শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সবচেয়ে বড় তারকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: হাসান ইমাম
Published : Sunday, 8 January, 2017 at 6:00 AM, Count : 689

বিনোদন প্রতিবেদক : সৈয়দ হাসান ইমাম। বাংলাদেশের একজন অভিনেতা, আবৃত্তিকার এবং স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। ১৯৬০ সাল থেকে তার অভিনয় জীবন শুরু হয় এবং ১৯৬৪ সাল থেকে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে সমগ্র পাকিস্তানের চলচ্চিত্র উত্সবে হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন খান আতাউর রহমানের ‘অনেক দিনের চেনা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। ১৯৬৬ থেকে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব সময়ে তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের মঞ্চে নাটক-নাটিকা ও গণসঙ্গীত পরিচালনা করেন।
এদিকে ১৯৭১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে হাসান ইমামকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় শিল্পীদের প্রতিবাদী সংগঠন বিক্ষুব্ধ শিল্পী। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় হাসান ইমাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ অবদানের জন্য সিকোয়েন্স পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদকসহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবেও জুরির দায়িত্ব পালন করেন।
হলিউড, বলিউড ও দেশের শোবিজ অঙ্গনের বাইরেও আছে হাসান ইমামের জীবনের তারকা- যারা মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাদের এ প্রিয় তারকাকে। তারকার পছন্দ, অপছন্দ কিংবা তার আগ্রহ- সবকিছুই ভক্তদের নখদর্পনে। তারকা হাসান ইমামেরও আছে প্রিয় তারকা। হলিউড, বলিউড, দেশে এবং ব্যক্তিগত জীবনে হাসান ইমামের চোখে প্রিয় তারকাদের কথা জানানো হলো।
বাংলাদেশ: আমার চোখে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমি ইংরেজ আমল থেকে বিভিন্ন আন্দোলন দেখে এসেছি। আর আমি একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুকে দেখে এসেছি। তার যে ক্রমান্বয়ের বিবর্তন তার সাক্ষীও নিজেকে বলতে পারি। তবে আমি কিন্তু গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলন দেখেছি আবার এতে অংশগ্রহণও করেছি। তারপর আরও অনেক নেতাকে দেখেছি। আবার অনেকের কথা পড়েছিও। বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের মতো এমন আন্দোলন কোথাও দেখিনি। সেই সুবাদে আমার মনে হয় একটা দেশকে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশটিকে স্বাধীন করেছেন। একটি জাতিসত্ত্বা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ কারণে আমার মনে হয় আমার দেখা সর্বশ্রেষ্ঠ নায়ক তিনি।
ব্যক্তিজীবন: আমি যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি, আমার মামারা কমিউনিস্ট পার্টি করতেন। তখন বিরোধী দলের নেতারাও তাদের শ্রদ্ধা করতেন। তারা সত্ মানুষ ছিলেন। মানুষের কল্যাণে তারা জীবন দিয়ে দিতে পারতেন। এমন দুজন আমি আমার বাড়িতেই দেখেছি। আমার বড় মামা এবং আমার মেজ মামা। আমার মেজ মামা মুনসুর হাবিবুল্লাহ যিনি স্পিকার ছিলেন। আর বড় মামা যিনি পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন। এটা নিজের চোখে দেখা। একটা ভিখেরি রাস্তায় পড়ে আছে, তাকে কোলে নিয়ে রিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। কীভাবে তারা মানুষের সেবা করেছেন তা আমি দেখেছি। আমার অনুসরণীয় চরিত্র এরা দুজন। কারণ আমি মনে করি, সারা পৃথিবীর মানুষ যদি একটি মানুষকে ভালো বলে, কিন্তু পরিবারের লোকজন যদি তাকে খারাপ বলে সে ভালো হয়ে আসলে লাভ নেই। কারণ তোমাকে কাছ থেকে তো পরিবারের লোকজন ব্যতীত অন্য কেউ সেভাবে চিনতে পারবে না। কারণ পরিবারের মানুষ তার ভেতরটা দেখে।
বলিউড: বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে ‘বেগম মেরী বিশ্বাস’ নামে উত্তম কুমারকে নিয়ে একটি ছবি নির্মাণ করার কথা তখন চলছিল। তখন তার সঙ্গে তার বাড়িতে ছবিটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটা সময় অনেক আড্ডা হতো। নায়ক হিসেবে তার মধ্যে এক ধরনের কারিশমা ছিল। আর নায়িকা হিসেবে সুচিত্রা সেনকে দেখেছিলাম। আর আমি দিলীপ কুমারকেও দেখেছিলাম। এছাড়া একবার তার বাড়িতে ঈদও করেছিলাম। এভাবে দিলীপ কুমারকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছি। আর রাজ কাপুর ও রাজেশ খান্নাকেও আমি দেখেছিলাম। তার সঙ্গে কাজও করেছি। আর দিলীপ কুমারের একটা কারিশমা ছিল স্ক্রিনে আসলেই ভালো লাগত। তবে তার মধ্যেও বলতে গেলে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল দিলীপ কুমার। উত্তম কুমার ঘরোয়া আড্ডায় বেশ হাসিখুশি মানুষ ছিলেন। তবে বাইরে গেলে আবার চুপচাপ থাকতেন।
হলিউড: মারলন ব্র্যান্ডোকে আমার ভালো লাগে। তিনি একবার ঢাকায় এসেছিলেন। সেটি জাতিসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে। তখন আমি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। সে সময় তাকে এফডিসিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। এটা মনে হয় ১৯৬৮-৬৯ সালের ঘটনা। তখন তাকে মুড়ি আর নারকেল খাইয়েছিলাম। এরপর একবার রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে আমি যখন হলিউডে গিয়েছিলাম। তখন তার বাড়িতেও গিয়েছিলাম। তাকে ফোন করে আগে থেকেই সময় নিয়ে রেখেছিলাম। এটা ১৯৭৫ সালের ঘটনা। ব্র্যান্ডো খুব আবেগপ্রবণ লোক। আমি অভিনেতা হিসেবেও ব্যান্ডোকে খুব উপরে স্থান দিই।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft