শিরোনাম: |
মুশফিকের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ
|
গাজী ফায়সাল : টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনটা ভালোই কাটল টাইগারদের। সপ্তম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রান জুটি গড়ে দিনটা ভালোভাবেই পার করে দিলেন টাইগার দলপতি মুশফিকুর রহিম। ২০৬ বল মোকাবিলায় ৮১ রানে অপরাজিত রয়েছেন লড়াকু এই অধিনায়ক। যেন টেস্ট ক্রিকেটের এক আদর্শ প্রতিচ্ছবি মুশফিকের ব্যাটিং। আর তার এই ব্যাটিংয়ে অন্তত টেস্ট ড্রয়ের স্বপ্ন দেখা বুনতে শুরু করছে টাইগাররা। তৃতীয় দিনের শুরুটা ভালো না হলেও শেষটা দারুণ কাটল বাংলাদেশের। দিনের খেলা শেষ করেছে মুশফিকরা ৬ উইকেটে ৩২২ রানে। ফলোঅন এড়ানোর পথটা এখনও দূরের বাতিঘর হলেও চতুর্থ দিনে মুশফিক-মিরাজের ব্যাটে ভালো কিছুরই প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশের ভক্তরা। ভারতের বিশাল স্কোরের জবাবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছিল সাকিব আল হাসানের ইনিংস। কিন্তু ক্যারিয়ারের ২১তম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলে ৮২ রানে আউট হন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। তবে সাকিবের পর মুশফিকুর রহিম হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন। দিন শেষ করেছেন টাইগার অধিনায়ক ৮১ রানে অপরাজিত থেকে। আর তার সঙ্গে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন মেহেদী হাসান মিরাজ ৫১ রান নিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পেলেন এই অলরাউন্ডার।
এর আগে বড় কয়েকটি ব্যক্তিগত ইনিংসের প্রত্যাশা নিয়ে শনিবার হায়দ্রাবাদে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। প্রথম সেশনেই তিনটি উইকেট হারায় সফরকারীরা। তৃতীয় দিন সকালটা শুরু হতেই ভুল বোঝাবুঝিতে আউট হন তামিম ইকবাল। এরপর ফেরেন মুমিনুল হকও। সাকিবের সঙ্গে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে আউট হন আরেক নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ। শুক্রবার দ্বিতীয় দিন ৬ উইকেটে ৬৮৭ রানে ভারত প্রথম ইনিংস ঘোষণা করলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম দিন ১৪ ওভার খেলে ৪১ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট হারিয়ে সেই চাপটা আরও বেড়ে যায়। ঘুরে দাঁড়াতে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটা ভালো ইনিংসের দরকার ছিল। এজন্য তামিম ও মুমিনুলের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল সফরকারীরা। কিন্তু তারা দুজনই ফেরেন দ্রুত। দলে তিন রান যোগ হতেই তৃতীয় দিন প্রথম উইকেটের পতন হলো। দিনের তৃতীয় ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের চতুর্থ বলে স্কয়ার লেগে ফ্লিক করেছিলেন মুমিনুল। দৌড়ে একটি রানই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নিতে গেলেন ২ রান। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ক্রিজের মাঝে গিয়ে একটু দ্বিধায় পড়লেন দুজনই। ততক্ষণে উমেশ যাদবের থ্রো থেকে বল হাতে নিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন ভুবনেশ্বর। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে আউট হন তামিম। ৫৩ বলে থামে তার ২৫ রানের ইনিংস। ২৪ রানে দিন শুরু করেছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার। ১ রানে খেলতে নেমে মুমিনুলও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। মাত্র ১২ রানে উমেশ যাদবের এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি। ৬৪ রানে বাংলাদেশ তিন উইকেট হারানোর পর সাকিবের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর জুটি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে। কিন্তু ৪৫ রানের এ জুটি ভাঙেন ভারতীয় পেসার ইশান্ত শর্মা। রিভিউ নিয়েও আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ, ২৮ রানে এলবিডব্লিউ হন তিনি। মাহমুদউল্লাহ সাজঘরে ফেরার পর দ্বিতীয় সেশন শেষে মুশফিকের সঙ্গে সাকিবের প্রতিরোধ। তারা শতাধিক রানের জুটি গড়ে স্বস্তি ফেরান। কিন্তু সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয় সাকিবকে। দুর্বল শটে উমেশ যাদবের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে মুশফিকের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। এর আগে ৬৯তম বলে দশম বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পঞ্চাশ ছোন তিনি। তার ১০৩ বলের ইনিংসটি সাজানো ১৪টি বাউন্ডারিতে। সাকিব চলে যাওয়ার পর নেমেই অল্প কিছু সময় ক্রিজে ছিলেন সাব্বির রহমান। রবীন্দ্র জাদেজার বলে ১৬ রানে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ার পথে ১৩৩ বলে ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফসেঞ্চুরি করেন মুশফিক। শুক্রবার প্রথম দিন সৌম্য সরকার ১৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তার আগে দ্বিতীয় দিন বিরাট কোহলির ২০৪ ও ঋদ্ধিমান সাহার অপরাজিত ১০৬ রানের সঙ্গে রবীন্দ্র জাদেজার (৬০*) হাফসেঞ্চুরিতে বিশাল স্কোর করে ভারত। |