সিলেট-মৌলভীবাজারে চা বাগানে কর্মচাঞ্চল্য
Published : Sunday, 28 August, 2022 at 3:09 PM, Count : 2295

সিলেট ব্যুরো: কাজে ফিরেছেন সিলেট ও মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকরা। আজ রোববার সকাল থেকে সিলেটের বেশ কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু। তিনি জানান, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়ায় শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছেন। চা বাগানগুলোতে প্রাণ ফিরে এসেছে। রোববার সিলেটের ২৩টি চা বাগানের মধ্যে নয়টি বাগান চালু থাকে। বাকিগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটি। সেসব বাগানের শ্রমিকরা সোমবার কাজে ফিরবেন।

এদিকে, রোববার বন্ধের দিনেও উৎসব আমেজে নতুন মজুরিতে মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। মৌলভীবাজারের রাজনগর, লুয়াইউনি-হলিছড়া, ইটা, উদনা, উত্তরভাগ, করিমপুরসহ বেশিরভাগ চা বাগানে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। সকাল থেকে রাজনগর চা বাগানে কাজে যোগ দেওয়া রিপা পাশি (৩৫) স্কুলে পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে চাপাতা তুলছেন। তিনি বলেন, ‘১২০ টাকার সঙ্গে ৫০ টাকা যোগ করে ১৭০ টাকা মজুরি করা হয়েছে। বর্তমানে তেল, চাল, কেরোসিন, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের বাজারমূল্য অনুযায়ী এ মজুরি একেবারে নগণ্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাদের মজুরি ঠিক করে দেওয়ায় আমরা মেনে নিয়েছি।’

একই বাগানের চা শ্রমিক বিদ্যাবতী পাশী (৬৫) বলেন, ‘চা শ্রমিকদের চেহারার দিকে তাকালে যে কেউ বলতে পারে আমরা কতটুকু ভালা আছি।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবদার জানিয়ে বলেন, ‘আগামীতে আমাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে মজুরি নির্ধারণের দাবি জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ১৫-১৬ দিন ধরে ধর্মঘটের কারণে পাতা না তোলায় একবারে অনেক পাতা তুলতে করতে পারছেন তারা।

আরও কয়েকজন চা শ্রমিক বলেন, বাগানে পাতা বেশি থাকায় তারা প্রত্যেকে এক থেকে সর্বোচ্চ দেড়শ কেজি পাতা তুলতে পারবেন। শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের প্রত্যেককে ২৩ কেজি পাতা তুলতে হবে। এরপর অতিরিক্ত যা পাতা তুলবেন তার প্রতি কেজি ৪.১০ টাকা করে পাবেন। শ্রীমঙ্গল ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭০ টাকা নয়, ১২০ টাকা মজুরি ঠিক রাখলেও আমরা কাজে যোগ দিতাম। আমরা শুধু অপেক্ষায় ছিলাম প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে মজুরি শুনব বলে। শনিবার তিনি ঘোষণা দেওয়ার পর আমরা কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সব বাগানে জানিয়ে দিয়েছি।’

চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী চা বাগান মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এতে আমরা খুশি। আমরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ৫০ টাকা বাড়াতে পারতাম না। ইতোপূর্বে দুই বছর পরপর ৫-১৮-২০ টাকার বেশি বাড়ানো যায়নি। এখন প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে সম্ভব হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

গত ৯ অগাস্ট থেকে হবিগঞ্জের ২৪টি চা-বাগানসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চা-বাগানগুলোতে শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রথমে কর্মবিরতি ও পরে রাজপথে অবরোধ তৈরি করেন। এর মধ্য শ্রম অধিদপ্তর ও মালিকপক্ষ ১২০ টাকা মজুরির স্থলে ২৫ টাকা বৃদ্ধি করে ১৪৫ টাকা দিতে সম্মতি জানালেও চা-শ্রমিকরা তা প্রত্যাখান করে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আন্দোলনের পর শনিবার বিকালে গণভবনে চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা বাগান মালিক পক্ষের বৈঠক হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft