শিরোনাম: |
নেইমারে ছন্দে ফিরবে ব্রাজিল?
|
বর্তমান ডেস্ক: ব্রাজিলের সংবাদ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্যই হয়ে গেল নেইমার। এই তারকা খেলবেন কি খেলবেন না—এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব খুঁজছিলেন সাংবাদিকরা। তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট, নেইমারহীন ব্রাজিলে কোনো ভরসা নেই—সেটা সংবাদমাধ্যমের অনুধাবন। আর তিতে বোঝাতে চাইলেন, তাঁর দলে আরো ভরসার মানুষ আছে।
সেলেসাও ফুটবলের ছবিটি ছোট ক্যানভাসে বন্দি না করে বড় পরিসরে দেখাতে চাইলেন ব্রাজিলিয়ান কোচ। কিন্তু কেউ কি দেখলেন? বিশেষভাবে বললে, ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমে নেইমারহীন ব্রাজিলে কোনো আশা দেখতে পাচ্ছে না। ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোরা থাকলেও নক আউটের ম্যাচ জিততে ব্রাজিলের অভিজ্ঞ তারকাকে লাগবে। ক্যামেরুন ম্যাচের পর সবার মনে বড় ভয় বাসা বেঁধেছে। সেটা এমনই প্রকট হয়েছে যে নেইমার ছাড়া যেন দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেও হারতে পারে তিতের ব্রাজিল। প্রথমত ক্যামেরুন ম্যাচে আক্রমণগুলো গোলে সুফলা না হওয়া। দ্বিতীয় কারণ হলো, তিতের ওপর ক্রমাগত আস্থা হারানো। দুইয়ে মিলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষেও ব্রাজিলের ছবিটা আশঙ্কার! অথচ দুই দলের বিশ্বকাপে এটা প্রথম সাক্ষাৎ। এর বাইরে সাতবারের মুখোমুখিতে ব্রাজিল জিতেছে ছয়টি, হেরেছে একটি। এমন পরিসংখ্যান পেছনে থাকলে ব্রাজিলের ভয়ের সুযোগ কোথায়? কোরিয়ার কোচ পাওলো বেন্তো এই ম্যাচটিকে অন্যভাবে সহজ ভাবছেন, ‘এই ম্যাচে আমাদের হারানোর কিছু নেই। ’ হারলে পরিসংখ্যানে কোরিয়ার আরেকটি হার যোগ হবে। তবে পাওয়ার অনেক সুযোগ দেখেন তিনি, ‘এটা হতে পারে আমাদের অনেক কিছু পাওয়ার ম্যাচ। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা ম্যাচের শেষ পর্যন্ত কঠিন লড়াই করব। আমার খেলোয়াড়রাও একটি ভালো দল হিসেবে নিজেদের মেলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ’ আবার এটাও সত্যি, তারা ‘জি’ গ্রুপ থেকে রানার্স-আপ হয়ে নক আউটে এসেছে রোনালদোর পর্তুগালকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে। সামর্থ্যের দিক থেকে একেবারে ফেলনা নয় এই এশিয়ান প্রতিপক্ষ। কোরিয়ার এই কোচ বেশ মজার এবং স্পষ্টভাষী। নেইমারের প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি রাখঢাক না রেখেই বলে দিয়েছেন, ‘আমরা নেইমারের বিপক্ষে খেলতে চাই, এ রকম বললে মিথ্যা বলা হবে। ’ এরপর যোগ করেন, ‘সত্যিকারভাবে আমি সব সময় সেরা খেলোয়াড়দের মাঠে দেখতে পছন্দ করি। তারা চোট পেয়ে মাঠের বাইরে থাকুক, এটা কখনো কামনা করি না। বিশ্বের একটা সেরা দলের সঙ্গে আমরা কৌশলী হয়ে সেরা ম্যাচ খেলতে চাই। ’ পাওলো বেন্তো যখন সেরা দলের সঙ্গে খেলার কৌশল ঠিক করছেন, তখন তিতে দলের সেরা তারকা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলছেন না। ব্রাজিলের কোচ গতকালের অনুশীলন দেখার পরই সিদ্ধান্ত নিতে চান, ‘(গতকাল) বিকেলের অনুশীলনে নেইমারকে দেখব। নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ওকে যেতে হবে, তার আগে কিছু বলতে পারছি না। ’ নেইমার প্রসঙ্গে এত রকম প্রশ্ন হয়েছে, ব্রাজিলের কোচ যেন নিজেকে নিয়েই ধন্দে পড়ে গেছেন। তাই বলেছেন, ‘আমি অসত্য কোনো তথ্য দিই না। পুরো ক্যারিয়ারে আমার এই সুনামটুকু আছে। সোজা কথা হলো, সে ট্রেনিংয়ে ভালো করলে ভালো খেলবে। ’ শেষবার অনুশীলনে দেখার পরই নেইমার নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। আরেকটি তথ্য হলো, সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলে ৩০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড খেলবেন ম্যাচের শুরু থেকে। নেইমার খেললে সেলেসাওদের আক্রমণভাগে ভরসা তৈরি হয়। তিনি এবার খেলছেন ১০ নম্বর পজিশনে, একটু নিচ থেকে আক্রমণ গুছিয়ে। সার্বিয়ার বিপক্ষে ওই ফরমেশনে এক ম্যাচ খেলেই পড়লেন চোটে। তখনই বিনা সুতার মালাটা ছিঁড়ে গিয়েছিল। তিনি ওই পজিশনে থাকলে ফরোয়ার্ড ত্রয়ীর সঙ্গে মিলে আক্রমণভাগে একটা বিনা সুতার মালা তৈরি হয়। দুই দিকে ভিনিসিয়ুস ও রাফিনিয়া আর সামনে রিচার্লিসন। এই ত্রয়ীর সঙ্গে নেইমারের সেতুবন্ধ ঠিকঠাক হলে গোল নিয়ে আর গণ্ডগোল হওয়ার কথা নয়। যে সমস্যাটা দেখেছে সবাই ক্যামেরুন ম্যাচে। এত আক্রমণ করেও একটা গোল বের করতে পারেনি পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। গোলের জায়গায় নির্ভরতা ফেরাতেই দরকার নেইমারকে। ‘হেক্সা মিশন’ সফল করতেও দরকার এই তারকাকে। |