শিরোনাম: |
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সম্মেলন
ছাত্রলীগে আসছে এক ঝাঁক নবীন নেতৃত্ব
|
বর্তমান প্রতিবেদক : মূলধারার যে কোনো ছাত্রসংগঠনেরই প্রধান ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। আর এ শাখার প্রাণকেন্দ্র এর হলগুলো। এবার প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার হল নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে অনুষ্ঠিত হলো হল সম্মেলন। গতকাল রোববার দিনব্যাপী জমকালোভাবে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৪ নভেম্বর হল সম্মেলন করার ঘোষণা আসে কেন্দ্র থেকে। এরপর মধুর ক্যান্টিন থেকে টিএসসি, মিলন চত্বরসহ প্রায় সবখানেই দেখা যাচ্ছে পদ-প্রত্যাশীদের সরব আনাগোনা। নিজেকে সর্বোচ্চ যোগ্য ও আস্থাভাজন প্রমাণে মেলে ধরছেন নিজেদের। কেউ কেউ নেতাদের বাসার সামনে গভীর রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আস্থার ভার পোক্ত করছেন। মোট ১৮টি হল থেকে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক মিলে মোট ৩৬ জন নেতা নির্বাচন করা হবে সম্মেলনে। বিভিন্ন সূত্র জানায়, হল কমিটি নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দর কষাকষি চলে। কারণ এ কমিটির ওপর ক্যাম্পাস রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করে। সর্বোচ্চ দরকষাকষি চলে সূর্যসেন হল, জহুরুল হক হল, মহসিন হল, জিয়া হল ও জগন্নাথ হলকে ঘিরে। এদিকে বিভিন্ন সময়ে হল নেতৃত্বে পদপ্রত্যাশী বেশকিছু নেতার বিরুদ্ধে নানামুখী অভিযোগ উঠেছে। হল সূত্র বলছে, ইয়াবা ব্যবসা, চাঁদাবাজি, মারধর ও হলের রুম থেকে ছাত্রদের বের করে দেয়ার অভিযোগসহ কেউ কেউ আবার বিভিন্ন মামলার আসামির তালিকায়ও নাম লিখিয়েছেন। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসাইন প্রিন্স বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে অসদাচরণ বা অন্য কোনো অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে, এমন কাউকে আমরা সংগঠনে স্থান দেব না। যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে, তারাই কমিটিতে স্থান পাবে। বিভিন্ন হলে পদপ্রত্যাশী যারা: হলের শীর্ষ পদে আসতে বিভিন্ন হলের পদপ্রত্যাশীরা জোর তদবির চালাচ্ছেন। তবে দলের জন্য ত্যাগ ও দীর্ঘদিনের শ্রমের বিচারে এগিয়ে রয়েছেন অনেকে। স্যার এএফ রহমান হলে পদের দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন পূর্ব কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা, ক্রীড়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সুজন। বঙ্গবন্ধু হলে এগিয়ে আছেন মেহেদী হাসান, রাকিবুল হাসান, রুহুল আমিন, ফুয়াদ আল মুক্তাদী, আওলাদ খান এবং নাঈমুর রহমান। কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদকের হল হওয়ায় জিয়া হলের সমীকরণ অত্যন্ত জটিল। জানা গেছে, এ হলে এগিয়ে আছেন ইউসুফ উদ্দীন খান অপূর্ব, শেখ সাগর আহমেদ ও নাজমুল হোসাইন। এদিকে বিজয় একাত্তর হলের কমিটি নিয়ে সবার আগ্রহ অন্য যে কোনো হলের চেয়ে বেশি। ২০১৪ সালে হলটি চালু হওয়ার পর আগের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের মেয়াদের শেষ সময়ে তাদের ঘনিষ্ঠ দুজনকে এ হলের সভাপতি, সাধারণ সম্পদক করেন। নতুন হলে রাজনীতির প্রসার না ঘটলেও তাদের নেতা বানানো হয় তখন। সে সময় তুলনামূলক বেশি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেককে মূল্যায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৫ সালে কমিটি গঠনের পর দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও বর্তমান হল সভাপতি শেখ ইনান ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত্ হোসেন হলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। এ হলে বর্তমানে আলোচনায় আছেন আরিফুল ইসলাম শেখ, রাজিবুল হাসান তারিফ, জামসেদ আলম ও বেলাল হোসেন বাপ্পি। তাদের মধ্যে আরিফুল ইসলাম স্বচ্ছ ও প্ররিশ্রমী কর্মী হিসেবে হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছে সুপরিচিত। আওয়ামী পরিবারের সন্তান আরিফুল গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলে জানান অনেকেই। এছাড়া সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে হলের কনিষ্ঠদের মধ্যে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে তার। এদিকে মাস্টার দা সূর্যসেন হলে এগিয়ে আছেন হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন, কামাল হোসেন, গোলাম সরোয়ার, তৌহিদ, রুবেল আহমেদ ও তন্ময়। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে আলোচনায় আছেন আসিফ তালুকদার, শাকিল ভুইঞা, আনিসুল ইসলাম জুয়েল, নজরুল ইসলাম ও সেহান। কবি জসিম উদ্দিন হলে আলোচনায় আছেন আল মাসুদ সজিব, শাহেদ খান ইয়াকুব, আসিফ জরদার, রানা খালাসী ও সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে আলোচনায় আছেন তাহসান, আসিফ ও ইমরান। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে আলোচনায় ইব্রাহীম রাজু, জহির, ইমরান ও আল আমিন। অমর একুশে হলে লিমন, ওসমান গনি, তানজীর ও এহসান। ফজলুল হক হলে শাওন, হাবীব, সিসিম ও আজিজুল। শহীদুল্লাহ হলে আলোচনায় আছেন কাজল, কবির, তুহিন ও রকি। তবে গতকাল কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলেও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসাইন প্রিন্স বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটি ঘোষণা করা হবে। এ জন্য কাজ করছি আমরা। |