শিরোনাম: |
নওগাঁয় বিসিকের প্লটে পেঁয়াজ চাষ
নতুন উদ্যোক্তারা জায়গা পাচ্ছেন না
|
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর বিসিক শিল্প নগরীতে অনেক উদ্যোক্তা নামমাত্র দামে প্লট নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে কোনো শিল্প গড়ে না তুলে পেঁয়াজ চাষ করছেন। অন্যদিকে অনেক নতুন উদ্যোক্তা শিল্প নগরীতে জায়গা পাচ্ছেন না।
২০০০ সালে নওগাঁ শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার শালুকা ও মশরপুর নামক স্থানে ১৫.১৪ একর জমির ওপর বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তোলা হয়। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের শিল্পায়নের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বেকারত্ব দূর, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো তৈরি করা হয়। দুর্বল ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় শিল্প নগরীর সড়কগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ৮২টি প্লটের মধ্যে ৮১টি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫১টি শিল্প ইউনিট সচল রয়েছে। কিন্তু কাগজ-কলমে অগ্রগতি হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ৬টি শিল্প প্রতিষ্ঠান উত্পাদন শুরু করতে পারছে না। রুগ্ন হিসেবে কাগজ-কলমে ১টি শিল্প ইউনিট দেখানো হলেও ৫টি ইউনিটে এখনও উত্পাদন শুরু হয়নি। এগুলো গ্রহণের পর থেকে গাড়ির গ্যারেজসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটিতে এখন পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। প্লটের একটি গুদামে গোপনে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি চলছে। যদিও স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির জন্য ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি বা বিএসটিআইর অনুমোদন নেই। অভিযোগ রয়েছে- নাম সর্বস্ব কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে শিল্প নগরীর কর্মকর্তারা জড়িত। অন্যদিকে শিল্প ইউনিট বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের আবেদন গত প্রায় ১ যুগ ধরে ফাইলবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ব্যবসায়ী আবদুল বারিক ও আতাউর রহমান জানান, এখানে শিল্প সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে শিল্প প্লট বরাদ্দ দেয়ার জন্য তারা অনেক দিন আগে আবেদন করেছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় তদারকি ও প্রশাসনের সুনজর না থাকায় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। অন্যদিকে জেলার শিল্প উদ্যোক্তারা বিদ্যুত্ ও গ্যাস সঙ্কটে অতিষ্ঠ। এখানে যে সব ক্ষুদ্র শিল্প ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে তা টিকতে পারছে না। বগুড়ায় গ্যাসের তৈরি উত্পাদিত পণ্যের দামের চেয়ে এখানকার কয়লা বা বিদ্যুত্ দিয়ে উত্পাদিত পণ্যের দাম কিছুটা বেশি পড়ছে। এ মুহূর্তে কিছু অটো চাতাল ও একটি লোহার ছোট রড তৈরি ছাড়া বড় কোনো ভারী শিল্প এখানে গড়ে উঠেনি। নাসিম ব্রাদার্সের নাসিম জানান, এখানে ধানের তুষ দিয়ে একটি বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্র করার পর প্রয়োজনীয় মূলধন ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় এ প্রকল্প ব্যর্থ হয়। ব্যবসায়ীদের অনেকেরই অভিযোগ- যদিও শহরের কিছুটা দূরে বিসিক শিল্প নগরী হলেও সন্ধ্যার পর এখানে ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। নেই পর্যাপ্ত লাইট ব্যবস্থা। তাছাড়া এখানে সে সময় পানি সরবরাহ করার সাবমার্সিবল বসানো হলেও পান করা যায় না। এসব সমস্যা জানানোর জন্য কর্মকর্তাদের ঠিকমতো পাওয়া যায় না। নওগাঁ জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান জানান, বিসিক শিল্প নগরী সম্প্রসারণের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে খুব দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা হবে। বিসিক শিল্প নগরীর উপ ব্যবস্থাপক সানাউল হক জানান, বিসিকের পশ্চিমে জমি অধিগ্রহণের জন্য চেষ্টা চলছে। আরও ৭০ একর জমি অধিগ্রহণ করার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের একটি টিম পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। |