শিরোনাম: |
হাট ইজারার ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি
পুঠিয়ায় ছাত্রলীগ নেতাসুমনের জখমের ঘটনায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে আসামীরা
হুমকিতে ভুক্তভোগী পরিবার
|
রাজশাহী ব্যুরো: ঝলমলিয়া হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদারদাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা (অবঃ) সেনা সদস্য নাজমুল ইসলাম সুমনকে (৪৫) কুপিয়ে নৃশংসভাবে শরীরের ২৪ স্থানে গুরুতর রগকাটা জখম করা হয়। ঘটনার কিছুদিন পরে এ মামলার প্রধান আসামী ও শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলার শনাক্তকারী আসামী আহসান-উল-হক মাসুদসহ এজাহাভুক্ত অন্য আসামীদের নিয়ে চাঁদাবাজির নিমিত্তে গড়া পেটুয়াবাহিনী সংগবদ্ধ হয়ে ঝলমলিয়া সড়ক-হাটেঁ শোডাউন ও সশস্ত্র মহরা চালায়। এতে সন্ত্রাসী কায়দায় ক্ষমতার ত্রাসকায়েমে এলাকায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির আতঙ্ক গড়ে তুলছে আসামীরা। সড়কের ট্রাক, মাইক্রোবাস ও মোরসাইকেল ভাংচুর করে হুমকি-ধামকি দিয়ে জনমণে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে মাসুদের গুন্ডাবাহিনী। যা নিয়ে এলাকা ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জুলাই ঝলমলিয়া ডাকবাংলা ব্রিজের পাশে মহাসড়কে বেশ কয়েকটি ট্রাক, মাইক্রোবাস ও মোরসাইকেল ভাংচুর করে। এতে এলাকায় মূহুর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার এক পর্যায়ে মাসুদের গুন্ডাবাহিনী নৃশংস হামলার শিকার সুমনের মামলারবাদী পিতা আ’লীগ নেতা নজরুল ইসলাম এহিয়ার ঝলমলিয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খোঁজ করে এবং মামলা তুলে নেবার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওইদিন ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করে পুঠিয়া থানা। পরে এই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সুমনের পিতা নজরুল ইসলাম এহিয়া পুঠিয়া থানায় মামলার (রি-পিটিশন) জামিন আদেশ বাতিলের জিডিতে নতুনভাবে বিবাদী করে ১.নিয়ামুল হক জুয়েল, ২. তাইফ, ৩. মেহেদী ও ৪. মিমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের নামে ১লা আগষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়রী-৪৯ রুজু করেন। জিডিতে এহিয়ার অভিযোগ, অনেক দিন অতিবাহিত হলেও মামলার এজারহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলার কৌশলী আহসান-উল-হক মাসুদগণ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির নিমিত্তে গড়া পেটুয়াবাহিনীকে গেফতারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমনকোনো পদক্ষেপ নেই। বরং ঘটনার পর থেকেই রাজনৈতিভাবে একটি মহলের চাপে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগী পরিবারকে নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে আমার বড় ছেলের মতো আমারও অবস্থা এমন হবে; হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মাসুদের লোকজন। এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। বাজারের প্রত্যক্ষদর্শী জহির, পলাশ ও সাইদ জানান, গত সোমবার রাতে মাসুদের লোকজন সন্ত্রাসী কায়দায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির জন্য ঝলমলিয়া ডাকবাংলা ব্রিজের পাশে মহাসড়কে বেশ কয়েকটি ট্রাক, মাইক্রোবাস ও মোরসাইকেল ভাংচুর করে। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে শোডাউন করে হামলা চালায়। পরে ঘটনাস্থলে পুঠিয়া থানা পুলিশ এসে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ দেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মাসুদবাহিনীর লোকজন। সুমনের নৃশংস ঘটনার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদাবী করে নজরুল ইসলাম এহিয়া বলেন, ঝলমলিয়া হাটের ইজারা নেয়াকে কেন্দ্র করে মাসুদের সন্ত্রাসীর রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় মাদক কারবারি, চাঁদাবাজ, দালালি নিয়ন্ত্রণে সাকিবুর রহমান মিঠু নামের কুলাঙ্গারসহ তার সহজাত অনুসারী ক্যাডাররা বিভিন্ন সময় ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছিল; তাদের চাহিদা মতো ওই টাকা দিতে অস্বীকার করায় সুমনকে নৃশংসভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। এবার আমাকেও কোপানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এহিয়া বলেন, উপজেলার স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনকে সন্ত্রাসী কায়দায় অস্থিতিশীল করে খুন চাঁদাবাজি, ধর্ষন ও মাদককারবারীদের নিয়ে রাজনৈতিক একটি মহল গড়ে তুলেছে বিশৃঙ্খলার সর্গরাজ্য। যার নেপথ্যে রয়েছে এমপি সমর্থিত আহসান-উল-হক মাসুদ ও হাবিবুর রহমান হাবিব, সাকিবুর মিঠু, অভিজিৎ, জুয়েল, মিমি, মেহেদী ও তাইফ মিলে এলাকায় আতঙ্ক গড়ে তুলছে গ্রুপের অনুসারীরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশ দলীয় নীতি আদর্শের বাহিরে থেকে অবৈধভাবে ক্ষমতা ও দলীয় পদের লোভে স্থানীয় এমপির মন যুগিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কায়দায় অধিপত্য বিস্তর করছে। সন্ত্রাসী কায়দায় নৃশংস হামলা চালায় এমপির সমর্থিত সন্ত্রাসী মাসুদ বাহিনীর পেটুয়া গ্রুপ। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমনের উপর নৃশংস হামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল হাই বলেন, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এ বিষয়ে আহসান উল-হক-মাসুদ বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যার পর ঝলমলিয়া ব্রিজের পাশে মহাসড়কে শোডাউনের সময় কয়েকটি গাড়ি পিছনে পড়ে যায়। আর ওই গাড়ি গুলো ঝলমলিয়া ব্রিজে আসামাত্র একদল যুবক সন্ত্রসী হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ নেতা সুমনের পিতা নজরুল ইসলাম এহিয়া ৪ জনের নাম দিয়ে অজ্ঞাত ২০-৩০ জনকে বিবাদী একটি জিডি করেন। অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবারকে নাকি মামলা তুলে নেবার জন্য নানা হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওসি ফারুক বলেন, শুনেছি ঘটনারদিন সুমনের মামলার এজাহারভুক্ত আহসান উল হক মাসুদ জামিন নিয়ে এলাকায় আসে এবং শোডাউন দিয়েছে। এতে ঝলমলিয়া ডাকবাংলা ব্রিজের পাশে মহাসড়কে বেশ কয়েকটি ট্রাক, মাইক্রোবাস ও মোরসাইকেল ভাংচুর করে। কিন্তু এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান ওসি। |