শিরোনাম: |
অধিনায়কত্ব ছাড়লেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনি
|
ক্রীড়া ডেস্ক : বিশ্ব ক্রিকেটে ‘ক্যাপ্টেক কুল’ হিসেবেই পরিচিত তিনি। ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক হিসেবে ধরা হয় তাকে। তিনি আর কেউ নন, তিনি মহেন্দ্র সিং ধোনি। টেস্ট ক্রিকেট থেকে গেলো বছরই অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন তিনি, নিয়েছেন অবসরও। এবার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অধিনায়কত্ব ছাড়লেন ধোনি। অনেকটা বিস্ময়করভাবে তিনি তার পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। এর আগে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায়ের ব্যাপরটাও ঠিক এমনি করে নিয়েছিলেন মাহি। কোনো প্রেস কনফারেন্স না, কোনো বিদায়ী ভাষণও না। একেবারেই অনাঢ়ম্বরভাবেই অধিনায়কত্ব ছাড়লেন তিনি।
ইংল্যান্ড সিরিজের আগে সীমিত ওভার ক্রিকেটের নেতৃত্ব ছেড়েছেন ভারতের সফলতম অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। বুধবার বিসিসিআইকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন এই সফল অধিনায়ক। তবে অধিনায়কত্ব ছাড়লেও উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ধোনির অধীনে ভারতীয় ক্রিকেট দল কাটিয়েছে সবচেয়ে স্বর্ণালী সময়। এতটা স্বর্ণালী সময় অন্য কোন অধিনায়কের অধীনে কাটায়নি ভারতীয় ক্রিকেট দল। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত। খুব সঙ্কট সময়ে নতুন নেতৃত্ব খুঁজছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নবীন ভারতীয় দল তৈরি করে বোর্ড। দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল সব সিনিয়র খেলোয়াড়দের। বিশেষ করে শচিন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি আর অনিল কুম্বলের মতো খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে দল ঘোষণা করেছিল বিসিসিআই। নেতৃত্ব দেয়া হয় আনকোরা মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। সেই আনকোরাই প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়ে করলেন বাজিমাত। তারই নেতৃত্বে শিরোপা জিতল ভারত। টিম ইন্ডিয়াকে কি দেননি ধোনি। একজন অধিনায়ক হিসেবে যতগুলো চ্যালেঞ্জ জয় করার দরকার সবগুলোই জিতেছেন ধোনি। সর্বপ্রথম অধিনায়কত্ব পেয়ে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে তার নেতৃত্বই চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। পরের বিশ্বকাপের জন্য দলকে প্রস্তুত করেন ধোনি। সুফলও পায় ভারত। ২০১১ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বই দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে দেশটি। ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপাও জেতান এই কাপ্তান। ২০০৮ সালে টেস্টের অধিনায়কত্ব পান ধোনি। তার নেতৃত্বে এই সংস্করণে আইসিসির র্যাংকিংয়ের শীর্ষে পৌঁছেছিল ভারত। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট সিরিজের মধ্যেই হঠাত্ করেই এই সংস্করণ থেকে থেকে অবসর নেন ধোনি। তিন সংস্করণেই ভারতকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন ধোনি। তিন ধরনের ক্রিকেটে দেশ সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছে তার অধীনেই। ওয়ানডেতে ১৯৯ ম্যাচে দেশকে নেতৃত্ব দেন ধোনি। ১১০টি ম্যাচে জেতে তার দল, হারে ৭৪টিতে। টাই হয় ৪ ম্যাচ, পরিত্যক্ত ১১টি। ৭২টি টি-টোয়েন্টিতে দেশকে নেতৃত্ব দেন ধোনি। এর মধ্যে ৪১টিতে জিতে ভারত। ২৮টিতে হারে তার দল। একটি ম্যাচ টাই ও দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। ৬০টি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেন ধোনি। আর কোনো ভারতীয় অধিনায়ক দেশকে এত জয় এনে দিতে পারেনি। দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে ভারত। আগামী শুক্রবার মুম্বাইয়ে দল নির্বাচনের জন্য বসবেন দেশটির নির্বাচকরা। ১৫ জানুয়ারি পুনেতে শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে। দলকে সব সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ধোনি। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ৫৪ গড় ও ৮৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৬ হাজার ৬৩৩ রান। টি-টোয়েন্টিতে ১২২.৬০ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১ হাজার ১১২ রান। দেশের মাটিতে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ভারতের বিদায়ের পর ধোনির অবসরের কথা ব্যাপারে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তবে ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার আভাস দিয়েছেন। মহেন্দ্র সিং ধোনিরা কালেভদ্রে আসে। |