রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ৭ পৌষ ১৪৩১
হায়দ্রাবাদে অপরাজেয় ভারত
Published : Monday, 13 February, 2017 at 6:00 AM, Count : 614

ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট নিয়ে এখন পর্যন্ত হায়দ্রাবাদে চারটি ম্যাচ হয়েছে। যেখানে একটি ম্যাচেও হার মানেনি ভারত। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি ড্র হয়। তারপর ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ড ও ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়া ভারতের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হার মানে। শেষবার এই মাঠে খেলল বাংলাদেশ। এবারও হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের জয় হয়েছে। ভারত ২০৮ রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে হায়দ্রাবাদে অপরাজিত থাকার ইতিহাস অক্ষুণষ রাখল।
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৭ বছর পর এবারই প্রথম ভারতে আসার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। সফরে ভারতের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে তারা। সোমবার চা বিরতিতে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে বাংলাদেশ অলআউট হয়। আর তাতেই ২০৮ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায় ভারত।
এতো বছর পর ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ খেলছে বলে একে অনেকেই ঐতিহাসিক টেস্ট অ্যাখা দিয়েছেন। যদিও এমন একটি ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। পুরো পাঁচদিনে দায়িত্ব জ্ঞাণহীন ব্যাটিং-ফিল্ডিং-বোলিং তিন বিভাগেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভুল করেছে বাংলাদেশ। আর তারই খেসারত ২০৮ রানের হার।
কাগজে-কলমে শক্তিশালী দল ভারত। দলের টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। এই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় প্রত্যাশা বোকার স্বর্গে বসবাস ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়! কিন্তু ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যেসব ভুল বাংলাদেশ করেছে, সেসব না করলে ম্যাচটিতে না জিতলেও অন্তত ড্র করতে পারত মুশফিকরা।
পুরো টেস্টেই চালকের আসলে ছিল ভারত। ম্যাচে কখনোই নিজেদের এগিয়ে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দুই ইনিংসেই রানের পাহাড় তাড়া করতে হয়েছে মুশফিক বাহিনীকে। আর দুই ইনিংসে দেখা গেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পরিষ্কার ব্যবধান। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দলের বিপক্ষে গত দুই তিন বছরের লড়াকু বাংলাদেশের দেখা মেলেনি।
স্কোরকার্ড স্পষ্ট করে দেবে লড়াইটা কতটা একপেশে হয়েছে।  রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে অধিনায়ক বিরাট কোহলির ডাবল সেঞ্চুরি এবং মুরালি বিজয় ও ঋদ্ধিমান সাহার সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৬৮৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত।
জবাবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরির পরও বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমে যায় ৩৮৮ রানে। মুশফিক টেল এন্ডারদের নিয়ে লড়াই না করলে হয়তো ম্যাচটি ৫ দিনে গড়াত না। চারদিনেই ইনিংস ব্যবধানে হার মানতে হতো বাংলাদেশকে।
প্রথম ইনিংসেই ২৯৯ রানে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। তারপরও বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাঠায়নি। ফলোঅনে না দিয়েই নিজেরাই ব্যাটিং নামে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।
তাতে করে বাংলাদেশের জন্য জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫৯ রানের। ভারতের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে এই রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে জিততে গেলে ইতিহাস তৈরি করেই জিততে হতো।
চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে পাহাড়সম লক্ষ্য সামনে নিয়ে ব্যাট করতে নেমে দিশা পায়নি বাংলাদেশ। শেষ বিকেলে তিন উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সোমবার সকালের শুরুতেই সাকিব ফিরে গেলে বাংলাদেশের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় ইনিংসে সৌম্য-মাহমুদউল্লাহদের সামান্য লড়াই কেবল ব্যবধানই কমিয়েছে। যদিও কামরুল ইসলাম রাব্বির বুক চিতিয়ে লড়াইটা চোখে লেগেছে। ক্রাইস্টচার্চের মতো হায়দ্রাবাদেও রাব্বি ৭০ বল খেলে তিন রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাসকিন রিভিউতে ফিরে গেলে বাংলাদেশ ২৫০ রানেই থেমে যায়।
২০০০ সাল থেকে ভারতের মাটিতে শেষ ইনিংসে তাড়া করে কেবলমাত্র চারটি ম্যাচের ফল হয়েছে। সবচেয়ে বেশি তাড়া করা ম্যাচটি আহমেদাবাদের। ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭২ রান করেছিল। ওইবার ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। তার পরের অবস্থানেই হায়দ্রাবাদের আজকের ম্যাচটি। বাংলাদেশ ২৫০ রানে অলআউট হয়ে হার এড়াতে পারেনি। ২০৮ রানের পরাজয়ে শেষ হয়েছে হায়দ্রাবাদ টেস্ট। গেল কয়েক বছর ভারতের বিপক্ষে শেষ ইনিংসে লড়াই করে কেউই জেতেনি। ইতিহাসটা বাংলাদেশ বদলাতে পারেনি বলেই হারের ক্ষতটা নিয়েই শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী ৭ মার্চ থেকেই শুরু হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। তাই দ্রুতই ব্যর্থতা ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে টাইগারদের।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft