শিরোনাম: |
বহি:শক্তির আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
|
বর্তমান প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বহিরাগত শক্তির যেকোনো আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ চাইনা। আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু বহি:শক্তির যে কোন আক্রমণ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীকে পর্যাপ্ত সক্ষম করে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে (ইবিআরসি) ‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’ এর ‘দশম টাইগার্স পুনর্মিলনী’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশে রুপান্তরিত করতে চাই। তাই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী সবসময় দেশ ও জণগণের পাশে আছে। যেকোন দুর্যোগে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাদের পাশে দাঁড়ায়, শুধু দেশে নয় বিদেশেও। মুক্তিযুদ্ধের পর ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে জাতির পিতা এদেশকে গড়ে তুলেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময়ই তিনি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন এবং সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নেন। সরকার প্রধান বলেন, ১৯৭৪ সালেই জাতির পিতা কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি’র শুভ উদ্বোধন করেন এবং কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল ও সেনাবাহিনীর প্রতিটি কোরের জন্য স্বতন্ত্র ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর শাসনামলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। তিনি ভারত ও যুগোশ্লাভিয়া থেকে নৌবাহিনীর জন্য যুদ্ধ জাহাজ সংগ্রহ করেন। ১৯৭৩ সালে সে সময়ের অত্যাধুনিক সুপারসনিক মিগ-২১ যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, এয়ার ডিফেন্স রাডার বিমান বাহিনীতে যুক্ত করেন। তিনি ১৯৭৪ সালেই একটি প্রতিরক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। প্রথম মেয়াদে সরকারে থাকার সময় তাঁরা ১৯৯৮ সালে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ’ এবং ‘মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’, ১৯৯৯ সালে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং’ এবং ‘আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রথম মহিলা সৈনিক ভর্তির যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন যুগোপযোগী সামরিক বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করছি। আমরা ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন এবং ২০১৬ সালে ‘বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করেছি। জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষানীতিকে যুগোপযোগী করে ‘জাতীয় প্রতিরক্ষানীতি, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছি। অ্যারোস্পেস ও এভিয়েশন বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং সিএমএইচগুলোকে অত্যাধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করেছি। প্রধানমন্ত্রী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান। তাদের সময়ে তারাও এই বাহিনীকে উন্নত করতে যতাযথ পরিশ্রম করেছেন। নিশ্চই আপনাদের সেই অভিজ্ঞতা আজকের প্রজন্ম স্মরণ করবে এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের আনন্দ ও উৎসবমুখর পুনর্মিলনী অবসরপ্রাপ্ত ও চাকুরিরত সর্বস্তরের সদস্যদের মাঝে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ আরও সুদৃঢ় করবে এই প্রত্যাশা করছি। আমাদের দেশ প্রেমিক ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যগণ জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ অর্পিত সকল দায়িত্ব সফলতার সাথে পালনে সক্ষম হবে এবং কর্মজীবনে সকল ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। তিনি আজকের অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করায় সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেও ধন্যবাদ জানান। করোনা মহামারী দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বমন্দা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সকলকে কৃচ্ছতা সাধন এবং প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় এনে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহবানেরও পুনরোল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা ততদিন অব্যাহত রাখতে হবে যতদিন না এই যুদ্ধ থামে এবং এই মন্দার কবল থেকে বিশ্বমুক্তি পায়। তাঁর সরকার দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছে, জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে কিন্তু এজন্য সকলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। |