সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ৭ পৌষ ১৪৩১
ইতিহাসের সাক্ষী দিনাজপুরের জমিদারবাড়ি
Published : Monday, 12 December, 2016 at 6:00 AM, Count : 180

জমিদার প্রথা বিলুপ্তির পর ঐতিহ্যবাহী সোয়া ২শ বছরের পুরনো ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িটি অতীত ঐতিহ্যের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাক্ষী জমিদার বাড়ির বিভিন্ন ভগ্নদশার স্থাপনা সংস্কার করা হলে নতুন প্রজন্মের কাছে তা শিক্ষণীয় বিষয় হওয়ার পাশাপাশি দর্শনকেন্দ্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ ঘুঘুডাঙ্গা একটি গ্রাম শতপরিবার অধ্যুষিত ঘুঘুডাঙ্গা একটি জমিদার পরিবারের নাম যা ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার নামে খ্যাত দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় কিলোমিটার দক্ষিণে পুনর্ভবা নদীর কোল ঘেঁষে নিরিবিলি-কোলাহল মুক্ত ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়ির গ্রামটি অবস্থিত

ঘুঘুডাঙ্গা এলাকায় বসবাসরত বংশধর ইতিহাস থেকে জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে দিনাজপুর জেলায় যে কয়জন জমিদার ছিলেন তার অন্যতম হচ্ছেন ঘুঘুডাঙ্গার জমিদার ব্রিটিশ শাসিত তত্কালীন দিনাজপুরের ১১টি থানায় এই জমিদারের এস্টেট ছিল এস্টেট থেকে বার্ষিক লাখ টাকা খাজনা দিতে হতো ব্রিটিশ সরকারকে ১৮টি কাচারি ৪১টি তহসিল অফিস দিয়ে পরিচালিত হতো জমিদারের আওতায় ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বংশের গোড়াপত্তন করেন নবীর মোহাম্মদের একমাত্র ছেলে ফুল মোহাম্মদ ঘুঘুডাঙ্গা জমিদারীর স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৮০ বছরের মতো

ঠিক কবে থেকে ঘুঘুডাঙ্গা জমিদারির শুরু হয়েছিল তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেননি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ১৭৭১ সালে চালু পঞ্চসনা ব্যবস্থা পরবর্তীতে ব্যর্থ হলে সরকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের নীতিতে ১৭৮৯ সালে দশসালা নীতি চালু করে এতে পরিষ্কার ১৭৭১ হতে ৮৯ সালের মধ্যে ঘুঘুডাঙ্গা জমিদারির সূচনা হয় আর ১৯৫০ সালে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জমিদারী অটুট ছিল ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িটি একতলা-দোতলা মিলে একটি অনুপম পাকা ভবন ভগ্নদশায় রয়েছে বিরাট প্রবেশদ্বার ফুল লতাপাতায় সজ্জিত হাতি শালে হাতি, ঘোড়া শালে ঘোড়া আর অন্যান্য জমিদার পরিবারের মতো ছিল পাইক-পেয়াদা, সিপাহি, বাবুর্চি, খানসামা, খামারু ইত্যাদি ছিল একজন ম্যানেজার বাহির বাড়িতে ছিল মেহমানখানা, সঙ্গে একটি সুদৃশ্য মসজিদ সপ্তাহ বা মাসে বসত মেহমানখানা চত্বরে গ্রামপ্রধানদের আসর আর আসরে আলোচনা হতো শান্তি-শৃঙ্খলা, সামাজিক, চাষাবাদ আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে মেহমানখানার পেছন দিকে ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার পরিবারের দুটি কবরস্থান রয়েছে

ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার এস্টেটের কিছু দুর্লভ সামগ্রী ছিল একটি স্বর্ণের চেয়ার যা বর্তমানে জাতীয় জাদুঘরে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষিত আছে এছাড়া ১০১ ভরি ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি কৃত্রিম কই মাছ, রূপার বাটযুক্ত ছাতা, পাখা, রোপ্যনির্মিত লাঠি, তামার ডেকচিসহ দুর্লভ সামগ্রী ১৯৭১ সালের পাকবাহিনীর হাতে লুণ্ঠিত ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়

১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালরাতে গণহত্যা শুরুর কয়েক দিন পর দিনাজপুরের বাঙালি, আর্মি, ইপিআর, পুলিশসহ মুক্তিবাহিনীর প্রায় ১৫শ সদস্য, ২২টি যানবাহন প্রচুর অস্ত্রসহ ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামে



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft