শিরোনাম: |
মুক্তা ঝড়া শিশিরের সাথে কুবিতে শীতের আগমন, মেতেছে শীতের আমেজে
|
মারিয়াম আক্তার শিল্পী, কুবি প্রতিনিধি: কৃষ্ণচূড়া গাছের পাতায় কিংবা সদ্য প্রস্ফুটিত পাতায় মুক্তার মতো আলো ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে কুবির ক্যাম্পাসে শীতের আগমন ঘটেছে।কুয়াশায় মিলছে তার আমেজ। ভোরে ক্যাম্পাসজুড়ে কুয়াশার চাদর বিছিয়ে দিচ্ছে। সন্ধ্যার পরও এমনটা অনুভূত হতে শুরু করেছে। ভোর ও সন্ধ্যার এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে শিক্ষার্থীরা জড়ো হচ্ছে কৃষ্ণচূড়া রোড, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্ছ এবং দক্ষিণ মোড়ে।
নৈসর্গিক পরিবেশে গড়ে ওঠা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শীত আসে বাড়তি মুগ্ধতা নিয়ে। শীতের রুক্ষ-শুষ্ক, রং-রূপহীন অবয়ব ডিঙ্গিয়ে কুবি ক্যাম্পাস ভরে ওঠে রূপ-লাবণ্যে। শীতে কুবি ক্যাম্পাসের পরিবেশ অনন্য হয়ে ওঠে বিশেষ সাজে। ভোরের সৌন্দর্যে এক নতুন মাত্রা যোগ করছে শিউলি ফুল। বিবিএ ফ্যাকাল্টির পাশের ঢালুতে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সারি সারি শিউলী ফুলে ভরা প্রাঙ্গণ এক অপার্থিব দৃশ্য সৃষ্টি করে রেখেছে। ভোরবেলা অনেককেই সেসব শিউলী গাছের নিচে ফুল কুড়াতে দেখা যায়। শিশির ভেজা কুয়াশা জড়ানো শহীদ মিনারের রাস্তায় চলে অনেকের প্রাতঃভ্রমণ, শরীরচর্চা, সাইক্লিং। কেউ কেউ কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁটতে বের হয়। ক্যাম্পাসের মসজিদ থেকে শহীদ মিনার তখন কুয়াশায় ঢেকে যায়, দূর থেকে কেউকে দেখা যায় না। কুয়াশা কমে যাওয়ার পর ভোরের সূর্যের স্নিগ্ধ কিরণে লালমাটির এই ক্যাম্পাসের ঘাস আর পাতা ঝলমল করে উঠছে। শীতকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়র,বিভিন্ন সংগঠন মিলে আয়োজিত করে বিভিন্ন খেলাধুলা, তার মধ্যে অন্যতম ব্যাডমিন্টন। সন্ধ্যা হলেই ব্যাডমিন্টন কোর্টে,প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে ব্যাডমিন্টন খেলার আমেজ জমেছে। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা মুক্তমঞ্চকে উৎসবমুখর করছে বারবিকিউ পার্টি করে। পাশাপাশি থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবার সেন্ট্রাল ফিল্ডে বন ফায়ার জ্বালিয়ে আড্ডা মাতে। আড্ডা, গান আর গিটারের টুংটাংয়ে কাটে বিকাল-সন্ধ্যা। সাথে থাকে হাকিম মামার ভ্রাম্যমাণ দোকানে ফুচকা, ভেলপুরি এবং ঝালমুড়ি খাওয়ার ভিড়। সেইসঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে রাস্তার ধারে ধোঁয়া ওঠা চিতই আর ভাপার অসাধারণ গন্ধ। এই সময়টায় দুপুরের পর থেকেই ক্যাম্পাসের আশেপাশে বসে যায় পিঠাপুলির দোকান, যেখানে প্রাধান্য থাকে চিতই আর ভাপা পিঠার। তবে দোকানগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে সন্ধ্যার পর থেকে। তখন যেন চিতই পিঠার দোকানে ভিড় লেগেই থাকে। সাথে বিভিন্ন রকমের ভর্তার স্বাদ নেওয়ার জন্য। সালমানপুরের একদম ভেতরে থাকে এক দম্পতি। তারাই ক্যাম্পাস সংলগ্ন দক্ষিণ মোড়ে খুলে বসেছে চিতই পিঠার দোকান। বাড়ি থেকে শুঁটকি, সরিষা, রসুন কিংবা মরিচের ভর্তা বানিয়ে নিয়ে আসেন তারা। এখানে বসে দুজন মিলে বানান চিতই পিঠা। গোলা বানিয়ে দিয়ে স্ত্রীকে সাহায্য করতে থাকে স্বামী। ক্যাম্পাস পেরিয়ে কোটবাড়ি বোর্ড মার্কেটেও বসে পিঠার সমারোহ। নারকেল আর গুড়ের গন্ধে ম ম করতে থাকে আশপাশ। ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা খেতে ভিড় জমান সব ধরনের মানুষ। সকল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি বিশেষায়িত দিক থাকে, কুবির ক্যাম্পাসের হচ্ছে শীত। শুধু বর্তমান ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা নন, শীত উপভোগের টানে ছুটে আসেন সাবেক শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বহু মানুষ। |