বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন - প্রধানমন্ত্রী
Published : Saturday, 3 December, 2016 at 6:00 AM, Count : 553

বর্তমান প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আমাদের আপনজন। আমাদেরই সন্তান। প্রত্যেকের অন্তত এটুকু চিন্তা করা উচিত- প্রতিবন্ধী তো কেউ ইচ্ছে করে হয়নি। কাজেই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে, আন্তরিক হতে হবে, তাদের সহযোগিতা করতে হবে। প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক এবং বৃদ্ধদের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনতে জীবনচক্রভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার বলে            উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আন্তরিকতা ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে সমাজের সচেতন মানুষ, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠনকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্বের অনেক প্রতিভাবান বিজ্ঞানী, সঙ্গীতজ্ঞ, কবি ও লেখক, যারা প্রতিবন্ধী ছিলেন, তাদের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ওইসব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মতো বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদেরও মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি বলেন, অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধীদের ভেতরেও সুপ্ত মেধা থাকতে পারে, যেটা বিকশিত হওয়ার সুযোগ আমাদের করে দিতে হবে। চাকরি, ব্যবসা ও ক্রীড়াসহ নানা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের সাফল্যের কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ছোটবেলায় আদর্শলিপিতে পড়েছি, কানাকে কানা বলিও না, খোড়াকে খোড়া বলিও না। সেই শিক্ষাটা এখন সেইভাবে আর দেয়া হয় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি স্কুলে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা অর্জনের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে আর দশটা স্বাভাবিক শিশুর সঙ্গে মিশে তারা শিখতে পারে। সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা নির্দেশ দিয়েছি প্রতিবন্ধীরা চাইলে সাধারণ স্কুলে ভর্তি হতে পারবে। সেই সুযোগটা তাদের জন্য রাখতে হবে। শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী সবারই এ ব্যাপারে আন্তরিক থাকতে হবে।

প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার আওতায় আনতে জীবনচক্রভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। এ সময় প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক, চিকিত্সা ও শিক্ষা সহায়তা দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, রাস্তাঘাট, ফুটপাত ও নতুন অবকাঠামো যেখানেই হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধীদের সহজে চলাচলের জন্য পৃথক লেন, এমনকি টয়লেট তৈরি করারও নির্দেশও আমাদের দেয়া আছে এবং সেভাবেই আমরা তা করে যাচ্ছি। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য পথ প্রশস্ত করতে কর্পোরেট সেক্টর, সমাজের বিত্তবান মানুষসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, অনেক বিত্তবানই আছেন, যারা টাকা খরচের আর জায়গা পান না। আবার অনেকের ছেলেমেয়ে রয়েছে, যারা জীবনে চাওয়ার কিছুই না পেয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পথে চলে যায়। কাজেই সেই বিত্তবানদেরও আমি বলবো, তারা যদি এই ধরনের প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন, তাহলে সমাজ এতে উপকৃত হবে। নিজেরাও উপকার পাবেন এবং আল্লাহর দোয়াও পাবেন সবাই।

৭৫ পরিবারের সবাইকে ও সবকিছু হারানোর পরও দেশে ফিরে নিজেদের সম্পদ জনগণের, বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সবকিছু বিলিয়ে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনটি ক্যাটাগরিতে ৯ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মধ্যে ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান আহমেদ, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি রজব আলী খান নজিব এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জিল্লার রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলে মিরপুর-১৪ নম্বর সেকশনে আট দিনব্যাপী প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত প্রতিবন্ধী উত্তরণ মেলা উদ্বোধন করেন।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft