রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
Published : Sunday, 8 January, 2017 at 6:00 AM, Update: 09.01.2017 12:45:32 AM, Count : 1158

বর্তমান প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে এবং সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার বিকশিত হতে আমরা সব সময় সব রকম সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে রেখেছি। একটি স্থিতিশীল, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি।
গতকাল রোববার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজারের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র এবং ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রমের আওতায় টেলিভিশনে প্রচারের জন্য তৈরি করা দুটি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এক লাখ স্কয়ার ফুট আয়তনের ১০ তলা এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুঁজিবাজার হবে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ও নির্ভরযোগ্য অর্থায়নের এক উত্স। আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি এ দারিদ্র্যমুক্তি ঘটাতে পারবে না। কাজেই পুঁজিবাজার যাতে আরও বিকশিত হতে পারে তার জন্য সব সময় আমরা সব সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে রেখেছি।
পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করায় দেশের পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের এসব নানামুখী উদ্যোগের কারণেই পুঁজিবাজারে আস্থার সঙ্কট কেটে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, পুঁজিবাজারে লেনদেন কারচুপি ও অনিয়ম শনাক্ত করতে যথাযথ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, যেসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, তাতে লক্ষ্য করেছি পুঁজিবাজারে একটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।
হুজুগে মেতে বিনিয়োগ নয়: বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,  হুজুগে না মেতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করুন। তিনি বলেন, আমি চাই, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক বিবরণী এবং অন্যান্য তথ্য নিয়ে যেন বিনিয়োগ করেন।
বিনিয়োগের আগে কোম্পানির সব তথ্য জেনে নিবেন: প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার আগে ওই কোম্পানির সব তথ্য জেনে নিবেন। কোনো তথ্য নেবেন না, যেখানে সেখানে একটা বিনিয়োগ করে হারিয়ে তারপর আসে কী, সব দোষ সরকারের, সব দোষ অর্থমন্ত্রীর। এটা যেন না হয়। সবার কাছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শিক্ষা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দেশব্যাপী এই বিনিয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
কীভাবে, কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে; তা একান্তভাবে জানতে হবে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাঙালি, আমাদের সাধারণ চরিত্র হচ্ছে, হুজুগে মাতা। আমরা হঠাত্ হুজুগে মেতে এমন করে ফেলি, শেষে সবকিছু হারিয়ে হায় হায় করি। এটা যাতে না হয়, সে জন্য এই বিনিয়োগ শিক্ষা আমি মনে করি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যখন বিনিয়োগ করতে চান, তখন সেসব কোম্পানির সার্বিক তথ্য জানা দরকার। তিনি বলেন, এ জন্য আমি বারবার বলব, যারাই বিনিয়োগ করবেন, তারা অবশ্যই কোন কোম্পানিতে করছেন, তাদের আর্থিক অবস্থাটা কী, তাদের কী কী সক্ষমতা আছে; সবকিছু তথ্য নিয়ে বিনিয়োগ করবেন। কারণ ঝুঁকি তাদেরই নিতে হবে; তাদের মাথায় রাখতে হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রমে বিনিয়োগ ঝুঁকি কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুঁজিবাজারে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ: পুঁজিবাজারে লেনদেন কারচুপি ও অনিয়ম শনাক্ত করতে যথাযথ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ অব্যাহত রয়েছে এবং পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ঢাকায় একটি স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল নামে ৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিও-তে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয়েছে।
তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস, ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হচ্ছে। এছাড়া, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস, ২০১৫ প্রণয়ন, স্টক এক্সচেঞ্জসমূহে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন চালু এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবার তথ্যও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান সরকার গঠনকালীন বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার নানামুখী চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে ২০০৯ সালে আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং পরের দুই বছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দমননীতির ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল বিপর্যস্ত ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচক্ষণ নীতি ও সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হই। এতে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকায় সাধারণ মানুষের জীবনমানের দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বে ৪৪তম। ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে ৩২তম। আর্থ-সামাজিক অধিকাংশ সূচকেই আমরা দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গিয়েছি।
দেশের আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৯৬টি দেশে বাংলাদেশের ৭৪৪টি পণ্য রফতানি হচ্ছে। ২০১৫-১৬ সালে বাংলাদেশের রফতানি আয় ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্য রফতানির লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
এ সময় ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে ন্যূনতম এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি রফতানি আয় ৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাণিজ্য সম্প্রসারণে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে চীন, জাপান ও ভারতের সঙ্গে এ পর্যন্ত জি টু জি ভিত্তিতে ৪টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ হয়েছে ২২৩ কোটি ডলার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমানে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের ডেভেলপার ও শিল্প ইউনিটগুলোর জন্য আমরা অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। তার মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন মেয়াদে কর অবকাশ, শুল্কমুক্ত আমদানি ও রফতানি এবং সহজ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতিমালা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব সুবিধার কারণে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উত্কৃষ্ট। তাছাড়া, আমাদের রয়েছে দক্ষ জনশক্তি, যারা মানসম্পন্ন উত্পাদন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পণ্যের ব্রান্ডিং তৈরিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিদ্যুত্ খাতে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ৭৮ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুত্ সুবিধার আওতায় আনা, কালিয়াকৈরে পিপিপি’র ভিত্তিতে হাই-টেক পার্ক নির্মাণ এবং চলতি বছরেই তার সরকারের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নামে মহাকাশে উপগ্রহ উেক্ষপণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সবকিছু সম্ভব হয়েছে এ দেশের মানুষের কঠোর পরিশ্রম আর সরকারের জন-বান্ধব নীতি গ্রহণের ফলে। রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী  বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা এবং ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft