শিরোনাম: |
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের অবরোধ
|
বর্তমান প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দিন মোড়, কুড়িল বিশ্বরোড, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, নতুন বাজার, মেরুল বাড্ডা, বনানী, গাবতলী, মিরপুর রোড, সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর, মোহাম্মদপুর, শনিরআখড়া ও সাভারের বিরুলিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ১১টার পরে তারা মিছিল নিয়ে এসব পয়েন্টে অবরোধ শুরু করেন।
এরমধ্যে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বিক্ষোভ করছে স্টেট ইউনিভার্সিটি ও আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিজের ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। আর মেরুল বাড্ডায় সড়ক আটকে আন্দোলন করছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি- বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন বনানীতে। এদিকে বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর নতুন বাজারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিছুক্ষণ পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও রাস্তা আটকে এখনও অবস্থান করছে আন্দোলনকারীরা। এতে পাশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে ডিএমপির গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার শাহা দুপুরের দিকে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন এখনও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই নতুন বাজার মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবরোধ করে রেখেছেন। এতে বাড্ডা প্রধান সড়কসহ (প্রগতি সরণি) আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এসব পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘প্রগতি সরণি’ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এসময় অনেককেই হেঁটে গন্তব্যের দিতে যেতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও কোটা বাতিলের দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, ‘গতকাল আমার ভাই-বোনদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীদের ঐক্য সম্পর্কে সরকারের জানা উচিৎ। এর আগে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে কথা মনে নেই! আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুল হক ভূঁইয়া জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন সড়ক ছেড়ে দেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নাবিস্কো মোড়ে (তাজউদ্দীন সড়ক) অবরোধ করেছেন সাউথইস্ট ও আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। মাহমুদ নামে আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলা হবে কেন? আমাদের যৌক্তিক দাবি মানতে হবে। ছাত্রলীগ দিয়ে হামলা করে কোনও লাভ হবে না।’ এছাড়াও সাভারের বিরুলিয়া ব্রিজে অবস্থান নিয়েছেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেসরকারি সিটি ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। গত দুই সপ্তাহ ধরে এই আন্দোলনের পাশাপাশি সহাবস্থানে থাকলেও গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। রাত পর্যন্ত চলা সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতভর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের হামলা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, সেখানে তাদের পিটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে হামলার অভিযোগ এনে আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এদিকে সোমবারের ভেস্তে যাওয়া কর্মসূচি আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় পালনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। রাত ১১টার পর সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে পাদদেশে গণমাধ্যমে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর দেড়টায় সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির পালন করবে ছাত্রলীগ। |