সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ৮ পৌষ ১৪৩১
ভীমনলীর সম্মুখ যুদ্ধে ১৫ শহীদের জীবনদানের স্বীকৃতি মেলেনি আজও!
Published : Thursday, 15 December, 2016 at 6:00 AM, Count : 189

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম ভিমনলী গ্রামের মুক্তিকামী মানুষদের বীরত্বের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় ধরে যেন এক জনশ্রুতি হিসেবেই টিকে আছে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে ১৫ শহীদের গণসমাধিস্থল রাষ্ট্র কিংবা সমাজ কেউ তাদের কখনো খোঁজ নেয়নি এমনকি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়ও এসব বীরের নাম লিপিবদ্ধ হয়নি মুক্তিসংগ্রামের ৪৫ বছর পরেও ওই সব বীর শহীদ পরিবারগুলোকে রাষ্ট্র যেমন স্বীকৃতি দেয়নি তেমনি মুক্তিসংগ্রামের বীরত্ব গাঁথাও ইতিহাসে এক অজানা অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান আর নিরাশ্রয় বাঙালিদের আশ্রয়দানের অপরাধে রাজাকারদের হামলা প্রতিহত করতে সেদিন মুক্তিকামী বাঙালি সম্মুখ লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নে শতাধিক রাজাকার সদস্য মিলে আলবদর রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলে এলাকায় হিন্দুদের ঘর বাড়ি লুটতরাজ,গণহত্যা নারী নির্যাতন চালায় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের যাতায়াত হিন্দুদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ভীমনলী গ্রামের বাড়ই বাড়ি রাজাকারদের বিশেষ টার্গেটে পরিণত হয় রাজাকাররা পরিকল্পিতভাবে ১৯৭১ সালের মে মাসে বাড়ই বাড়িতে আক্রমণ চালায় মুক্তিযোদ্ধারাও সেদিন রাজাকারদের পাল্টা আক্রমণ করে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে সেদিনের সেই সম্মুখ যুদ্ধে রাজাকার লালু খা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হন আর রাজাকারদের গুলিতে শহীদ হন ১৫ জন মুক্তিকামী বীর বাঙালি

রাজাকার বাহিনী ভীমনলী গ্রামের ৮০টি হিন্দু বাড়িতে পালাক্রমে তাণ্ডব চালায় ব্যাপক লুটতরাজ চালিয়ে ওরা ঘর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয় সেই যুদ্ধে জীতেন বাড়ই, সুরেন্দ্র নাথ বাড়ই আর উপেন্দ্র নাথ বাড়ই তিন আপন ভাই, নিশিকান্ত কান্ত বাড়ই তার বড় ছেলে ধীরেন্দ্র নাথ বাড়ই, জগদীশ চন্দ্র বাড়ই, গণেশ চন্দ্র মিস্ত্রি, ভূপাল মিস্ত্রি, বলরাম মিস্ত্রি, ষষ্ঠী হাওলাদার, বসন্ত মিস্ত্রি, সখানাথ খরাতি, ঠাকুর চাঁদ মিস্ত্রি, নেপাল চন্দ্র মিস্ত্রি বিনোদ চন্দ্র বিশ্বাস শহীদ হন পরে এসব শহীদরে একই স্থানে গণসমাধি দেয়া হয়

ওই যুদ্ধে সেদিন দুই হাঁটু আর কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন সাপলেজা মডেল হাইস্কুলের শিক্ষক রমেশ চন্দ্র মিস্ত্রি (৫৮) তবে তার বড় ভাই গণেশ চন্দ্র মিস্ত্রি সেদিনের সেই যুদ্ধে শহীদ হন

স্বজন হারানো দুঃখ আর ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, সেদিনের সেই সম্মুখ যুদ্ধ ছিল সশস্ত্র রাজাকারদের সঙ্গে স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র বাঙালির মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ আর আশ্রয়হীন বাঙালিকে আশ্রয় দেয়াই ছিল আমাদের অপরাধ আমাদের দুর্ভাগ্য এই বীরত্বগাঁথা আর ১৫ বাঙালির জীবন দান আজও স্বীকৃতি পেলনা 

ব্যাপারে সাপলেজা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মঠবাড়িয়া অঞ্চলের যতগুলো যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে তার মধ্যে ভীমনলী গ্রামের বাড়ই বাড়ি যুদ্ধ অন্যতম



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft