়ে পথেই মারা যায়। এর পাশাপাশি অনেক সময় দুর্যোগ আবহাওয়ার সঙ্কেত পর্যন্ত তাদের কাছে পৌঁছায় না। দুর্যোগের সময় এসব মানুষদের উদ্ধারের জন্য নেয়া হয় না সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা। দুর্যোগ মুহূর্তে উদ্ধার তত্পরতা চালানোর জন্য কোনো নৌকা বা ট্রলার নদী পার হয়ে চরে পৌঁছতে পারে না। বাঁচার জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করা ছাড়া কোনো উপায় তাদের থাকে না। গলাচিপা উপজেলার মাঝেরচরের মজনু মিয়া, ঝড়ের পর কেউ খোঁজ নেয় না। গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান সামসুজ্জামান লিকন জানান, অবহেলিত এসব চরাঞ্চলের মানুষদের দুর্যোগকালীন সময়ে নিরাপত্তা দিতে সরকার শিগগিরই জোরালো পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। |